আমরা হয়ত অনেকে কাজী নজরুল ইসলাম এর উক্তি খোজার চেষ্টা করছি অনলাইন থেকে। আমাদের সবার প্রায় একটি ফেসবুক একাউন্ট রয়েছে। আমরা সেখানে বিভিন্ন রকমের উক্তি দিয়ে থাকি। তাই আজকে আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি কিছু অসাধারণ কাজী নজরুল ইসলাম এর জন্য উক্তি স্ট্যাটাস ক্যাপশন এসএমএ। তো চলুন দেখে আসা যাক কিছু ভালো উক্তি:
কাজী নজরুল ইসলাম এর উক্তি স্ট্যাটাস ক্যাপশন এসএমএস
“ফুলের সুবাস শুধু বাতাসের দিকেই ছড়ায়। কিন্তু মানুষের ভালো লাগা সব দিকেই ছড়িয়ে পড়ে।”
“ভয়ে কারো কাছে মাথা নত করো না, নির্ভীক হও, সাহসী হও।”
“আপনার ভিতরের আগুন আপনার চারপাশের অন্ধকারের চেয়ে উজ্জ্বল হয়ে উঠুক।”
“বড় স্বপ্ন দেখার সাহস করুন, কারণ স্বপ্ন আমাদের ভাগ্যকে রূপ দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।”
“শক্তি আপনার মধ্যে নিহিত, নিজেকে বিশ্বাস করুন এবং বিশ্ব জয় করুন।”
“ঘৃণার ঊর্ধ্বে উঠুন এবং প্রেমকে আপনার অস্ত্র হিসাবে আলিঙ্গন করুন।”
“মোরা এক বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু মুসলমান, মুসলিম তার নয়ন মনি হিন্দু তাহার প্রাণ।”
“রক্তের প্রতিটি ফোঁটায় বিদ্রোহের নদী বয়ে যায়!”
“আমার চিন্তাগুলি ফুলের মতো ফুটতে দিন, আমার কণ্ঠ বজ্রের মতো অনুরণিত হোক, কারণ আমি সত্য বলতে ভয় পাই না।”
“বৈচিত্র্যকে আলিঙ্গন করুন এবং পার্থক্য উদযাপন করুন, কারণ ঐক্যের জন্ম হয় গ্রহণ থেকে।”
“মানবতার অন্তর্নিহিত কল্যাণে বিশ্বাস রাখুন, এটি ঘৃণা ও কুসংস্কারের উপর জয়ী হবে।”
“তোমার কণ্ঠস্বর শোনা যাক, অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে কথা বলুন।
“মনে রাখবেন যে প্রতিটি সমাপ্তি সম্ভাবনায় পূর্ণ একটি নতুন শুরু”।
“ব্যর্থতাকে কখনই আপনাকে সংজ্ঞায়িত করতে দেবেন না, সাফল্যের দিকে সোপান হিসেবে ব্যবহার করুন।”
“জীবন একটি চিরন্তন সংগ্রাম; বিজয় আপনার না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যান।”
“আল্লাহ ছাড়া কারো সামনে মাথা নত করো না।”
“বৈচিত্র্যকে আলিঙ্গন করুন, কারণ এটি আমাদের জীবনকে নতুন দৃষ্টিকোণ দিয়ে সমৃদ্ধ করে।”
“হাসিকে আপনার সত্তায় প্রতিধ্বনিত হতে দিন, এটি শরীর এবং আত্মা উভয়ের জন্য ওষুধ।”
“যখন হতাশা আপনার দরজায় কড়া নাড়বে, তখন সাহসের সাথে এটি খুলুন এবং আপনার পথপ্রদর্শক আলো হিসাবে আশাকে আলিঙ্গন করুন।”
“মেঘের উপরে উড়ে যাওয়া পাখির মতো, আপনার স্বপ্নগুলিকে উড়তে দিন এবং অসীম আকাশে পৌঁছাতে দিন।”
“আমার একটাই পরিচয় আছে – একজন মানুষের।”
“ভালোবাসা কোন সীমানা জানে না, এটি সমস্ত বাধা অতিক্রম করে এবং আকাশের যেকোনো তারার চেয়ে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।”
“প্রতিটি সূর্যাস্ত আশা এবং সম্ভাবনায় ভরা একটি নতুন ভোরের প্রতিশ্রুতি নিয়ে আসে।”
“প্রতিটি কষ্টের মধ্যেই বৃদ্ধি ও শক্তির একটি সুযোগ রয়েছে।”
“নিজেকে বিশ্বাস করুন, কারণ আপনি পরিমাপের বাইরে মহত্ত্ব অর্জন করতে সক্ষম।”
“দাবানলের মতো দয়া ছড়িয়ে দিন, করুণা ও সহানুভূতি দিয়ে হৃদয় জ্বালান।”
“বিরক্তির চেয়ে ক্ষমা বেছে নিন, এটি অভ্যন্তরীণ শান্তি এবং মুক্তির পথ।”
“একটি হাসির শক্তিকে কখনই অবমূল্যায়ন করবেন না, এটি কারও দিনকে উজ্জ্বল করার ক্ষমতা রাখে।”
“প্রকৃতির আলিঙ্গনে সান্ত্বনা খুঁজুন, এর সৌন্দর্য অন্যদের অদেখা ক্ষত নিরাময় করতে পারে।”
“প্রেম হল ধীর প্রশান্ত ও চিরন্তন।”
“আমার হৃদয় ভয় জানে না, এটি কেবল প্রচণ্ড ভালোবাসতে জানে।”
“শব্দের অপরিসীম শক্তি রয়েছে – তারা ক্ষত নিরাময় করতে পারে বা আগুন জ্বালাতে পারে, বুদ্ধিমানের সাথে বেছে নিন।”
“জীবনের চ্যালেঞ্জগুলি আপনাকে বাঁকিয়ে দিতে পারে কিন্তু আপনাকে কখনই ভাঙতে পারে না, মনে রাখবেন যে স্থিতিস্থাপকতা আপনার আত্মার মধ্যে রয়েছে।”
“নিঃসঙ্গতাকে আত্ম-আবিষ্কারের সুযোগ হিসাবে আলিঙ্গন করুন, এই মুহুর্তগুলিতে আমরা আমাদের সত্যিকারের নিজেকে খুঁজে পাই।”
“প্রতিটি অশ্রু যে পড়ে, তার মধ্যেই শক্তি লুকিয়ে থাকে।”
“যদিও ঝড়, ক্ষোভ এবং অন্ধকার আমাদের ঘিরে ফেলতে পারে, মনে রাখবেন যে বিশৃঙ্খলার মধ্যেও সৌন্দর্য খুঁজে পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।”
“আমার ভালবাসা সূর্যের মতো হোক যা অন্ধকারতম দিনেও উজ্জ্বলভাবে জ্বলে।”
“প্রতিটি ভোর নতুন আশা নিয়ে আসে, প্রতিটি দিনকে নবায়নের সুযোগ হিসেবে কাজে লাগান।”
“ছোটো ছোটো বিছেদ প্রেম কে গভীর করে। আর দীর্ঘ বিছেদ প্রেম কে হত্যা করে।”
“আমাদের আলো প্রতিটি কোণে না পৌঁছানো পর্যন্ত সূর্যের মতো জ্বলতে দিন!”
“যদি আমার কোনো বাড়ি বা পরিবার না থাকে, যতক্ষণ পর্যন্ত আমার কলমে কালি থাকে, ততক্ষণ আমার সবকিছু আছে।”
“আমরা সবাই পাপী, আপন পাপের বাটখারা দিয়ে অন্যের পাপ মাপি।”
“আমি মৃত্যুকে ভয় পাই না, আমি আত্মসমর্পণ করতে ভয় পাই।”
“কারার ঐ লৌহকপাট, ভেঙ্গে ফেল কর রে লোপাট, রক্ত-জমাট শিকল পূজার পাষাণ-বেদী।”
“আকাশ আমার ছাদ, পৃথিবী আমার বিছানা এবং স্বাধীনতা আমার ধর্ম।”
“আজ রাতে আমাকে একটি প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঘুমাতে দাও: আমি চিরন্তন শিখা হয়ে জেগে উঠব!”
“তারা যদি আপনাকে শান্তি না দেয়, তাহলে জোর করে নিয়ে নাও।”
বিদ্রোহ ও প্রতিবাদ বিষয়ে কাজী নজরুল ইসলামের উক্তি সমূহ
”কারার ঐ লৌহকপাট, ভেঙ্গে ফেল কর রে লোপাট, রক্ত-জমাট শিকল পূজার পাষাণ-বেদী।” ( উৎস -‘ ভাঙ্গার গান’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত)
“মহা – বিদ্রোহী রণক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত।
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে-বাতাসে ধ্বনিবে না,
অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণ, ভূমে রণিবে না-
বিদ্রোহী রণক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত।”
“ আমি বন্ধনহারা কুমারীর বেনী, তন্বী নয়নে বহ্নি, আমি ষোড়শীর হৃদি-সরসিজ প্রেম উদ্দাম, আমি ধন্যি।” (উৎস – ‘বিদ্রোহী’ কবিতা)
”বল বীর-বল উন্নত মম শির! শির নেহারি আমারি নতশির ওই শিখর হিমাদ্রির।”- কাজী নজরুল ইসলাম ( উৎস- ‘বিদ্রোহী’ কবিতা)
”ফাঁসির মঞ্চে গেয়ে গেল যারা জীবনের জয়গান
আসি’ অলক্ষ্যে দাঁড়ায়েছে তারা, দিবে কোন বলিদান?” ( উৎস – ‘সর্বহারা’ কাব্যের ‘কান্ডারী হুঁশিয়ার’)
”আমি বিদ্রোহী ভৃগু, ভগবান বুকে এঁকে দিই পদ-চিহ্ন।” ( উৎস ‘ বিদ্রোহী’ কবিতা)
”আমি বেদুইন, আমি চেঙ্গিস, আমি আপনারে ছাড়া করি না কাহারে কূর্ণিশ।”- (উৎস ‘বিদ্রোহী’ কবিতা)
ভালোবাসা ও প্রেম নিয়ে কাজী নজরুল ইসলামের বিখ্যাত বাণী ও উক্তি সমূহ
১.”প্রেম হল ধীর প্রশান্ত ও চিরন্তন।”
২.”তোমারে যে চাহিয়াছে ভুলে একদিন, সে জানে তোমারে ভোলা কি কঠিন।”
৩. “তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি প্রিয়, সে কি মোর অপরাধ? চাঁদেরে হেরিয়া কাঁদে চকোরিণী বলে না তো কিছু চাঁদ। “
৪.”ভালোবাসা দিয়ে ভালোবাসা না পেলে তার জীবন দুঃখের ও জড়তার।”
৫.”ভালবাসার কোন অর্থ বা পরিমাণ নেই।“
৬.”ভালোবাসাকে যে জীবনে অপমান করে সে জীবনে আর ভালোবাসা পায় না।”
৭.”আমার যাবার সময় হল দাও বিদায় , মোছ আঁখি দুয়ার খোল দাও বিদায়। ”
“আমার বুকের যে কাঁটা-ঘা তোমায় ব্যথা হানত, / সেই আঘাতই যাচবে আবার হয়তো হয়ে শ্রান্ত / আসব তখন পান্থ ! / হয়তো তখন আমার কোলে, / সোহাগ লোভে পড়বে ঢ’লে / আপনি সেদিন সেধে-কেঁদে / চাপবে বুকে বাহু বেঁধে, / চরন চু’মে পূজবে — / বুঝবে সেদিন বুঝবে! ”
৯.”কামনা আর প্রেম দুটি হচ্ছে সম্পুর্ণ আলাদা। কামনা একটা প্রবল সাময়িক উত্তেজনা মাত্র আর প্রেম হচ্ছে ধীর প্রশান্ত ও চিরন্তন।”
১০.“যেদিন আমি হারিয়ে যাব, বুঝবে সেদিন বুঝবে,
অস্তপারের সন্ধ্যাতারায় আমার খবর পুছবে
বুঝবে সেদিন বুঝবে!”
১১.“মিথ্যা শুনিনি ভাই, এই হৃদয়ের চেয়ে বড় কোনো মন্দির-কাবা নাই।”
১২.” মৃত্যুর যন্ত্রণার চেয়ে বিরহের যন্ত্রণা যে কতো কঠিন,
কতো ভয়ানক তা একমাত্র ভুক্তভোগীই অনুভব করতে পারে।“
১৩.” হয়তো তোমার পাব দেখা
যেখানে ঐ নত আকাশ চুমছে বনের সবুজ রেখা।“
See more: কিউট বেবি পিক ডাউনলোড
মানবতা,ধর্ম ও সমাজ নিয়ে কাজী নজরুল ইসলামের উক্তি
”মরিছে হিন্দু, মরে মুসলিম এ উহার ঘায়ে আজ,
বেঁচে আছে যারা মরিতেছে তারা, এ-মরণে নাহি লাজ!
জেগেছে শক্তি তাই হানাহানি,
অস্ত্রে অস্ত্রে নব জানাজানি!
আজি পরীক্ষা-কাহার দস্ত হয়েছে, কত দরাজ!
কে মরিবে কাল সম্মুখ-রণে, মরিতে কা’রা নারাজ!” (উৎস-‘হিন্দু- মুসলিম যুদ্ধ’ কবিতা)
”জানিস নাকি ধর্ম সে যে বর্মসম সহনশীল
তাই কি ভাই ভাঙতে পারে ছোঁওয়া ছুঁয়ির ছোট্ট ঢিল ?
যে জাত-ধর্ম ঠুনকো এত আজ না হয় কাল ভাঙবে সে ত।
যাক না সে জাত জাহান্নামে রইবে মানুষ নাই পরোয়া।”
”পুঁথির বিধান যাক পুড়ে তোর
বিধির বিধান সত্য হোক।” ( উৎস-” সত্য-মন্ত্র” কবিতা)
“যুগের ধর্ম এই- পীড়ন করিলে সে পীড়ন এসে পীড়া দেবে তোমাকেই!”
“গাহি সাম্যের গান –
মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই , নহে মহীয়ান।”( উৎস- ‘মানুষ’কবিতা)
“নামাজ পড়, রোজা রাখ, কলমা পড় ভাই,তোর আখেরের কাজ করে নে সময় যে আর নাই।”
“অসুন্দর পৃথিবীকে সুন্দর করতে; সর্বনির্যাতন থেকে মুক্ত করতেই মানুষের জন্ম।”
“ হিন্দু না ওরা মুসলিম এই জিজ্ঞাসে কোন জন হে, কাণ্ডারি বল ডুবিছে মানুষ সন্তান মোর মা’র ।“(উৎস-“কান্ডারী হুঁশিয়ার” কবিতা)
“ যেথা সবে-সম-পাপী
আপন পাপের বাটখারা দিয়ে অন্যের পাপ মাপি
জবাবদিহির কেন এত ঘটা যদি দেবতাই হও
টুপি পড়ে টিকি রেখে সদা বলো যেন তুমি পাপী নও
পাপী নও যদি কেন এ ভড়ং ট্রেডমার্কার ধুম
পুলিশি পোশাক পরিয়া হয়েছ পাপের আসামী গুম। ”( উৎস- ‘পাপ’ কবিতা)
“ মসজিদেরই পাশে আমার কবর দিও ভাই
যেন গোরে থেকেও মোয়াজ্জিনের আজান শুনতে পাই। ”
“খেলিছ এ বিশ্ব লয়ে
বিরাট শিশু আনমনে।
প্রলয় সৃষ্টি তব পুতুল খেলা
নিরজনে প্রভু নিরজনে।। ”
“মৌ-লোভী যত মৌলবি আর মোল-লা’রা কন হাত নেড়ে
দেব-দেবী নাম মুখে আনে সবে দাও পাজিটার জাত মেরে
ফতোয়া দিলাম কাফের কাজী ও
যদিও শহীদ হইতে রাজি ও
আমপারা পড়া হামবড়া মোরা এখনও বেড়াই ভাত মেরে
হিন্দুরা ভাবে পার্শী শব্দে কবিতা লেখে ও পা’ত নেড়ে।”
“দূর আজানের মধুর ধ্বনি, বাজে, বাজে মসজিদের-ই মিনারে।
মনেতে জাগে, হাজার বছর আগে, হজরত বেলালের অনুরাগে।
তার খাস এলাহান, মাতাইতো প্রাণ।
ভাঙ্গাইতো পাষান, জাগাইতো মহিমারে।
দূর আজানের মধুর ধ্বনি, বাজে, বাজে মসজিদের-ই মিনারে।“
“সত্য যদি হয় ধ্রুব তোর
কর্মে যদি না রয় ছল,ধর্ম দুগ্ধে না রয় জল
সত্যের জয় হবেই হবে আজ নয় কাল মিলবেই ফল।”- কাজী নজরুল ইসলাম (উৎস- ‘সত্য-মন্ত্র’কবিতা)
See more: সুন্দর কিছু কথা
“মিথ্যা শুনিনি ভাই
এই হৃদয়ের চেয়ে বড় কোনও মন্দির-কাবা নাই ।“- কাজী নজরুল ইসলাম
”রাখাল বলিয়া কারে করো হেলা, ও-হেলা কাহারে বাজে!
হয়তো গোপনে ব্রজের গোপাল এসেছে রাখাল সাজে !“- কাজী নজরুল ইসলাম(উৎস ‘মানুষ’ কবিতা)
“সত্যকে অস্বীকার করিয়া ভন্ডামি দিয়া কখনো মঙ্গল উৎসবের কল্যাণ প্রদীপ জ্বলিবে না।”
“যার ভিত্তি পচে গেছে, তাকে একদম উপড়ে ফেলে নতুন করে ভিত্তি না গাঁথলে তার ওপর ইমারত যতবার খাঁড়া করা যাবে, ততবার তা পড়ে যাবে ।”
“তিনিই আর্টিস্ট, যিনি আর্ট ফুটাইয়া তুলিতে পারেন । আর্টের অর্থ সত্য প্রকাশ এবং সত্য মানেই সুন্দর; সত্য চিরমঙ্গলময়।”
“শোন মর্ত্যের জীব অন্যের যত করিবে পীড়ন নিজে হবে তত ক্লীব।”
“অনেক সময় খুব বেশি বিনয় দেখাতে গিয়ে নিজের সত্যেকে অস্বীকার করে ফেলা হয় । তাতে মানুষকে ক্রমেই ছোট করে ফেলে, মাথা নিচু করে আনে ও রকম মেয়েলি বিনয়ের চেয়ে অহংকারের পৌরুষ অনেক ভালো।”
” শাস্ত্র না ঘেটে ডুব দাও সখা সত্য সিন্ধু জলে।“- কাজী নজরুল ইসলাম( উৎস ‘ঈশ্বর’ কবিতা)
“পশুর মতো সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে আমাদের লাভ কী, যদি আমাদের গৌরব করার মতো কিছু না-ই থাকে।“
“ শিহরি উঠো না শাস্ত্রবিদেরের ক’রোনা ক’ বীর ভয়
তাহারা খোদার খোদ ‘প্রাইভেট সেক্রেটারি’ তো নয়। “
“বিশ্ব যখন এগিয়ে চলেছে, আমরা তখনও বসে- বিবি তালাকের ফতোয়া খুঁজেছি, ফিকাহ ও হাদিস চষে।“
“বাহিরের স্বাধীনতা গিয়াছে বলিয়া অন্তরের স্বাধীনতাকেও আমরা যেন বিসর্জন না দিই।”-কাজী নজরুল ইসলাম
“হেথা সবে সম পাপী, আপন পাপের বাটখারা দিয়ে অন্যের পাপ মাপি!”
“ও কারা কোরাণ বেদ বাইবেল চুম্বিছে মরি মরি
ও মুখ হইতে কেতাব গ্রন্থ নাও জোর করে কেড়ে
যাহারা আনিল গ্রন্থ-কেতাব সেই মানুষেরে মেরে
পুজিছে গ্রন্থ ভন্ডের দল! – মুর্খরা সব শোন
মানুষ এনেছে গ্রন্থ; গ্রন্থ আনেনি মানুষ কোনও। ”- কাজী নজরুল ইসলাম(উৎস-‘মানুষ’ কবিতা)
“আমি এই দেশে, এই সমাজে জন্মেছি বলেই শুধু এই দেশের, এই সমাজেরই নই, আমি সকল দেশের সকল মানুষের।”
বসন্ত নিয়ে কাজী নজরুল ইসলামের বাণী:-
“ আসে বসন্ত ফুল বনে সাজে বনভূমি সুন্দরী;
চরণে পায়েলা রুমুঝুমু মধুপ উঠিছে গুঞ্জরি।“
“ বসন্ত মুখর আজি দক্ষিণ সমীরণে মর্মর গুঞ্জনেবনে বনে বিহ্বল বাণী ওঠে বাজি।“
“ বসন্ত এলো এলো এলোরে
পঞ্চম স্বরে কোকিল কুহুরে
মুহু মুহু কুহু কুহু তানে
মাধবী নিকুঞ্জে পুঞ্জে পুঞ্জে
ভ্রমর গুঞ্জে গুঞ্জে গুনগুন গানে। ”
See more: সাদা কালো উক্তি
কাজী নজরুল ইসলামের প্রেরণামূলক বাণী বা উক্ত :-
“ব্যর্থ না হওয়ার সব চাইতে নিশ্চিন্ত পথ হলো সাফল্য অর্জনে দৃঢ় সঙ্কল্প হওয়া।”
“অন্ধের মতো কিছু না বুঝিয়া, না শুনিয়া, ভেড়ার মতো পেছন ধরিয়া চলিও না । নিজের বুদ্ধি, নিজের কার্যশক্তিকে জাগাইয়া তোলে ।”
“বহু যুবককে দেখিয়াছি যাহাদের যৌবনের উর্দির নিচে বার্ধকের কঙ্গাল মূর্তি।”
“ আসবে ঝড়, নাচবে তুফান, টুটবে সকল বন্ধন,
কাঁপবে কুটীর সেদিন ত্রাসে, জাগবে বুকে ক্রন্দন-
টুটবে যবে বন্ধন!
পড়বে মনে, নেই সে সাথে
বাঁধবে বুকে দুঃখ-রাতে-
আপনি গালে যাচবে চুমা,
চাইবে আদর, মাগবে ছোঁওয়া,
আপনি যেচে চুমবে-
বুঝবে সেদিন বুঝবে। ”
”আমরা রচি ভালোবাসার
আশার ভবিষ্যৎ
মোদের স্বর্গ-পথের আভাস দেখায়
আকাশ-ছায়াপথ!
মোদের চোখে বিশ্ববাসীর
স্বপ্ন দেখা হোক সফল।
আমরা ছাত্রদল।“- কাজী নজরুল ইসলাম( উৎস- ‘ছাত্রদল’ কবিতা)
“সত্য যদি লক্ষ্য হয়, সুন্দর ও মঙ্গলের সৃষ্টি সাধনা ব্রত হয়, তবে তাহার লেখা সম্মান লাভ করিবেই করিবে।”- কাজী নজরুল ইসলাম
“রক্ত ঝরাতে পারি না তো একা, তাই
লিখে যাই এ রক্ত লেখা।”- কাজী নজরুল ইসলাম
‘আজি হ’তে শত বর্ষে আগে, কে কবি,
স্মরণ তুমি করেছিলে আমাদের শত অনুরাগে।“- কাজী নজরুল ইসলাম
নারী নিয়ে কাজী নজরুল ইসলাম এর বাণী:-
“খেলে চঞ্চলা বরষা-বালিকা
মেঘের এলোকেশে ওড়ে পুবালি বায়
দোলে গলায় বলাকার মালিকা। ”
“নর-ভাবে আমি বড় নারী ঘেঁষা! নারী ভাবে, নারী বিদ্বেষী!’ (উৎস- ‘সর্বহারা’ কাব্যের ‘আমার কৈফিয়ৎ’ কবিতা)
“কোনকালে একা হয়নিকো জয়ী, পূরুষের তরবারী; প্রেরনা দিয়েছে, শক্তি দিয়াছে, বিজয়-লক্ষী নারী।” (উৎস -‘নারী’ কবিতা)
“আপনারে আজ প্রকাশের তব নাই সেই ব্যাকুলতা
আজ তুমি ভীরু আড়ালে থাকিয়া নেপথ্যে কও কথা!
চোখে চোখে আজ চাহিতে পার না; হাতে রুলি, পায়ে মল,
মাথায় ঘোমটা, ছিঁড়ে ফেল নারী, ভেঙে ফেল ও শিকল!
যে-ঘোমটা তোমায় করিয়াছে ভীরু ওড়াও সে আবরণ!
দূর করে দাও দাসীর চিহ্ন ঐ যতো আবরণ।” (উৎস- ‘নারী’ কবিতা)
”সর্বসহা কন্যা মোর! সর্বহারা মাতা!
শূন্য নাহি রহে কভূ মাতা ও বিধাতা!“(উৎস- ‘সর্বহারা’ কাব্যগ্রন্থের ‘মা’ কবিতা)
”বিশ্বে যা-কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।
বিশ্বে যা-কিছু এল পাপ-তাপ বেদনা অশ্রুবারি
অর্ধেক তার আনিয়াছে নর, অর্ধেক তার নারী।“(উৎস- ‘নারী’ কবিতা)
“তোমার মমতা-মানিক আলোকে চিনিনু …
মাতা তুমি লাঞ্ছিতা বিশ্ব-জননী।
তোমার আঁচল পাতা নিখিল দুঃখী-নিপীড়িত তবে,
বিষ শুধু তোমা দহে যথা তব মাগো পীড়িত নিখিল ধরণীর ভার বহে।“- কাজী নজরুল ইসলাম
“ভগবান! তুমি চাহিতে পার কি ঐ দুটি নারীর পানে?
জানি না, তোমায় বাঁচাবে কে যদি ওরা অভিশাপ হানে!”- কাজী নজরুল ইসলাম
“কান্না হাসির খেলার মোহে অনেক আমার কাটল বেলা
কখন তুমি ডাক দেবে মা, কখন আমি ভাঙব খেলা ?” ( উৎস- “উপেক্ষিত” কবিতা)
দুঃখ ও বিরহ নিয়ে কাজী নজরুল ইসলামের উক্তি বা বাণী:-
“ আসবে আবার আশিন-হাওয়া, শিশির-ছেঁচা রাত্রি,
থাকবে সবাই – থাকবে না এই মরণ-পথের যাত্রী!
আসবে শিশির-রাত্রি!
থাকবে পাশে বন্ধু স্বজন,
থাকবে রাতে বাহুর বাঁধন,
বঁধুর বুকের পরশনে
আমার পরশ আনবে মনে-
বিষিয়ে ও-বুক উঠবে-
বুঝবে সেদিন বুঝবে! ”- কাজী নজরুল ইসলাম( উৎস- ‘অভিশাপ’ কবিতা)
”কপালে সুখ লেখা না থাকলে সে কপাল পাথরে ঠুকেও লাভ নেই। এতে কপাল যথেষ্টই ফোলে, কিন্তু ভাগ্য একটুও ফোলে না ।”
” এই নীরব নিশীথ রাতে
শুধু জল আসে আঁখিপাতে!“- কাজী নজরুল ইসলাম( উৎস- ‘ব্যথা নিশীথ’ কবিতা)
See more: শিক্ষামূলক উক্তি
” হে দারিদ্র্য, তুমি মোরে ক’রেছ মহান!
তুমি মরে দানিয়াছ খ্রিষ্টের সম্মান।“- কাজী নজরুল ইসলাম( উৎস- ‘ দারিদ্র্য’ কবিতা)
“ যেদিন আমি হারিয়ে যাব, বুঝবে সেদিন বুঝবে
অস্তপারের সন্ধ্যাতারায় আমার খবর পুঁছবে
বুঝবে সেদিন বুঝবে। ”- কাজী নজরুল ইসলাম (উৎস- ‘অভিশাপ’ কবিতা)
“ স্বপন ভেঙ্গে নিশুত রাতে, জাগবে হঠাৎ চমকে
কাহার যেন চেনা ছোয়ায় উঠবে ও-বুক ছমকে-
জাগবে হঠাৎ ছমকে,
ভাববে বুঝি আমিই এসে
বসনু বুকের কোলটি ঘেষে
ধরতে গিয়ে দেখবে যখন
শূন্য শয্যা মিথ্যা স্বপন
বেদনাতে চোখ বুজবে-
বুঝবে সেদিন বুঝবে ।”- কাজী নজরুল ইসলাম(উৎস- ‘অভিশাপ’ কবিতা)
”আমাদের শত ব্যথিত হৃদয়ে
জাগিয়া রহিবে তুমি ব্যথা হ’য়ে,
হ’লে পরিজন চির-পরিচয়ে-
পুনঃ পাব তব দরশন,
এ নহে পথের আলাপন।“-কাজী নজরুল ইসলাম( উৎস- ‘বিদায়- স্মরণে’ কবিতা)
“নুড়ি হাজার বছর ঝরণায় ডুবে থেকেও রস পায় না।”
“হাসি দিয়ে যদি লুকালে তোমার সারা জীবনের বেদনা
আজো তবে শুধু হেসে যাও, আজ বিদায়ের দিনে কেঁদোনা।“
“মৃত্যুর যন্ত্রণার চেয়ে বিরহের যন্ত্রণা যে কতো কঠিন,
কতো ভয়ানক তা একমাত্র ভুক্তভুগিই অনুভব করতে পারে।“
“আমার যাবার সময় হল দাও বিদায় মোছ আঁখি দুয়ার খোল দাও বিদায়। ”
“ফোটে যে ফুল আঁধার রাতে ঝরে ধুলায় ভোর বেলাতে আমায় তারা ডাকে সাথী আয়রে আয় সজল করুণ নয়ন তোলো দাও বিদায়।
“আমি নিজেই নিজের ব্যথা করি সৃজন
শেষে সেই আমারে কাঁদায়, যারে করি আপনারি জন।”
“গাইতে গিয়ে কন্ঠ ছিড়ে আসবে যখন কান্না
বলবে সবাই- সেই যে পথিক তার শোনানো গান না?-
আসবে ভেঙ্গে কান্না,
পড়বে মন আমার সোহাগ
কন্ঠে তোমার কাদবে বেহাগ
পড়বে মনে আমার ফাকি
অশ্রুহারা কঠিন আখি
ঘন ঘন মুছবে,
বুঝবে সেদিন বুঝবে। ”
“ স্বপনে কি যে কয়েছি তাই গিয়াছে চলে
জাগিয়া কেঁদে ডাকি দেবতায়
প্রিয়তম প্রিয়তম প্রিয়তম।।”
কাজী নজরুল ইসলাম কবিতার লাইন
স্নেহ-পরশ (Sneho Purush)
আমি এদেশ হতে বিদায় যেদিন নেব প্রিয়তম, কাঁদবে এ বুক সঙ্গীহারা কপোতিনী সম – তখন মুকুরপাশে একলা গেহে আমারই এই সকল দেহে চুমব আমি চুমব নিজেই অসীম স্নেহে গো! আহা পরশ তোমার জাগছে যে গো এই সে দেহে মম, কম সরস-হরষ সম। তখন তুমি নাইবা – প্রিয় – নাইবা রলে কাছে, জানব আমার এই সে দেহে এই সে দেহে গো তোমার বাহুর বুকের শরম-ছোঁয়ার আকুল কাঁপন আছে – মদির অধীর পুলক নাচে! তখন নাইবা আমার রইল মনে কোনখানে মোর দেহের বনে জড়িয়েছিলে লতার মতন আলিঙ্গনে গো! আমি চুমোয় চুমোয় ডুবাব এই সকল দেহ মম – ওগো শ্রাবণ-প্লাবন সম। {কাজী নজরুল ইসলাম এর উক্তি}
কাজী নজরুল ইসলাম এর জীবনী
বাংলা– ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ , ইংরেজি ২৪ শে মে ১৮৯৯ বাঙালির হৃদয়ে চিরমুখর বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম জন্মগ্রহন করেন বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামের এক দরিদ্র পরিবারে । বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন একাধারে কবি , ঔপন্যাসিক, নাটককার , সংগীতজ্ঞ এবং প্রগতিশীল চিন্তার অধিকারী ।
দুই বাংলাতেই তিনি সমানভাবে জনপ্রিয় । তাঁর লেখার মধ্যে একদিকে যেমন আছে বিদ্রোহী উন্মাদনা তেমনি অন্যদিকে আছে প্রেমের স্নিগ্ধতা । একদিকে তীব্র প্রতিবাদ অন্যদিকে মানবতার জয়গান । কবি নিজেই তাঁর বিদ্রোহী কবিতায় বলেছিলেন ” মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী / আর হাতে রণতূর্য । ” — এখানেই তিনি নিজেকে স্পষ্ট করে দেন যে – তিনি গভীর মানব প্রেমিক , কিন্তু কোনোরকম অন্যায় , অবিচার , শোষণ , ভণ্ডামিকে মেনে নেবেন না ।
সেটা আমৃত্যু বজায় রেখেছিলেন । পরাধীন দেশে তাঁর তীক্ষ্ণ তরবারির চেয়েও ধারালো কলম ব্রিটিশ শাসকের ঘুম কেড়ে নিয়েছিল । অকুতোভয় এই বীর কবি শাসকের চোখ রাঙানিতে কখনো আপোস করেননি । সমাজে যে কোনো ধরনের অত্যাচারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিল তার লেখনী । তিনি কবি হিসেবে অমরত্ব চান নি , তিনি আগে মানুষ তারপর কবি । তাই তো মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে সকল অনাচার , শোষণের সমাপ্তি চেয়েছিলেন ।
একইসঙ্গে গভীরভাবে আঁকড়ে ধরেছিলেন প্রেম , ভালোবাসা ও তীব্র প্রতিবাদ । মানুষ ও তার সমাজ , নারী , প্রেম , ধর্ম , রাজনীতি , বিদ্রোহ , উৎসাহ উদ্দীপনায় ভরা কাজী নজরুল ইসলামের অমর বাণীগুলি কবিতায় , গানে , নাটকে বিধৃত হয়ে আছে । সেই বাণীগুলি আপামর বাঙালিকে প্রতিটি মুহূর্তে প্রাণিত করতে পারে । কাজী নজরুল ইসলামের মূল্যবান কিছু উক্তি এখানে একত্র পরিবেশিত হল।