প্রিয় শিক্ষার্থীরা কেমন আছো আশা করি ভালো আছো, আজকে তোমাদের জন্য আমরা নিয়ে এসেছি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ভাবসম্প্রসারণ “তুমি বসন্তের কোকিল, শীত বর্ষার কেহ নও ”। চলো এই ভাবসম্প্রসারণটি পড়ে নেয়।
তুমি বসন্তের কোকিল, শীত বর্ষার কেহ নও ভাবসম্প্রসারণ
মূলভাব: এই অদ্ভুত মায়াময় পৃথিবীতে মোহ আর লোভের বশবর্তী হয়ে এক শ্রেণীর মানুষের উদ্ভব হয়েছে যাদের কেবলমাত্র বিশেষ সময় বিশেষ ক্ষনে দৃষ্টিগোচর হয়ে থাকে।
সম্প্রসারিত ভাব: অদ্ভুত এই পৃথিবী। তার চাইতে বড় অদ্ভুত আমাদের এই সৃষ্টি। স্রষ্টা তার শ্রেষ্ঠতম সৃষ্টি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। মানুষ নিজের হাতে সেই স্রষ্টার সৃষ্টিকে অপমানিত করেছে। এ পৃথিবীতে যেমন উদার মহৎ ব্যক্তির বিচরণ রয়েছে ঠিক তেমনভাবেই রয়েছে স্বার্থপর আত্মসচেতন ব্যক্তির। যারা সর্বদা সমাজে থেকে শুধুমাত্র আত্মসাৎ করে চলেছে। সমাজের প্রতি এদের কোন দায়বদ্ধতা নেই। নিজেদের স্বার্থ টুকু লব্ধ করার পর এরা বিমুখ হতে বিন্দুমাত্র বিলম্ব করে না। সমাজে পিছিয়ে পড়া দুস্থ নিঃস্ব রিক্ত ব্যক্তিদের পাশে এদের কখনো দেখা যায় না। সমাজের ধনী ক্ষমতাশালী ব্যক্তিদের আশপাশে এদের প্রচুর ভিড় দেখা যায়। নিজেদের স্বার্থ টুকু চরিতার্থ করার অভিপ্রায় এরা কখনো কখনো মুখোশ ধারণ করে ভালো মানুষের। সাধারণ মানুষ তখন এদের মুখোশের আড়ালে কুৎসিত বীভৎস্য মুখ ভুলে যায়। স্বার্থচরিতার্থ হওয়ার পর মুহুর্তে এরা পুনরায় এদের মুখোশ খুলে ফেলে। এরা সংকীর্ণ মনোভাবাপন্ন ব্যক্তি। কপট ও ছল চাতুরিতে প্রখর হয়ে থাকে। মানুষের বিপদে আপদে এদের কখনোই দেখা যায় না এরা বসন্তের কোকিলের মত নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আবির্ভাব হয় আবার স্বার্থ পূরণ হয়ে গেলে ডুমুরের ফুলের মতো অদৃশ্য হয়ে যায়। এদের উপস্থিতি সর্বদা স্বার্থপরতার জানান দেয়। এ সমস্ত ব্যক্তি সমাজ তথা গোটা দেশের পক্ষে অভিশাপ স্বরূপ।
বিকল্প ১
মূলভাব : প্রকৃতির নিয়মে ঋতু পরিবর্তন হয়। গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহ, বর্ষার ভিজে সপসপে রূপ, শীতের হিমেল রুক্ষ্মতা এক এক করে সব সরে যায়। চলে যায় গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত ও শীত।
সম্প্রসারিত ভাব : প্রকৃতির নব বসন্তের আগমনে অপরূপ সৌন্দর্য শোভায় নবজীবন লাভ করে। কচি পাতার মধ্য থেকে মাথা তোলা ফুলের সৌরভভারে নম্র শীতল বাতাস বইতে থাকে। জানা অজানা বিচিত্র বর্ণের ফুলের ডালি সজিয়ে অরণ্য তার যৌবনের ডাক দেয়। আসে কোকিল। বসন্তের জাগ্রত দূত। সে তখন মনের সুখে গান করে চিরসুখী কোকিল বসন্ত ছাড়া কখনও ডাকে না। প্রকৃতির সুখের সময়েই তার শুভগমন প্রকৃতির বিপর্যয়ে সে বেপাত্তা। পৃথীবিতে ‘কোকিল’ শ্রেণীর এক জাতীয় মানুষ আছে। যাদের কাছে স্বার্থই পরমার্থ। নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য তারা আমাদের সুখের দিনের অনুচর; কত হাসে, খায়, গান গায়, তোষামোদে মন ভোলায়। কিন্তু হঠাৎ যদি আমরা বিপদে পড়ি তখন এসব চাটুকারদের দেখা পাওয়া ভার। তারা পরোপকারের পথ থেকে সরে আসবে, ভেঙ্গে দেবে বন্দোবস্ত, ভেঙ্গে দেবে জোট, লঙ্ঘন করবে চুক্তি, খেলাপ করবে কথার, সুখ রাখবে সরিয়ে। আবার সুসময় এলে, বিপর্যয়ের কালো মেঘ সরে গেলে তারা ফিরে আসে। তারা সুখ সন্ধানী, সুযোগ সন্ধানী।
যেখানে যতদিন বসন্ত সেখানেই ততদিন কোকিল শ্রেণীর মানুষের অধিষ্ঠান।
আশা করি তোমরা এই ভাবসম্প্রসারণটি বুঝতে পেরেছো। আমাদের সাথেই থাকো।