আমাদের সবার ইতিহাস জানা দরকার। তার মধ্যে “বাংলায় আবিসিনীয় বা হাবশি শাসন” এই বিষয়টি অবশ্যই জানতে হবে। এটি জানলে আপনার ইতিহাস সম্বন্ধে আরো ধারণা বেড়ে যাবে। আসেন যেনে নেয়।
বাংলায় আবিসিনীয় বা হাবশি শাসন
বাংলাদেশের রাজনৈতিক মঞ্চে আবিসিনীয়দের উত্থান যেমন আকস্মিক, তেমনি তাদের পতনও ছিল আকস্মিক। ১৪৮৭ খ্রিস্টাব্দ ইলিয়াস শাহের বংশধর সুলতান জালালউদ্দিন ফতে শাহ-র মৃত্যুর সুযোগে বাংলার রাজনৈতিক ক্ষমতা আবিসিনীয় হাবশি ক্রীতদাসদের হস্তগত হয়। ১৪৮৭ থেকে ১৪৯৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ছয় বছর বাংলার শাসনক্ষমতা হাবশিদের হস্তগত ছিল। এই ছয় বছরে চারজন হাবশি বাংলার শাসন পরিচালনা করেছিলেন। এই শাসনকালের চরিত্র বিচার করে পণ্ডিতেরা আলোচ্য কালকে বাংলায় অন্ধকার যুগ বা Dark Age বলে বর্ণনা করেছেন।
ফেরিস্তার বিবরণ থেকে জানা যায় যে, ইলিয়াস শাহিবংশীয় শাসক রুকনউদ্দিন বারবক-এর আমলে আবিসিনীয় হাবশি ক্রীতদাসের সংখ্যা দারুণ বৃদ্ধি পেয়েছিল। তাঁর অধীনে হাবশি ক্রীতদাস ছিল প্রায় ৮ হাজার। এদের তিনি সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন পদে নিয়োগ করেন। রাজপ্রাসাদের নিরাপত্তার দায়িত্বও অর্পিত ছিল এই হাবসিদের হাতে। বিদেশি ক্রীতদাসদের ওপর বারবক শাহ-র এত নির্ভরতার কারণ খুব স্পষ্ট নয়। ফেরিস্তার ধারণা, বারবক সম্ভবত পুরাতন অভিজাতদের ক্ষমতা খর্ব করে নতুন এক অভিজাতমণ্ডলী গড়তে চেয়েছিলেন। হাবশি ক্রীতদাসদের আনুগত্যের ওপর তাঁর গভীর আস্থা ছিল। এদের সমর্থনের ওপর দাঁড়িয়ে তিনি নিজের ক্ষমতা সর্বময় করার স্বপ্ন দেখছিলেন। পরবর্তী সুলতান সামউদ্দিন ইউসুফ-এর আমলেও (১৪৭৪-৮১ খ্রিঃ) হাবশি ক্রীতদাসদের ক্ষমতা অব্যাহত ছিল। ইউসুফও হাবশিদের তোষণ করে নিজ-কর্তৃত্ব সুদৃঢ় করতে সচেষ্ট ছিলেন। সামউদ্দিনের মৃত্যুর সময় রাজ্যের অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও বেসামরিক বিভাগে হাবশিদের কর্তৃত্ব কায়েম হয়েছিল। বাংলাদেশের রাজনীতিতে স্থাপিত হয়েছিল আবিসিনীয়দের সর্বময় কর্তৃত্ব। প্রতিটি ক্ষেত্রে শুরু হয়েছিল তাদের সদম্ভ পদচারণা। অথচ এদের কোনো রাজতান্ত্রিক ঐতিহ্য ছিল না। শিক্ষাদীক্ষারও যথেষ্ট অভাব ছিল। রাজনৈতিক ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি এদের সাধারণ বোধবুদ্ধিকেও গ্রাস করেছিল। প্রতি মুহূর্তে এরা স্বপ্ন দেখছিল আরও বেশি ক্ষমতা, আরও বেশি প্রতিপত্তির। অর্থ সম্পদের লালসা এই রুক্ষ হাবশিদের মনের কোমল অনুভূতিগুলিকে সম্পূর্ণ রূপে ধ্বংস করেছিল। তাই দিনে দিনে এদের আচরণের মধ্যে ঔদ্ধত্য ও নিষ্ঠুরতা প্রকাশ পাচ্ছিল নির্লজ্জভাবে। ক্ষমতাগর্বে এইসব ক্রীতদাস উন্মাদের মতো আচরণ করতে থাকে। ড. হবিবুল্লাহ (Dr. Habibullah) এর ভাষায়: “Power made them arrogant and like the Turks in the employment of the later Abbaside Caliphs, they behaved with the citizen with increasing violence.”
উদার ও শিক্ষিত সুলতান জালালউদ্দিনের কাছে আবিসিনীয়দের ঔদ্ধত্য এবং অসভ্য আচরণ সহ্য করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এমতাবস্থায় তিনি ক্রীতদাসদের ক্ষমতা খর্ব করে তাদের নিয়ন্ত্রণে আনার উদ্যোগ নেন। জালালউদ্দিনের এহেন মনোভাব ক্রীতদাসদের ক্রুদ্ধ করে তোলে। তা ছাড়া অন্যান্য সুলতান-বিরোধী কিছু সাধারণ কর্মচারীও ক্রীতদাসদের সাথে হাত মেলায়। প্রাসাদরক্ষী ও পাইকদের (Paiks) অধ্যক্ষ সুলতান শাহজাদা-র নেতৃত্ব আবিসিনীয় গোষ্ঠী এক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। তারা সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। এদিকে জালালউদ্দিনের অনুগত ক্রীতদাস তথা সৈন্যাধ্যক্ষ মালিক আনদিল রাজ্যজয়ের জন্য রাজধানীর বাইরে গেলে সেই সুযোগে সুলতান শাহজাদা জালালউদ্দিন ফত্-কে হত্যা করে (১৪৮৭ খ্রিঃ) ইলিয়াস শাহি শাসনের অবসান ঘটান এবং বাংলাদেশে আবিসিনীয় হাবশিদের শাসনের সূচনা করেন। ব্লকম্যান (Blockman)-এর ভাষায় : “From protectors of the dynasty, the Abyssinians became master to the kingdom.”
বস্তুত, সুলতান বারবক শাহ-র অদূরদর্শী নীতির পরিণতি হচ্ছে ফতেশাহ-র হত্যাকাণ্ড এবং হাবশি শাসনের সূচনা। তিনি অন্ধের মতো সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে আবিসিনীয় ক্রীতদাসদের বসিয়ে তাদের লোভ ও ক্ষমতা বৃদ্ধি করেছেন। আভিজাত্যহীন বা ঐতিহ্যশূন্য কোনো একটি গোষ্ঠীর পক্ষে অতঃপর চূড়ান্ত ক্ষমতা দখল করাটা ছিল খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। আবার পুরাতন অভিজাত সম্প্রদায়ের অস্তিত্বহীনতার ফলে, যার জন্যও বারবক শাহ-র ভ্রান্ত নীতি সম্পূর্ণ দায়ী, বহিরাগত ক্রীতদাস তথা প্রাসাদরক্ষীদের এত বড়ো ঔদ্ধত্য প্রায় প্রতিবাদহীনই থেকে যায়। ড. হবিবুল্লাহ যথাথই লিখেছেন : “This blind policy (of Barbak) had resulted in destroying the old nobility is shown by the utter lack of opposition…”
পাইকদের সমর্থনপুষ্ট হয়ে শাহজাদা বাংলার সিংহাসনে আরোহণ করেছিলেন। এবং তাঁর নতুন নাম হয় বারবক্ শাহ। তাঁর রাজত্বকালের স্থায়িত্ব সম্পর্কে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। ঐতিহাসিক গোলাম হোসেন সেলিম ‘Bluchman’ -এর বক্তব্যের ওপর ভিত্তি করে লিখেছেন : হাবশি বারবক্ সম্ভবত ছয় মাস রাজত্ব করেছিলেন। একদল নিচ-বংশোদ্ভূত কর্মীগোষ্ঠীর সাহায্যে তিনি শাসন শুরু করেন। প্রথমে তিনি সুপরিকল্পিতভাবে বিরোধী মনোভাবাপন্ন কর্মচারীদের ক্ষমতাচ্যুত করেন। বারবকের নাতিদীর্ঘ শাসনকালে কোনো উন্নয়নমূলক কর্মসূচি গৃহীত হয়নি। এবং তাঁর কুশাসনে দেশে অরাজকতা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেতে থাকে। ইতিমধ্যে ইলিয়াস শাহি রাজবংশের প্রতি অনুগত হাবশি সেনাপতি মালিক আনদিল রাজধানীতে প্রত্যাবর্তন করলে বারবক কিছুটা শঙ্কিত হয়ে পড়েন। যাই হোক্, জাতির দোহাই দিয়ে তিনি আনদিলকে এই শপথ করিয়ে নেন যে, বারবক যতদিন সিংহাসনে আসীন থাকবেন, ততদিন আদিল তাঁর কোনো ক্ষতির চেষ্টা করবেন না। কিন্তু প্রভুর প্রতি আনদিলের আনুগত্য ছিল প্রশ্নহীন। তাই তিনি কিছুদিনের মধ্যেই বহু পাইককে নিজ পক্ষে আনতে সক্ষম হন এবং সুযোগ পাওয়ামাত্র বারবককে হত্যা করেন।
আনদিল প্রভুর প্রতি কৃতজ্ঞতাবশত বাংলার সিংহাসনে বসার জন্য সুলতান ফতে শাহ-র নাবালক পুত্রের নাম প্রস্তাব করেন। কিন্তু ফতে শাহ-র বিধবা পত্নী সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে মসনদে বসার জন্য আনদিলকেই অনুরোধ করেন। অধিকাংশ রাজকর্মচারীও এই প্রস্তাব সমর্থন করেন। অতঃপর আনদিল ‘সৈফুদ্দিন ফিরুজ’ নাম নিয়ে বাংলার সিংহাসনে আরোহণ করেন (১৪৭৮-৯০ খ্রিঃ) আবিসিনীয়দের অপদার্থ শাসনব্যবস্থা বাংলার ইতিহাসে যে ‘অন্ধকারাচ্ছন্ন যুগের’ প্রবর্তন করেছিল, তার মধ্যে একমাত্র ফিরুজের শাসনাধীন তিন বছর কিছুটা আশার সঞ্চার করতে পেরেছিল। সেনাপতি হিসেবে তিনি ছিলেন যেমন দক্ষ, তেমনি শাসক হিসেবেও ছিলেন প্রজাদরদী। গোলাম হোসেন সেলিমের বক্তব্য অনুসারে হাবশি ফিরুজ দীনদরিদ্রের প্রতি আন্তরিক ছিলেন এবং তাঁর খাজাঞ্চিখানা দরিদ্রদের সেবায় সদা উন্মুক্ত থাকত। ইলিয়াস শাহি বংশের প্রতি তাঁর কৃতজ্ঞতা ছিল বলে পূর্বতন রাজবংশের সমর্থকগণও ফিরুজের বিরোধিতা করেননি। ফলে অন্যান্যদের তুলনায় কিছুটা জাতীয় উদ্যোগও তিনি নেন। উত্তর ময়মনসিংহের শেরপুর নামক স্থানে প্রাপ্ত ফিরুজের মুদ্রা থেকে অনুমান করা হয় যে, ওই অঞ্চলে তাঁর আধিপত্য বিস্তৃত হয়েছিল। শিল্পস্থাপত্যেও তাঁর অনুরাগ ছিল। গৌড়ে এখনও তাঁর রাজত্বের স্মৃতি ধারণ করে দাঁড়িয়ে আছে ‘ফিরুজ মিনার’। যোগ্যতা থাকলেও ফিরুজের রাজত্ব দীর্ঘস্থায়ী হতে পারেনি মূলত স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রের ফলে। তখন পাইকরাই পরিণত হয়েছিল রাজস্রষ্টা-তে (king makers)। তারা এক চক্রান্ত করে ফিরুজকে হত্যা করলে আবিসিনীয় শাসনের শেষ আলোকরশ্মিটুকু মুছে যায়।
ফিরুজের মৃত্যুর পর সিংহাসনে বসেন মামুদ। তাবাকৎ-ই-আকবরীর মতে, তাঁর রাজত্বকাল স্থায়ী হয়েছিল মাত্র এক বছর (১৪৯০-৯১ খ্রিঃ)। মামুদের পিতৃপরিচয় সম্পর্কে মতভেদ আছে। ‘তাবাকৎ’ গ্রন্থের ওপর নির্ভর করে সেলিম বলেছেন: মামুদ ছিলেন ফিরুজের পুত্র। কিন্তু ফেরিস্তার মতে, মামুদ ছিলেন ইলিয়াস শাহি সুলতান ফত্ শাহ-র পুত্র। যাই হোক, মামুদের কোনো মুদ্রাতে তাঁর পিতৃপরিচয় সম্পর্কে কোনো উল্লেখ পাওয়া যায়নি। ফলে বিষয়টি তর্কাধীন থেকে গেছে।
মামুদের সিংহাসনারোহণের সাথে সাথে আবার বাংলার ভাগ্যাকাশে দুর্দিন ঘনিয়ে আসে। অল্পবয়স্ক হবার জন্য সুলতান হলেও প্রকৃত শাসনক্ষমতা তাঁর হাতে ছিল না। মামুদের প্রতিনিধিস্বরূপ শাসন পরিচালনার দায়িত্ব ছিল হবস্ খান নামক জনৈক ব্যক্তির ওপর। আরিফ কান্দহারীর মতে, হবস্ খান ছিলেন মামুদের গৃহশিক্ষক। যাই হোক্, হবস্ খান কিছুদিনের মধ্যেই অপর এক হাবশি আমির সিদি বদর কর্তৃক ক্ষমতাচ্যুত হন। সিদি বদর ছিলেন উচ্চাকাঙ্ক্ষী ও বিকৃতমস্তিষ্ক। তিনি প্রতিনিধিত্বের পরিবর্তে নিজেই সিংহাসনে বসার পরিকল্পনা করেন এবং ক্ষমতালোভী, অস্থিরমতি পাইকদের হাত করে ১৪৯১ খ্রিস্টাব্দে সিংহাসনে আরোহণ করেন। বর্ধমান জেলার কালনায় প্রাপ্ত মুদ্রা থেকে মনে করা হয় যে, মামুদের স্বল্পকালীন রাজত্বেও উড়িষ্যার দিকে বিজয়-অভিযান অব্যাহত ছিল।
সিদি বদর ১৪৯১ খ্রিস্টাব্দে ‘সামসউদ্দিন মুজফ্ফর’ নাম নিয়ে বাংলার সিংহাসনে বসেন। তাঁর তিন বছরের রাজত্বকাল ছিল অন্ধকারাচ্ছন্ন, আবিসিনীয় শাসনের অন্ধকারময় সময়। হবিবউল্লাহর ভাষায় : “….his rule was a fitting climex to the infamous Abyssinian epoch in Bengal, for his was a perfect reign of terror.” তাঁর রাজত্বের তিন বছর জুড়ে দেশে চলেছিল অবাধ হত্যা ও শোষণ। সিংহাসনকে বিপন্মুক্ত করার মানসে তিনি নির্বিচারে প্রতিভাবান আমির, কর্মচারী ও বিদগ্ধ ব্যক্তিদের হত্যা করেছিলেন। এক্ষেত্রে হিন্দু ও মুসলমান কোনো সম্প্রদায়ের মানুষই রেহাই পায়নি। সাধারণ গরিব প্রজাদের ওপর শুরু হয় অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের জুলুম। এমনকি সেনাবাহিনীর বেতনও তিনি অনেক হ্রাস করেছিলেন। এইভাবে একদিকে দেশের সমস্ত শ্রেণির মানুষকে ক্ষুব্ধ করে তোলেন এবং সেনাবাহিনীকে চটিয়ে নিজের শক্তি নিজেই ক্ষয় করেন। একসময় তাঁর অত্যাচার সহ্যের শেষ সীমায় পৌঁছে যায়। অবশ্য এসব কাজে সুলতানের প্রধান পরামর্শদাতা ছিলেন তাঁর উজির সৈয়দ হুসেন। কিন্তু দেশব্যাপী যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছিল, তা হুসেনের দৃষ্টি এড়ায়নি। তাই তিনি মুজফ্ফরের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ দেশবাসীর নেতৃত্ব করাকেই শ্রেয় মনে করেন। এমতাবস্থায় মুজফ্ফর তাঁর অনুগামীদের নিয়ে এক সুরক্ষিত দুর্গে আত্মগোপন করেন। সৈয়দ হুসেনের নেতৃত্বে বিক্ষোভকারীরা সেই দুর্গ অবরোধ করে। এই অবরোধ ও সংঘর্ষ চলে প্রায় চার মাস ধরে। উভয়পক্ষে মিলিয়ে নিহত হয় প্রায় কুড়ি হাজার মানুষ। শেষ পর্যন্ত এক গুপ্তঘাতকের হাতে মুজফ্ফর নিহত হলে (১৪৯৩ খ্রিঃ) কুখ্যাত আবিসিনীয় শাসনের অবসান ঘটে। অতঃপর সৈয়দ হুসেন ‘আলাউদ্দিন হুসেন শাহ’ উপাধি নিয়ে বাংলার সিংহাসনে বসেন এবং শুরু হয় হুসেন শাহি বংশের গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়।
বাংলাদেশে আবিসিনীয় হাবশি ক্রীতদাসদের ছয় বছরের শাসন ছিল এক দুঃস্বপ্নের মতো। বহিরাগত আবিসিনীয়দের না-ছিল রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, না-ছিল বংশগত কোনো ঐতিহ্য। সামান্য প্রাসাদরক্ষী থেকে সিংহাসনে আরোহণ করলেও রাজ্যের ভারবহনের ক্ষমতা এদের ছিল না। সৈফুদ্দিন ফিরুজ ব্যতীত প্রত্যেক শাসকই ছিলেন হীনমনা, অত্যাচারী ও ক্ষমতালোভী। বাংলাদেশের প্রতি এঁদের কোনো দরদ থাকা ছিল অসম্ভব ব্যাপার। অল্পকালের মধ্যে ঘন ঘন শাসক পরিবর্তন এবং অভ্যন্তরীণ চক্রান্তে রাজতন্ত্রের ভিতটাকেই দুর্বল করে দিয়েছিল। সিদি বদর, যিনি সাধারণভাবে ‘উন্মাদ’ (দিওয়ানা) বলে খ্যাত ছিলেন, তাঁর রাজত্বকালে অরাজকতা ও অত্যাচার চরমে পৌঁছেছিল। রুদ্ধ হয়ে পড়েছিল দেশের অগ্রগতি। তাই ড. হবিবউল্লাহ বলেছেন “The Habsi interregnum had violently arrested her (Bengal’s) social progress and weakened her military prestige……. threatened to destroy monarchy itself so that Bengal became the target of contemporary satire.”
আশা করি আপনারা এই বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। যদি বুঝতে পারেন তাহলে আমাদের অন্যান্য পোস্ট ভিজিট করতে ভুলবেন না।