প্রিয় শিক্ষার্থীরা কেমন আছো আশা করি ভালো আছো, আজকে তোমাদের জন্য আমরা নিয়ে এসেছি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ভাবসম্প্রসারণ “বই কিনে কেউ কখনও দেউলিয়া হয় না ”। চলো এই ভাবসম্প্রসারণটি পড়ে নেয়।
বই কিনে কেউ কখনও দেউলিয়া হয় না ভাবসম্প্রসারণ
বই সংস্কৃতির অন্যতম শ্রেষ্ঠ নিদর্শন এবং তা জ্ঞান ও আনন্দ লাভের প্রকৃত উৎস। বইয়ের মত এমন অমূল্য সম্পদ সংগ্রহ করতে যে অর্থ ব্যয় হয়, তাতে কারও আর্থিক অসচ্ছলতা দেখা দিতে পারে এমন আশঙ্কার কোনো কারণ নেই। মানব জীবনকে সমৃদ্ধ ও সফল করার জন্য বইয়ের অবদানের কোনো তুলনা হয় না। বরং বইয়ের সাহচর্য লাভ না ঘটলে জীবনের বিকাশ ঘটতে পারে না। বইয়ের এহেন প্রয়োজনের কথা বিবেচনা করে যে কোনো পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা আবশ্যক। বইয়ের জন্য যত বেশি অর্থ ব্যয় করা হবে, জীবনের জন্য তা তত বেশি কল্যাণ বয়ে আনবে। মানুষ বইয়ের সান্নিধ্যে এসে মনের যে প্রসার ঘটায় এবং যে আনন্দ সে লাভ করে তার তুলনায় বইয়ের জন্য ব্যয়িত অর্থ খুবই অকিঞ্চিৎকর। তাছাড়া বইয়ের মূল্য এত বেশি নয় যে ব্যক্তির অর্থনৈতিক অবস্থার উপর তা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। বই কিনে কেউ সর্বস্বান্ত হয়েছে এমন নজির পৃথিবীতে নেই।
বিকল্প ১
মূলভাব : একটি সৃজনশীল বই অপরিসীম জ্ঞানের আধার। এতে যে অল্প অর্থ ব্যয় হয় তা অর্জিত জ্ঞানের তুলনায় খুবই নগণ্য। সৃজনশীল পুস্তক অধ্যয়ন জ্ঞানার্জনের সর্বোৎকৃষ্ট মাধ্যম। তাই প্রকৃত জ্ঞানার্জনে বইয়ের কোন বিকল্প নেই।
সম্প্রসারিত ভাব : জগতের শ্রেষ্ঠ মনীষীদের চিন্তা-চেতনা ও সৃষ্টির অন্যতম আধার হল বই। বই এক যুগের মানুষকে পরবর্তী যুগের মানুষের কাছে নিয়ে যেতে পারে। সুযোগ করে দিতে পারে অতীতের অবিজ্ঞতা আর জ্ঞান-বিজ্ঞানকে জানার। কিন্তু অধিকাংশ সময়ই আমরা এ সত্যটি উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হই। যারা কুরুচিপূর্ণ সিনেমা কিংবা স্টেডিয়ামে খেলা দেখার টিকেট কিনতে অকপটে অর্থ ব্যয় করে, তারাই আবার বই কেনার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত কৃপণতার পরিচয় দেয়। বই কেনার জন্য অর্থ ব্যয়কে তারা বাহুল্য বলে মনে করে। অনেকে আবার বইয়ের অগ্নিমূল্য বা আর্থিক অসচ্ছলতার অজুহাত দাঁড় করিয়ে বসে। কিন্তু এসব শুধু অযৌক্তিকই নয়, অনাকাঙ্ক্ষিতও বটে। প্রকৃতপক্ষে, এ জাতীয় ধারণা কেবল তারাই প্রচার করে যারা বই পড়ার আদৌ আগ্রহী নয় বা জ্ঞানার্জনের পক্ষপাতি নয়। কিন্তু বই পড়ার মাধ্যমে চিত্তের যে পরম সুখ লাভ সম্ভব তা তারা কখনও অনুভব করতে পারে না। আর পারে না বলেই তারা বেশি দামের অজুহাতে বই কিনতে চায় না।
অথচ বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয়েছে এমন নজির খুঁজে পাওয়া কঠিন। কেননা, জ্ঞান পিপাসা মিটানোর উপযোগিতার তুলনায় বইয়ের দাম খুবই তুচ্ছ।
বিকল্প ২
বই এমন এক সঙ্গী যা কখনও ফাঁকি দেয় না। বই নিজে নিরব কিন্তু মানুষের মনকে সরব করতে অর্থাৎ জাগাতে প্রধান ভূমিকা রাখে। মানুষ জীবনে দুই ভাবে জ্ঞানার্জন করে। প্রথমতঃ বই পড়ে, দ্বিতীয়তঃ অভিজ্ঞতা থেকে। বই পড়ে বিশ্বের অনেক কিছু জানা যায়। কিন্তু বই পাঠ করে যে পরিমাণ জ্ঞান আহরণ করা সম্ভব সেই তুলনায় অর্থ নগন্য। জীবনের সব সম্পদ ভাগ বা নষ্ট হয়ে গেলেও জ্ঞান কখনও নষ্ট হয় না। বই যুগের সাথে যুগের বন্ধন তৈরি করে। প্রাচীন কাল থেকে বর্তমানের সাথে সংযোগ স্থাপন করে বই। বই এর মাধ্যমে আমরা মনের আনন্দ পেয়ে থাকি। তবে বই কিনতে অনেকে অনীহা প্রকাশ করে। কারণ এতে অর্থ ব্যয় হয়। কিন্তু তারা এটা ভাবে না যে, বই কিনলে যতটা আর্থিক ক্ষতি হয় তার চেয়ে অনেক গুণ বেশি জ্ঞানার্জন হয়। বই হচ্ছে জানা-অজানা তথ্যের ভান্ডার। বর্তমান যুগ হলো তথ্যের যুগ। তথ্য অর্জন করে সমৃদ্ধ শক্তিশালী হতে হলে বই পড়তে হবে। যে জাতি যতবেশি বই পড়ে জ্ঞানার্জন করে সে জাতি ততবেশি এগিয়ে যায়।
তাই বই পড়ার কোনো বিকল্প নেই। বই এমনি এক অমূল্য সম্পদ যা মানুষের মনকে সাজিয়ে তোলে। বই থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান অমূল্য বলেই বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয় না। বই পৃথিবীর সকল বিষয়ের জ্ঞানের আধার। বই থেকে মানুষ তুলনামূলক কম অর্থ ও শ্রমের বিনিময়ে অধিক পরিমাণ জ্ঞান আহরণের সুযোগ লাভ করে। জগতের বিখ্যাত সকল মনীষীগণ তাদের মতবাদ, তত্ত্ব ও দর্শন বইয়ের মধ্যে ধারণ করে গেছেন। অনেক সহজেই এসব বই পাঠ করে আমরা তাদের কর্ম ও জীবন সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে পারি। শিক্ষা: মানুষ যে অবস্থাতেই থাকুক না কেন বই এর গুরুত্ব অপরিসীম। বই কিনলে মানুষ কখনও নিঃস্ব হয় না বরং মানসিক ও আর্থিক দিক থেকে আরো স্বচ্ছল হয়। সুতরাং বই কিনে পড়ার মাধ্যমেই প্রত্যেক ব্যক্তি স্ব স্ব জায়গায় সফলতা অর্জন করে।
আশা করি তোমরা এই ভাবসম্প্রসারণটি বুঝতে পেরেছো। আমাদের সাথেই থাকো।