আদি-মধ্যযুগে পূর্ব ভারতে বৈষ্ণব আন্দোলন

আমাদের সবার ইতিহাস জানা দরকার। তার মধ্যে “আদি-মধ্যযুগে পূর্ব ভারতে বৈষ্ণব আন্দোলন” এই বিষয়টি অবশ্যই জানতে হবে। এটি জানলে আপনার ইতিহাস সম্বন্ধে আরো ধারণা বেড়ে যাবে। আসেন যেনে নেয়।

আদি-মধ্যযুগে পূর্ব ভারতে বৈষ্ণব আন্দোলন

বৈষ্ণবধর্মের উদ্ভব ঘটে পশ্চিম ভারতে। ড. নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের মতে, বৈষ্ণবধর্মের আদি প্রবক্তারা ছিলেন সম্ভবত যাদব উপজাতির (ট্রাইব) ভাঙনের যুগের মানুষ। প্রাথমিক পর্বে এই ট্রাইবের বীর সন্তান কৃষ্ণ ও তাঁর জ্ঞাতিরা দেবতার পর্যায়ে উন্নীত হন। পরবর্তীকালে তাঁদের প্রধান দেবতা কৃষ্ণ সুপ্রাচীন বৈদিক দেবতা বিষ্ণুর সাথে অভিন্ন বলে গৃহীত হন। এই কারণে ভাগবতধর্ম পরবর্তী পর্যায়ে বৈষ্ণবধর্ম নামে পরিচিত হয়। দেবতা কৃষ্ণের নামের সাথে আরও দুটি ধারার সংযোগ দেখা যায়। একটি ধারার ভিত্তি ছান্দোগ্য উপনিষদ। এখানে কৃষ্ণ দেবকীর পুত্র। অন্য ধারায় কৃষ্ণ পশ্চিম ভারতের পশুপালক আভীর উপজাতির দেবতা। পরবর্তীকালের সাহিত্যে গোপীদের সাথে কৃষ্ণের লীলা সংক্রান্ত যে সকল কাহিনি পাওয়া যায়, তা আসলে এই পশুপালক দেবতাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে।

পূর্ব ভারতে দেবতা রূপে বিষ্ণুর আরাধনার দৃষ্টান্ত সুপ্রাচীন লিপিতে পাওয়া যায়। বাঁকুড়া জেলার শুশুনিয়া পর্বত গুহায় রাজা চন্দ্রবর্মার লিপিতে বাংলায় বিষ্ণুপূজার উল্লেখ পাওয়া যায়। চন্দ্রবর্মা সম্ভবত খ্রিস্টীয় চতুর্থ শতকে বাংলার শাসক ছিলেন। রমেশচন্দ্র মজুমদার ‘বাংলার ইতিহাস’ (১ম খণ্ড) গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে, সপ্তম শতকের উৎকীর্ণ লিপিতে দেখা যায়, বাংলার পূর্বপ্রান্তে অরণ্য প্রদেশে অনন্তনারায়ণ মন্দিরে বিষ্ণুর উপাসনা হত। বাংলার সেনবংশীয় রাজারা ছিলেন বিষ্ণুর উপাসক। রাজা লক্ষ্মণ সেন ছিলেন পরম বৈষ্ণব। অষ্টম শতক থেকে দ্বাদশ শতকের মধ্যে পূর্ব ভারতে বৈষ্ণবধর্মের জনপ্রিয়তার নিদর্শন হিসেবে সমকালে প্রাপ্ত অসংখ্য বিষ্ণুমূর্তির কথা উল্লেখ করা যায়। বিশিষ্ট কবি জয়দেব কৃষ্ণের মহিমা বর্ণনামূলক অমর ও জনপ্রিয় কাব্যগ্রন্থ ‘গীতগোবিন্দ’ এই সময়েই রচনা করেন।

ষোড়শ শতকে পূর্ব ভারতে বৈষ্ণবধর্ম আন্দোলনের পুরোধা ছিলেন চৈতন্যদেব (১৪৮৬-১৫৩৩ খ্রিঃ)। তাঁর পিতা জগন্নাথ মিশ্র ছিলেন বিশিষ্ট সংস্কৃত পণ্ডিত। মাত্র ৪৭ বৎসর বয়সে তাঁর দেহান্তর ঘটে। কিন্তু এই স্বল্পপরিসর জীবনে তিনি বাংলা তথা পূর্ব ভারতের ধর্মচিন্তার ক্ষেত্রে এক দীর্ঘস্থায়ী আলোড়ন সৃষ্টি করে যান। কৈশোরে অতি-দুরন্ত নিমাই যৌবনে কৃষ্ণপ্রেমে আপ্লুত হয়ে বাংলা ও উড়িষ্যার সমাজ ও ধর্মজীবনে ভক্তিবাদের জোয়ার আনেন। বৃন্দাবন দাস বিরচিত ‘চৈতন্য ভাগবত’ ও কৃষ্ণদাস কবিরাজ-এর ‘চৈতন্য চরিতামৃত’ গ্রন্থ থেকে তাঁর জীবন ও কর্মের বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়। চৈতন্যদেব নিজে কোনো তত্ত্বমূলক গ্রন্থ রচনা করেননি। তবে গৌড়ীয় বৈষ্ণবগণ বিশ্বাস করেন যে, ‘দশমুল-শ্লোক’শ্রীচৈতন্যের নিজস্ব রচনা। ১৫০৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি গয়াধামে গিয়ে ঈশ্বর পুরীর কাছে কৃষ্ণমন্ত্রে দীক্ষা নেন। কাটোয়ায় কেশব ভারতী তাঁকে সন্ন্যাস দেন। চৈতন্যের দীক্ষাগুরু ও সন্ন্যাসগুরু উভয়েই ছিলেন ‘মাধ্ব’ সম্প্রদায়ভুক্ত। চৈতন্য নিজেকেও এই সম্প্রদায়ের সদস্য বলে গণ্য করতেন।

জাতিবর্ণনির্বিশেষে চৈতন্যদেব সকলকে কৃষ্ণপ্রেমে অনুপ্রাণিত করেন। তিনি প্রচার করেন যে, শুধু কৃষ্ণ নাম নিয়ে জীব মুক্তিলাভ করতে সক্ষম। ড. নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের মতে, চৈতন্যদেব যে মত প্রচার করেন, তা ‘অচিন্ত্য ভেদাভেদ’ নামে পরিচিত। চৈতন্য ও তাঁর অনুগামীরা শংকরাচার্য প্রচারিত “নির্গুণ ব্রহ্মের পরমতত্ত্ববাদকে অস্বীকার করেন। এঁদের মতে, পরমতত্ত্ব হচ্ছেন সেই ব্রহ্ম যিনি এই বিশ্বজগতের প্রভুস্বরূপ এবং একই সঙ্গে বিশ্বের জীবকুলের সাথে যাঁর প্রেম ও স্নেহের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বর্তমান। চৈতন্যবাদে ঈশ্বর ও তাঁর শক্তি হলেন যথাক্রমে কৃষ্ণ ও রাধা। অচিন্ত্য ভেদাভেদ হল ঈশ্বর, জীবসমূহ ও জড়জগতের মধ্যে সম্পর্কের ধারণা। জীবশক্তি ও মায়াশক্তি ঈশ্বরের স্বরূপ শক্তির ভিন্ন ভিন্ন রূপ। তবে তাঁর আর একটি বিশ্বাতীত রূপ আছে। তিনি বিভিন্ন শক্তি ব্যবহার করলেও তা পূর্ণ ও অপরিবর্তিত থাকে। ঈশ্বর তাঁর বিভিন্ন শক্তির ব্যবহারের মধ্য দিয়ে এবং শেষ পর্যন্ত তাদের অতিক্রম করে এই সকল শক্তির সাথে অচিন্ত্য ভেদাভেদ সম্বন্ধসহ নিজেকে প্রকাশিত করেন।

কৃষ্ণই পরম ব্রহ্ম। তিনি অসীম ও পূর্ণ চৈতন্যস্বরূপ। চিৎশক্তিযুক্ত জীবাত্মা তাঁর একটি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অংশ। তবে অংশী ও অংশ অভেদ হলেও, জীবাত্মার পৃথকসত্তাহেতু পরম ব্রহ্ম ও জীবাত্মার মধ্যে সূক্ষ্ম প্রভেদ বর্তমান। কৃষ্ণ মায়াশক্তিরূপে গোটা বিশ্বজগৎ আচ্ছাদিত করে আছেন। ‘প্রভাব বিলাস’ ও ‘বৈভব বিলাস’ এই দুই শক্তির মাধ্যমে তিনি বহুরূপে নিজের প্রকাশ ঘটান। ‘প্রভাব বিলাস’ দ্বারা তিনি গোপীদের সাথে রাসলীলা কালে বহু কৃষ্ণে পরিণত হন। আবার ‘বৈভব বিলাস’ শক্তির বশে তিনি বাসুদেব (বুদ্ধি), সংকর্ষণ (চেতনা), প্রদ্যুম্ন (প্রেম) ও অনিরুদ্ধ (লীলা) এই চতুর্ব্যহ রূপ পরিগ্রহ করেন। কেবল নামসংকীর্তনের মাধ্যমে পরমব্রহ্ম কৃষ্ণের সান্নিধ্য লাভ করা যায়।

বাংলা ও উড়িষ্যায় চৈতন্যবাদের সর্বাধিক জনপ্রিয়তা দেখা যায়। পাপী-তাপী, দীন-হীন সকল মানুষকে তিনি হতাশার অন্ধকার ও বৈষম্যের গ্লানি থেকে মুক্ত করে নবজীবনের আশ্বাস দেন। স্যার যদুনাথ সরকারের মতে, এক ঐতিহাসিক মুহূর্তে চৈতন্যদেব পূর্ব ভারতে বৈষ্ণবধর্ম প্রচার করে অধঃপতিত হিন্দু সমাজকে রক্ষা করেন। অধ্যাপক সুকুমার সেন চৈতন্যদেবের মতাদর্শকে কোনো বিশেষ ধর্মীয় দিক থেকে বিচার না করে সামাজিক উপযোগিতার (social utility) দিক থেকে দেখা উচিত বলে মনে করেন। চৈতন্যদেবের আন্দোলন ছিল নৈতিক ও আধ্যাত্মিক চেতনা প্রসারের মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তনের এক বলিষ্ঠ নম্র পদক্ষেপ। ড. সেনের মতে, এটিই ছিল বাঙালির প্রথম জাগরণ। চৈতন্যদেবের জীবন ও দর্শনতত্ত্বকে ভিত্তি করে পূর্ব ভারতের সমাজ ও সংস্কৃতিতে ব্যাপক পরিবর্তনের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়।

আসামে বৈষ্ণবধর্ম ও ভক্তিবাদ প্রচার করেন শংকরদেব (১৪৮৬-১৫৬৮ খ্রিঃ)। তাঁর পিতা ও মাতা ছিলেন যথাক্রমে কুসুমবর ও সত্যসন্ধা। অল্প বয়সে তিনি পিতৃমাতৃহীন হন। বাল্যকাল থেকেই সাহিত্যচর্চায় তাঁর ঝোঁক দেখা যায়। চিত্রাঙ্কনেও তাঁর সহজাত দক্ষতা ছিল। শংকরদেবকে অসমীয়া সাহিত্যের জনক বলা যায়। যৌবনে তিনি নওগাঁ জেলায় এসে বসবাস শুরু করেন। এখানে তিনি বিবাহ করে সংসারধর্মে ব্রতী হন। কিন্তু অল্প বয়সে পত্নীবিয়োগের ফলে তাঁর মন ঈশ্বরমুখী হয়। তীর্থদর্শনে বেরিয়ে তিনি বৃন্দাবন, মথুরা, বদরিকাশ্রম, গয়া, কাশী, পুরীধাম, দ্বারকা, রামেশ্বরম প্রভৃতি পুণ্যস্থান পরিভ্রমণ করেন। ভারতের নানাপ্রান্তে ভক্তিবাদী বৈষ্ণবধর্মের জনপ্রিয়তা তাঁকে আপ্লুত করে। নামসংকীর্তনের মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের সান্নিধ্যলাভের দর্শনতত্ত্ব শংকরদেবকে গভীরভাবে আকর্ষিত করে। পুরীধামে এসে তিনি স্বয়ং চৈতন্যদেবের সাক্ষাৎ পান। এই সময় তাঁকে পুনরায় সংসারমুখী করার জন্য তাঁর আত্মীয়রা শংকরের দ্বিতীয় বিবাহের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু বিবাহ করতে বাধ্য হলেও, শংকর অধ্যাত্ম-চিন্তায় বিভোর থাকেন। ভাগবত পুরাণের বক্তব্য তাঁর মনকে উতলা করে তোলে।

এই সময় বাংলা, উড়িষ্যা ও আসাম শাক্তধর্ম ও তন্ত্রাচারের প্রধান কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। পুরীর জগন্নাথদেব উপজাতীয় দেবতা ছিলেন বলে মনে করা হয়। কালক্রমে তাঁর ওপর বৈষ্ণববাদের আবরণ দেওয়া হয়েছে। তবে তাঁর পূজার্চনার ক্ষেত্রে শাক্ততান্ত্রিক রীতির প্রভাব ও প্রকাশ স্পষ্ট। অনুরূপভাবে গৌহাটির কামাখ্যাদেবী আসলে খাসি উপজাতির মাতৃদেবী, যিনি পরে শাক্ততান্ত্রিক দেবীতে রূপান্তরিত হয়েছেন। শংকরের উদার ভাষ্য দ্রুত আসামে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। সাহিত্যে ব্যুৎপত্তি ও সাহিত্য রচনায় তাঁর দক্ষতা সহজেই শংকরের দর্শনতত্ত্ব মানুষের হৃদয়ে পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়। তিনি প্রথমে সহজ সরল ভাষায় ভাগবতের অনুবাদ করেন। কামরূপী ভাষায় ভাগবত ব্যাখ্যা করেন। গান, নাটক ও ছোটোছোটো কাব্যগাথা রচনা করে তিনি মানুষের মন জয় করে নেন। কামরূপী ভাষায় মার্কণ্ডেয় পুরাণের রাজা হরিশচন্দ্রের কাহিনি এবং ভাগবত পুরাণের কয়েকটি অধ্যায় অনুবাদ করেন। বিভিন্ন গ্রন্থ থেকে ভক্তিধর্মের সারাৎসার সংগ্রহ করে তিনি ‘ভক্তি রত্নাকর’ গ্রন্থটি রচনা করেন। ‘ভক্তি প্রদীপ’ শীর্ষক গ্রন্থে তিনি ভক্তিতত্ত্ব ব্যাখ্যা করেন। তাঁর গ্রন্থ এবং কীর্তনের ভাব ও ভাষা আসামের জনগণের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। তিনি ছ’টি একাংক নাটক (অনকিয়া নাট্য) রচনা করেন। এর মধ্যে পাঁচটিরই বিষয়বস্তু ছিল পরমব্রহ্ম কৃষ্ণের জীবন ও দর্শনভিত্তিক। কামরূপী ভাষায় কৃষ্ণ ও রামকে ব্রহ্মরূপে কল্পনা করে শংকরদেব অনেকগুলি গীতও (বরগীত) রচনা করেন। তাঁর পাণ্ডিত্যে মুগ্ধ হয়ে কুচবিহারের কোচরাজা তাঁকে সেই রাজ্যে আশ্রম স্থাপনের অনুরোধ জানান। রক্ষণশীল ব্রাহ্মণ সমাজ শংকরদেবের বিরুদ্ধে বহু প্রচার চালান। কিন্তু শংকরের উদার দর্শনতত্ত্ব ও ভক্তিবাদ আসামের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে প্রচার লাভ করে।

শংকরদেবের ভক্তিবাদের মূল কথা হল ভক্ত ও ভগবানের মিলন। জ্ঞান বা কর্মযোগের পরিবর্তে তিনি ভক্তিযোগের ওপর বেশি গুরুত্ব দেন। ভক্তি রত্নাকর গ্রন্থে তিনি ঘোষণা করেন যে, ‘জীব’ ও ‘জগৎ’ ব্রহ্ম থেকে স্বতন্ত্র নয়। জীবজগৎ ও ব্রহ্মের স্বাতন্ত্র্যের ধারণার ভিত্তি হল অজ্ঞানতা। তিনি বলেন, ব্রহ্ম সম্পর্কে অভেদ ধারণাই হল ‘জ্ঞান’। তিনি লিখেছেন ‘ক্ষর’ ও ‘অক্ষর’-এর সমন্বয়েই এই বিশ্বজগৎ। ক্ষর হল ‘জীবাত্মা’ এবং ‘অক্ষর’হল ‘পরমাত্মা’। পরমাত্মা সৃষ্টি, স্থিতি ও লয়ের নির্দেশক। পরমাত্মা হলেন পুরুষোত্তম। পুরুষোত্তম কৃষ্ণই পরমাত্মার প্রতিভূ। নামসংকীর্তনের মধ্য দিয়েই পুরুষোত্তম কৃষ্ণের সান্নিধ্য লাভ করা যায়। ভগবদ্গীতায় শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, “কেবল আমাকে স্মরণ করো।” শংকরদেব তাই এক স্মরণের কথা বলেছেন। এজন্য তাঁর ধর্মমত ‘এক শরনিয়া ধর্ম নামে পরিচিত। ‘নাম ঘর’-এর মধ্যে কীর্তন ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে তিনি ঈশ্বরকে স্মরণ করার কথা বলেন।

শংকরদেবের প্রধান শিষ্য ছিলেন মাধবদেব। মাধবদেবের মৃত্যুর (১৫৯৬ খ্রিঃ) পর তাঁদের প্রবর্তিত ‘মহাপুরুষিয়া সম্প্রদায়’ একাধিক উপসম্প্রদায়ে বিভক্ত হয়ে যায়। দামোদরদের ‘ব্রহ্ম সংহতি’ বা ‘বামুনিয়া’ সম্প্রদায় গঠন করেন। অন্য একটি সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠা করেন অনিরাজদের। এই সম্প্রদায়ের অধিকাংশ সদস্য ছিলেন মৎস্যজীবী। এঁরা তান্ত্রিক আচার-অনুষ্ঠানে বিশ্বাস করতেন। এই সম্প্রদায় ‘মোয়া-মারিয়া’ নামে পরিচিত ছিল। শংকরদেবের পৌত্র পুরষোত্তম ঠাকুর ‘ঠাকুরিয়া’ সম্প্রদায় গঠন করেন। তাঁরই জনৈক অনুচর গোপালদেব ‘কালসংহতি’ নামে অপর একটি সম্প্রদায়ের নেতৃত্ব দেন। পূর্ববঙ্গে চৈতন্যবাদের প্রসার ঘটান নরোত্তম ঠাকুর। চৈতন্যদেব জাতিভেদ প্রথার বিরোধিতা করার কারণে নিম্নবর্ণের বহু মানুষ চৈতন্যবাদের প্রতি আকৃষ্ট হন। ধনী বণিকদের অনেকেই বৈষ্ণবধর্ম গ্রহণ করেছিলেন।

আশা করি আপনারা এই বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। যদি বুঝতে পারেন তাহলে আমাদের অন্যান্য পোস্ট ভিজিট করতে ভুলবেন না।

Leave a Comment