আমাদের সবার ইতিহাস জানা দরকার। তার মধ্যে “বৈদিক যুগে বৈদিক সাহিত্য” এই বিষয়টি অবশ্যই জানতে হবে। এটি জানলে আপনার ইতিহাস সম্বন্ধে আরো ধারণা বেড়ে যাবে। আসেন যেনে নেয়।
বৈদিক যুগে বৈদিক সাহিত্য
ইন্দো-ইউরোপীয়দের প্রাচীনতম গ্রন্থ হিসেবে বৈদিক সাহিত্য যেমন স্বীকৃত, তেমনি বিশ্ব-সাহিত্যের ইতিহাসেও বৈদিক সাহিত্য বিশিষ্ট স্থান দখল করে আছে। বস্তুত ঋগ্বেদকে ভিত্তি করেই ভারতে ঐতিহাসিক পর্বের সূচনা হয়েছে। বৈদিক যুগের সংস্কৃতি বিষয়ক তথ্যাদি কেবল বৈদিক সাহিত্য থেকেই সংগ্রহ করা যায়। হিন্দুমতে, বেদ অপৌরুষেয় বা ঈশ্বরের বাণী। বৈদিক স্তোত্রগুলি মুনি-ঋষিদের স্মৃতিতে ধরা থাকত। তাই বেদের এক নাম ‘স্মৃতি’। আবার ঋষিরা বেদের বক্তব্য তাঁদের স্মৃতি উজাড় করে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে রেখে যেতেন। বংশ পরস্পরায় শ্রুত হত বলে বেদকে ‘শ্রুতি’ও বলা হয়। বহুকাল পরে মৌখিক শিক্ষার পবিত্রতা সম্পর্কে যখন সংশয় সৃষ্টি হল, তখন স্মৃতি থেকে দীর্ঘ অতীতকে সংকলিত করা শুরু হয়। তবে আদি লিখিত সংকলন হিসেবে কোন পাণ্ডুলিপি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
বেদ চারটি—ঋক্, সাম, যজুঃ এবং অথর্ব। ঋগ্বেদ প্রাচীনতম। বেদ শব্দটি ‘বিদ’ শব্দ থেকে এসেছে, যার অর্থ জ্ঞান বা জানা। প্রতিটি বেদের চারটি অংশ আছে—সংহিতা, ব্রাহ্মণ, আরণ্যক এবং উপনিষদ। বেদের প্রাথমিক অংশ সংহিতা বা মন্ত্র অংশে আছে স্তোত্র, প্রার্থনা, যাদুমন্ত্র ইত্যাদি। এই অংশটি কাব্যছন্দে রচিত। কিছু স্তোত্র কেবল দেবতাদের স্তব করা হয়েছে। আবার কিছু স্তোত্র রচিত হয়েছে স্বর্গ, আয়ু, ধন, পুত্র ইত্যাদি প্রার্থনা করার প্রয়োজনে। এগুলিকে যথাক্রমে ‘স্তুতি’ ও ‘আশীঃ’ নামে পরিচিত। ব্রাহ্মণ অংশ গদ্যাকারে লিখিত। এখানে সংহিতার স্তোত্রগুলির উৎপত্তি ও সমার্থ ব্যাখ্যা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে যজ্ঞানুষ্ঠানের উপযোগিতা আলোচনা করা হয়েছে। আরণ্যক অরণ্যে রচিত এক ধরনের সাহিত্য যার লক্ষ্য আত্মা, জীব, জগৎ, ব্রহ্ম ইত্যাদির রহস্যের সমাধান অন্বেষণ। উপনিষদের উদ্দেশ্যও তাই। এটি মূলত প্রাচীন দার্শনিক তত্ত্ব চিন্তার সংকলন। এগুলি ছাড়া কিছু সহায়ক গ্রন্থকে বৈদিক সাহিত্যের অংশ বলে বিবেচনা করা হয় যেগুলি ‘বেদাঙ্গ’ নামে পরিচিত।
চতুর্বেদের মধ্যে প্রাচীনতম হল ঋগ্বেদ। ঋগ্বেদের রচনাকাল সম্পর্কে কিছু কিছু সংশয় আছে। বিভিন্ন তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে পণ্ডিতেরা ঋগ্বেদের রচনাকাল নির্ধারণের চেষ্টা করেছেন। ম্যাক্সমূলার মনে করেন খ্রিষ্টপূর্ব ১২০০ থেকে ১০০০ অব্দের মধ্যে ঋগ্বেদের সংহিতা অংশ রচনা হয়েছিল। ব্রাহ্মণ, আরণ্যক ও উপনিষদ অংশ রচিত হয়েছিল খ্রিষ্টপূর্ব ১০০০ থেকে ৮০০ অব্দের মধ্যে। পরবর্তী বেদাঙ্গ সাহিত্যের রচনাকাল ৬০০ খ্রিষ্টপূর্বে পরবর্তীকালে স্থির করা হয়েছে। বালগঙ্গাধর তিলক এবং জ্যাকবি গ্রহণপত্র বিচারের ভিত্তিতে ঋগ্বেদের রচনাকাল অনেকটাই পিছিয়ে দিয়েছেন। তিলকের মতে, এর রচনাকাল খ্রিষ্টপূর্ব ৬০০০ অব্দ। জ্যাবি স্থিরকৃত সময় হল ২৫০০ খ্রিষ্টপূর্ব। উইন্টারনিৎস মনে করেন যে, ঋগ্বেদের রচনার ঊর্ধ্বতম সীমা নির্ণয় করা কঠিন। তবে এর রচনা সম্পূর্ণ হওয়ার সময় কালকে ৮০০ খ্রিস্টাব্দের নিচে নামিয়ে আনা যায় না। আধুনিক পণ্ডিতেরা ঋগ্বেদের ভাষার সাথে পারসিক ধর্মগ্রন্থ জেন্দ আবেস্তার সাদৃশ্য বিচার করে কাল নির্ণয়ে প্রয়াসী হয়েছেন। জেন্দ-আবেস্তার রচনাকাল খ্রিষ্টপূর্ব ১০০০ অব্দ। জেন্দ আবেস্তা ও ঋগ্বেদের ভাষাগত মিল আছে। অবশ্য ঋগ্বেদে যে সংস্কৃতির বর্ণনা আছে, তা কিছুটা প্রাচীন। সেক্ষেত্রে ঋগ্বেদের রচনাকাল খ্রিষ্টপূর্ব ১৫০০ অব্দের পেছনে টানা যায় না। এই প্রসঙ্গে বোঘাজকোই লিপির সাক্ষ্যটি গুরুত্বপূর্ণ। এশিয়া মাইনরের বোঘাজকোই নামক স্থানে খ্রিষ্টপূর্ব ১৪০০ অব্দের একটি লেখ আবিষ্কৃত হয়েছে। এটি একটি চুক্তিপত্র। এখানে হিটাইট রাজা এবং মিটানির রাজার মধ্যে সাক্ষরিত কয়েকটি চুক্তির রক্ষক হিসেবে দেবতাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এই নামগুলির সাথে ঋগ্বৈদিক দেবতা, ইন্দ্র, বরুণ ও মিত্রের প্রভূত সাদৃশ্য আছে। একই সময়ে লেখা তেল-এল- আর্মানা’তে প্রাপ্ত কিছু দলিলে সংস্কৃত ভাষার অনুরূপ ভাষার প্রয়োগ ঘটেছে। এগুলির ভিত্তিতে মনে করা যায় যে, ঋগ্বেদের রচনাকাল অবশ্যই ১৫০০ খ্রিষ্টপূর্ব ছিল। এ. এল. ব্যাসাম-এর মতে, পরবর্তী বৈদিক সাহিত্যের ভাষা, ধর্ম ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে যে উন্নতি দেখা যায় তার উভয় পর্বের মধ্যে অন্তত পাঁচশো বছরের ব্যবধান সম্ভব। সেক্ষেত্রে ঋগ্বেদের রচনাকালকে ১৫০০ থেকে ১০০০ অব্দের মধ্যে নির্দিষ্ট করা যেতে পারে।
ঋগ্বেদের সংহিতায় ১০২৮টি সুক্ত বা অধ্যায় সংকলিত আছে। ঋগ্বেদের সংহিতা অংশের প্রধান বিষয়বস্তু হল দেবতাদের উদ্দেশ্যে স্তব ও তাদের কাছে প্রার্থনা। সুক্তগুলিতে তিনটি বিষয়ের প্রাধান্য দেখা যায়। এগুলি হল দেবতাদের রূপের বিবরণ, তাদের আবাহন ও তাদের কাছে প্রার্থনা। ঋগ্বেদে দশটি ‘মণ্ডল’ বা ‘বিভাগ’ আছে। বলা হয় প্রতিটি মণ্ডল এক-একজন ঋষি কর্তৃক শ্ৰুত হয়েছিল। দ্বিতীয় থেকে সপ্তম মণ্ডল হল ঋগ্বেদের সবচেয়ে প্রাচীন অংশ। সবশেষে রচিত হয় দশম মণ্ডল ও প্রথম মণ্ডলের প্রথমাংশ। এই অংশগুলি নিঃসন্দেহে পরবর্তীকালে প্রক্ষিপ্ত। ভাষাতাত্ত্বিক দিক থেকে এটি প্রমাণিত। সম্ভবত এই অংশ সামবেদ রচনার পরবর্তীকালে রচিত। কারণ সামবেদে এই অংশ থেকে কোন উদ্ধৃতি দেওয়া হয়নি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ঋগ্বেদের স্তোত্রগুলির মধ্যে অনেকগুলিই রচনা করেছিলেন লোপামুদ্রা, অপলা, ইন্দ্রানী, ঘোষা প্রমুখ বিদূষী মহিলারা। ঋগ্বেদের ব্রাহ্মণ অংশ দুটির নাম ঐতরেয় ব্রাহ্মণ ও কৌষীতকি ব্রাহ্মণ। আরণ্যক ও উপনিষদ দুটির নামও একই। খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতকে যাস্ক বিষয়বস্তু অনুযায়ী ঋগ্বেদের শ্লোকগুলিকে শ্রেণীবদ্ধ করার চেষ্টা করেন। ‘নিরুক্ত’ শীর্ষক গ্রন্থে তিনি শ্লোকগুলিকে (ঋক্) তিনটি শ্রেণীতে বিভক্ত করেন— প্রত্যক্ষ, পরোক্ষ ও আধ্যাত্মিকী। সরাসরি দেবতাদের গুণগান বিশিষ্ট ঋগুলি প্রত্যক্ষ অংশের অন্তর্গত, তবে দুটি বিভাগ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা তিনিও দেননি। পরবর্তীকালে সায়নাচার্য খ্রিষ্টীয় চতুর্থ শতকে ঋগ্বেদের যে ভাষ্য দেন, তা বর্তমানে অনুসৃত হয়।
সামবেদ মূলত স্তোত্রধর্মী। এই স্তোত্রগুলি পূজা ও যজ্ঞানুষ্ঠানের সময় সুর করে গাওয়া হত। তাই এগুলি সামগান নামেও পরিচিত। এই গানগুলি গীত হত সোম দেবতার উদ্দেশ্যে। তবে এক্ষেত্রে ইন্দ্র, অগ্নি, বরুণ প্রমুখ দেবতারও উল্লেখ পাওয়া যায়। সামবেদের আটটি ব্রাক্ষ্মণ রয়েছে। তার মধ্যে পঞ্চবিংশ ব্রাক্ষ্মণ, জৈমিনীয় ব্রাহ্মণ, ছান্দোগ্য ব্রাক্ষ্মণ ইত্যাদি বিশেষ উল্লেখযোগ্য। এই বেদের আরণ্যক অংশ নেই। উপনিষদের মধ্যে ছান্দোগ্য উপনিষদ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। যজুর্বেদ সংহিতা আবার দুটি ভাগে বিভক্ত। এই ভাগ দুটির নাম শুক্ল যজুর্বেদ ও কৃষ্ণ যজুর্বেদ। শুক্ল যজুর্বেদে রয়েছে যজ্ঞানুষ্ঠানের সময়ে পুরোহিতদের উচ্চারিত মন্ত্রাদি। কৃষ্ণ যজুর্বেদে সুত্রগুলির সাথে সাথে অনুষ্ঠানের বর্ণনা ও ব্যাখ্যা দেওয়া আছে। ব্রাহ্মণগুলির মধ্যে শুক্ল যজুর্বেদের শতপথ ব্রাহ্মণ ও কৃষ যজুর্বেদের তৈত্তিরীয় ব্রাহ্মণ সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য। এই বেদের সাথে ঈশ, বৃহদারণ্যক, তৈত্তিরীয়, শ্বেতাশ্বতর ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ উপনিষদ সংযুক্ত আছে। অথর্ববেদ হল বেদের সর্বশেষ ভাগ। এতে প্রকৃতির সৃষ্টিরহস্য, শত্রু ধ্বংসকারী অনুষ্ঠান, অসুখ-বিসুখ ও বন্যজন্তুদের হাত থেকে রক্ষা পাবার জন্য কিছু রহস্যজনক বিদ্যার সংকলন আছে। অর্থাৎ ধর্মতত্ত্ব থেকে শুরু করে চিকিৎসা, যাদুবিদ্যা সবই এতে স্থান পেয়েছে। অথর্ববেদের ব্রাহ্মণটির নাম গোপথ ব্রাক্ষ্মণ। উপনিষদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কাঠ, মণ্ডক, মাণ্ডকা ইত্যাদি।
বেদের আরণ্যক ও উপনিষদ অংশ সম্ভবত অনেক পরে রচিত হয়েছে। এতে যাগ-যজ্ঞের বা পুজার্চ্চার বিষয় গুরুত্ব পায়নি। এ দুটিকে বেদের দার্শনিক ভাবনার মাধ্যম বলে বিবেচনা করা হয়। বৃদ্ধবয়সে যাঁরা সংসার ত্যাগ করে বাণপ্রস্থে যেতেন অর্থাৎ বনে বাস করতেন, তাঁদের উদ্দেশ্যেই আরণ্যক রচিত। বলা যেতে পারে, বনবাসের উপযোগী ধ্যান ও উপাসনা পদ্ধতিই আরণ্যকের আলোচ্য বিষয়। তাই আরণ্যকের আলোচনায় গভীর দার্শনিক তত্ত্বের সন্ধান পাওয়া যায়। এই অংশে ভক্তিধর্ম ও জন্মান্তরবাদের বিকাশ ঘটেছিল। বেদের শেষভাগ হল উপনিষদ। সেই কারণে উপনিষদকে বেদান্তও বলা হয়। উপনিষদে আত্মা বিষয়ে বহু তত্ত্ব ও তথ্য লিখিত আছে। এখানে যাগযজ্ঞের পরিবর্তে মানুষের মুক্তির পথ নির্দেশ করা হয়েছে। কর্মফলহেতুই মানুষ সুখদুঃখ লাভ করে, আত্মা অবিনশ্বর, কর্মফলহেতুই জীব পুনর্জন্ম লাভ করে প্রভৃতি কথা উপনিষদে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে কর্মফলের হাত থেকে মুক্তিলাভের সন্ধান দেওয়া হয়েছে। উপনিষদে হিন্দু-দর্শনশাস্ত্রের বেশ উন্নত রূপ পরিলক্ষিত হয়।
বৈদিক সাহিত্যের আর একটি উল্লেখযোগ্য ভাগ হল বেদাঙ্গ। বেদাঙ্গকে সূত্র-সাহিত্যও বলা হয়। বেদাঙ্গ ছয় ভাগে বিভক্ত, যথা- (১) শিক্ষা, যাতে বিশুদ্ধ উচ্চারণের মাধ্যমে বেদপাঠের নিয়মাবলী লিপিবদ্ধ আছে। এটি খুবই প্রয়োজনীয় অংশ। কারণ বেদপাঠের সময় অশুদ্ধ উচ্চারণকে ‘মহাপাপ’ বলে মনে করা হয়। (২) ছন্দ, যাতে বেদের ছন্দগুলির পদবিন্যাস সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। (৩) ব্যাকরণ, যাতে ভাষার বিশুদ্ধ ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। (৪) নিরুক্ত, যাতে বেদে ব্যবহৃত শব্দগুলির উৎপত্তি ও বিচার-বিশ্লেষণ করা হয়েছে। (৫) জ্যোতিষ, যাতে গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থান ও প্রভাব সম্পর্কিত আলোচনা আছে। (৬) কল্প, যাতে সামাজিক নিয়মকানুন সম্পর্কে আলোচনা আছে। বেদের এই ষষ্ঠভাগ অর্থাৎ কল্প সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। শ্রৌত-সূত্র, শুল্ক-সূত্র, গৃহ্য সূত্র ও ধর্ম-সূত্র এই চারটি অংশ নিয়েই কল্পসূত্র রচিত। শ্রৌত-সূত্র থেকে যাগযজ্ঞের নিয়মাবলী জানা যায়। শুষ্ক-সূত্রে যজ্ঞবেদী বা হোমাগ্নির ক্ষেত্র প্রভৃতির আকারগত বিবরণ লিপিবদ্ধ আছে। গৃহ্য-সূত্রে আছে গৃহীর জীবনযাপনের নিয়মবিধি ও দশকর্মবিধি। জন্মগ্রহণ, নামকরণ, শিক্ষাদীক্ষা প্রভৃতি প্রতিটি বিষয়ে অনুষ্ঠানের নির্দেশ গৃহ্য-সূত্রে আছে। এর গুরুত্ব প্রসঙ্গে পাণিক্কর বলেছেন, “It is this body of domestic ritual which makes a Hindu.” ধর্ম-সূত্রে আছে সমাজ ও রাষ্ট্র সম্পর্কে অনুশাসন। সামাজিক সম্পর্ক, সমাজ ও রাষ্ট্রের সম্পর্ক, দেওয়ানি ও ফৌজদারি আইনবিধি এবং বিষয় সম্পর্কিত আইন প্রভৃতি এতে আলোচিত হয়েছে।
বৈদিক যুগের দর্শন সাহিত্য ছয়টি শাখায় বিভক্ত, যথা — সাংখ্য, যোগ, ন্যায়, বৈশেষিক, পূর্ব মীমাংসা ও উত্তর মীমাংসা। ছয়জন বিশিষ্ট ঋষি এই ষড়দর্শনের রচয়িতা বলে, কথিত আছে। এঁরা হলেন যথাক্রমে কপিলমুনি, পতঞ্জলি, গৌতম, কণাদ, জৈমিনী ও বেদব্যাস। বেদাঙ্গ ও ষড়দর্শন একত্রে সূত্র সাহিত্য নামে পরিচিত। এই দর্শনগুলির রচনাকাল সম্পর্কে সঠিক পাওয়া যায় না। ৬০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ থেকে ৪০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে এগুলি রচিত হয়েছিল বলে পণ্ডিতদের অনুমান।
আশা করি আপনারা এই বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। যদি বুঝতে পারেন তাহলে আমাদের অন্যান্য পোস্ট ভিজিট করতে ভুলবেন না।