বেতার রচনা সকল শ্রেণির জন্য (১০,৯,৮,৭,ম শ্রেণি)

রচনা অনেক গুরুত্বপূর্ণ পড়াশোনার জীবনে। তার মধ্যে আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বেতার রচনা। মানুষের সৃজনশীল শক্তি বাড়িয়ে দেয় রচনাগুলো। অনেক বেশি বেশি করে রচনা পড়া আমাদের উচিত। এতে আমাদের সৃজনশীল শক্তি অনেকগুণ বেড়ে যাবে। তো চলুন আজকে আপনাদের জন্য আমদের নিয়ে আসা বেতার নিয়ে কিছু আলোচনা করা যাক।

বেতার রচনা কেন পড়বেন বা পড়া উচিত?

মানুষের সৃজনশীল শক্তি অনেকগুণ বাড়িয়ে দেয় রচনা। পরীক্ষার জন্য আমাদের এই বিশেষ রচনাটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ । তাই ছাত্র বা ছাত্রীদের উচিত এই বেতার রচনাটি ভালোভাবে মুখস্ত করা এবং পড়া। এতে করে তারা পরীক্ষায় অনেক ভালো করবে আশা করা যায়।

ভূমিকা :

বেতার বা রেডিও আধুনিককালের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ গণমাধ্যম। বেতার’ হলাে তার ব্যতীত যােগাযােগের একটি শক্তিশালী মাধ্যম। আগে শুধু রেডিওতে ব্যবহৃত হলেও বর্তমানে ‘বেতার প্রযুক্তি’ অনেক ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে। রেডিও, টেলিভিশন, মােবাইল ফোন ইত্যাদি তারবিহীন যােগাযােগ প্রযুক্তির মূলে রয়েছে ‘বেতার’। এমনকি বেতার তরঙ্গ ব্যবহার করে মহাকাশ পর্যবেক্ষণে ব্যবহৃত হয় বেতার দূরবীক্ষণ যন্ত্র বা রেডিও টেলিস্কোপ।

বেতার’ শব্দের বিশ্লেষণ :

‘বেতার’ শব্দটি বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত হচ্ছে ইংরেজি ‘Radio’ শব্দের পারিভাষিক শব্দ হিসাবে। Radio বা ‘Radiotelegraphy শব্দকে ব্রিটেনে ‘Wireless telegraphy’ বলা হতাে। Radio’ শব্দটি সর্বপ্রথম পাওয়া যায় এডওয়ার্ড ব্র্যানলি নামক একজন ফরাসি পদার্থবিজ্ঞানীর বর্ণনায়। তিনি তার বর্ণনায় ১৮৯৭ সালে ‘Radioconductor’ শব্দটিতে ‘Radio শব্দটিকে ‘Prefix’ হিসেবে ব্যবহার করেন। ১৯২০ সালের দিকে এসে ‘Radio’ শব্দটি পুরাে বিশ্বে সাধারণভাবে ব্যবহৃত হতে থাকে।

বেতারযন্ত্র উদ্ভাবন :

বেতারযন্ত্র বহু পরীক্ষা ও গবেষণার ফল। এর আবিষ্কারে জগদীশচন্দ্র বসুর ভূমিকা থাকলেও আবিষ্কারক হিসেবে গুলিয়েলমাে মার্কনি (Guglielmo Marconi)-র নামই প্রচলিত। ১৮৭৩ সালে জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওএল (James Clerk Maxwell) গাণিতিকভাবে প্রমাণ করেন যে, তড়িৎ তরঙ্গ শূন্যের মধ্য দিয়ে আসা-যাওয়া করতে পারে। তড়িৎ তরঙ্গের তারবিহীন সঞ্চালন নিয়ে আরও কয়েকজন বিজ্ঞানী কাজ করেছেন। তাঁরা হলেন ডেভিড এডওয়ার্ড হিউজ, হেনরিক রুডলফ হার্টজ প্রমুখ । ১৮৯৪ সালে একইসময়ে জগদীশচন্দ্র বসু ও যুক্তরাজ্যের লজ (Lodge) দু’জনই বেতার নিয়ে উল্লেখযােগ্য কাজ করেন। অবশেষে ১৮৯৪ সালের শুরুর দিকে মার্কনি বেতারের বাস্তব প্রয়োেগ দেখিয়ে এর আবিষ্কারের স্বত্ব (Patent) নিজের করে নেন।(বেতার রচনা)

বেতার সম্প্রচার পদ্ধতি :

বেতার সম্প্রচার পদ্ধতিতে ট্রান্সমিটার’ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে । ট্রান্সমিটারের সাহায্যে শব্দের শক্তি বৃদ্ধি করে দূর-দূরান্তে প্রেরণ করা হয়। বেতার সম্প্রচার পদ্ধতিতে ‘বেতার’-এর সাহায্যে সংকেত (Singal) পাঠানাে হয়। একই সময়ে বিভিন্ন ব্যবহারকারী যেন বেতার-তরঙ্গ ব্যান্ডউইথ (Radio-frequency bandwidth) ব্যবহার করতে পারেন সে কারণে প্রাচীন বেতার সম্প্রচার পদ্ধতিতে FDM (Frequency-division Multiplexing) ব্যবহার করা হতাে। তবে আধুনিক বেতার সম্প্রচার পদ্ধতিতে TDM.(Time-division Multiplexing) এবং CDM (Code-division Multiplexing) ব্যবহৃত হয়।

বাংলাদেশে বেতার :

বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে গণমাধ্যম হিসাবে অতীতের মতাে বর্তমানেও ‘বেতার’ খুবই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ‘বেতার যােগাযােগের অন্যতম মাধ্যম হিসাবে কাজ করেছে। বঙ্গবন্ধু কর্তৃক স্বাধীনতার ঘােষণাও এই ‘বেতার’-এর মাধ্যমেই প্রচারিত হয়েছে। বর্তমানেও এ দেশে যােগাযােগের ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে ‘বেতার। বাংলাদেশ বেতার’-এর পাশাপাশি কতিপয় এফএম বেতার (FM Radio)-এর সম্প্রচার করে যাচ্ছে গত কয়েক বছর পর্যন্ত।

See More: পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার রচনা

বেতারের অবদান :

সংবাদ ও তথ্য সম্প্রচারে, শিক্ষা বিস্তারে ও বিনােদনে বেতারের তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ব্যাটারির সাহায্যে চালানাে যায় বলে বেতার দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায়ও সংবাদ ও তথ্য পাওয়ার কাজে ব্যবহার করা যায়। সাম্প্রতিককালে এসে টেলিভিশনেই বেশিরভাগ সময় সংবাদ শােনা বা দেখা হলেও বেতারের উপযােগিতা মােটেও কমেনি। এছাড়া এফএম বেতারের। কল্যাণে আমরা বেতারের প্রতি আরও আগ্রহী হয়ে উঠেছি । আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বেতারের অবদান আরও ব্যাপক। উনিশ শতকের শুরু থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত অসংখ্য কাজে ও ঘটনায় বেতার অবদান রেখে আসছে। অতীত ও বর্তমানে নৌবাহিনীতে বেতার (তৎকালীন ‘ওয়্যারলেস’ বা ‘মেরিন টেলিগ্রাফ’) উল্লেখযােগ্য ভূমিকা রেখে আসছে।

উপসংহার(বেতার রচনা) :

আধুনিক বিশ্বে বেতার মানব সভ্যতার অপরিহার্য অঙ্গ। বর্তমানে মােবাইল ফোন’, কম্পিউটার প্রভৃতিতে বেতার (রেডিও) সংযােজনের ফলে এটি আমাদের আরও বেশি উপকারে আসছে। সংবাদ ও তথ্য পাওয়া এবং শিক্ষার প্রসার ও সহজে বিনােদন পেতে বেতারকে যুগােপযােগী করে তুলতে হবে।

শেষ কথা রচনা নিয়ে?

আশা করি আপনারা কোনো রকম ভুল চোখে পড়ে নি ।আমাদের এই রচনাই যদি কোনো ভুল পান তা হলে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্টে যানাবেন। মানুষ মাত্রই ভুল করে। তাই দয়া করে মাফ করে দেবেন।সবাই ভালো থাকবেন। আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহু।

See More: অধ্যবসায় রচনা

Some FAQ

1.বেতার কোন সমাস?

Ans: বেতার বহুব্রীহি সমাস। এর ব্যাস বাক্য হলো;বে (নাই) তার যার=বেতার।

2.বেতার যন্ত্র কে আবিষ্কার করেন?

বেতারের জনক মার্কোনি নামেই যিনি সমধিক পরিচিত। রেডিও আবিষ্কার করে পৃথিবীকে বদলে দিয়েছেন বিজ্ঞানী মার্কোনি। মার্কোনি ছিলেন ইতালীয় উদ্ভাবক এবং প্রকৌশলী যিনি বেতার যন্ত্রের সম্প্রচার পদ্ধতি উদ্ভাবনের জন্য বিখ্যাত হয়ে আছেন। … বিশ্বখ্যাত এই বিজ্ঞানী ১৯৩৯ সালের ২০ জুলাই মাত্র ৬৫ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।

Leave a Comment