যে জন দিবসে মনের হরষে জ্বালায় মোমের বাতি, আশু গৃহে তার দখিবে না আর নিশীথে প্রদীপ ভাতি – ভাবসম্প্রসারণ

প্রিয় শিক্ষার্থীরা কেমন আছো আশা করি ভালো আছো, আজকে তোমাদের জন্য আমরা নিয়ে এসেছি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ভাবসম্প্রসারণ “যে জন দিবসে মনের হরষে জ্বালায় মোমের বাতি, আশু গৃহে তার দখিবে না আর নিশীথে প্রদীপ ভাতি ”। চলো এই ভাবসম্প্রসারণটি পড়ে নেয়।

যে জন দিবসে মনের হরষে জ্বালায় মোমের বাতি, আশু গৃহে তার দখিবে না আর নিশীথে প্রদীপ ভাতি - ভাবসম্প্রসারণ

যে জন দিবসে মনের হরষে জ্বালায় মোমের বাতি, আশু গৃহে তার দখিবে না আর নিশীথে প্রদীপ ভাতি ভাবসম্প্রসারণ

মূলভাব : অপচয়কারীরা জীবনে কষ্টভোগ করে থাকে।

সম্প্রসারিত ভাব : অপচয়কারীরা প্রয়োজনের সময় তাদের ধন-সম্পদ কাজে লাগাতে পারে না, পরিণামে তারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। জীবনে মিতব্যয়ী হলে পরিণাম শুভ হয়ে থাকে। আর অমিতব্যয়ীরা নানাভাবে দুঃখকষ্ট ভোগ করে থাকে। অমিতব্যয়ীর পরিণতি বেদনাদায়ক। মানব জীবনে, অমিতব্যয়িতার পরিণতি সম্পর্কে প্রদীপের উদাহরণ আনা যেতে পারে। যে লোক দিনের বেলায় মনের আনন্দে অনর্থক বাতি জ্বালিয়ে রাখে, সে তার প্রয়োজনীয় তো শেষ হলে দেখা যায়, পরে যখন রাতের বেলায় সত্যিকার বাতির প্রয়োজন তখন তেল থাকে না বলে বাতি জ্বালানো সম্ভব হয় না। তার আধার রাতে বাতির আলো দেখা যাবে না। ফলে তাকে দুর্ভোগ পোহাতে হবে। অমিতব্যয়িতার জন্য আঁধার ঘরে আলো আসে নি। মানব জীবনও ঠিক তেমনি। যদি কেউ অমিতব্যয়িতার জন্য তার ধনসম্পদ বিনষ্ট করে ফেলে, তাহলে যখন তার অর্থের প্রয়োজন পরবে তখন আর ব্যয় করার মত অর্থ থাকবে না। তাকে বেহিসেবীপনার জন্য দুঃখের সম্মুখীন হতে হবে। তাই জীবনে মিতব্যয়ী হওয়া উচিত।

মন্তব্য : পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, “অপব্যয়কারী শয়তানের ভাই।” কাজেই মিতব্যয়ী হয়ে পরিমিত উপায়ে অর্থ ব্যয় করলে জীব সুন্দর হবে, হবে সুখকর।

বিকল্প ১

মূলভাব : অমিতব্যয়ী লোকমাত্রই দুঃখ-কষ্টের শিকার হয়। হাসি-আনন্দের দিনে দুঃসময়ের জন্য সঞ্চয় করাই হচ্ছে বুদ্ধিমানের কাজ। 

সম্প্রসারিত ভাব : দিনের বেলায় সূর্যের আলোতে পৃথিবী আলোকিত হয়। এ সময়ে ঘরে আলো জ্বালানো নিষ্প্রয়োজন। সখ করে অনেকেই দিনের বেলায় প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখে, এটা নিতান্তই বিলাসিতা। নিঃসন্দেহে সে একজন অমিতব্যয়ী। তাকে প্রশ্রয় না দিয়ে সাবধান করে দেয়া উচিত। কেননা, এসব অপরিণামদর্শী লোক দারিদ্র্যের অভিশাপে জর্জরিত হয়। পরবর্তীতে তাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। একইভাবে বলা যায়, কোনো ব্যক্তি যদি সুসময়ে অর্থের অপচয় করে, তাকে পস্তাতে হয়। জীবনে যখন তার দুর্গতি নেমে আসবে তখন হয়তো সে তার কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা করবে কিন্তু এতে তার কোনো লাভ হবে না। তাই অর্জিত ধন-সম্পত্তি অপব্যয় না করে একে সৎকাজে ব্যয় করা উচিত। জীবনের লক্ষমাত্রা অর্জনের জন্য মিতব্যয়ীতার গুরুত্ব অধিক। 

জীবনকে সুন্দর ও আনন্দময় করে গড়ে তুলতে হলে মিতব্যয়ী হওয়া প্রয়োজন। অপব্যয় মানুষের উজ্জ্বল জীবনকে ধ্বংস করে অন্ধকারের দিকে ধাবিত করে। তাই অপব্যয় সম্পূর্ণভাবে বর্জন করায় শ্রেয়।

বিকল্প ২

মূলভাব: যারা সুসময়ে বিনা প্রয়োজনে সম্পদের অব্যবহার করে , অতি প্রয়োজনেও খরচ করার মতো মামর্থ্য তাদের থাকে না। 

সম্প্রসারিত ভাব: দিনের বেলায় সূর্যালোকে সমস্ত বিশ্ব আলেকিত হয়ে থাকে। কাজেই তখন প্রদীপ জ্বালানোর কোনো প্রয়োজন হয় না। দিনের বেলা প্রদীপ জ্বালানো অপচয় ছাড়া কিছু নয়। কেউ যদি মনের খেয়ালে দিনের বেলায় মোমবাতি জ্বালানোর মতো অর্থের অপব্যয় করে, তাহলে সে অতি শিগগিরই অভাবগ্রস্ত হয়ে পড়বে। এমনকি রাতের অন্ধকারেও প্রয়োজনে প্রদীপ জ্বালনোর ক্ষমতা তা থাকবে না। তদ্রুপ, কোনো ব্যক্তি যদি কোনো সুসময়ে বিনা প্রয়োজনে অর্থের অপব্যবহার করে তার সঞ্চিত অর্থ শেষ করে ফেলে তাহলে তা অমিতব্যয়িতার কারণে সে অচিরেই দারিদ্র হয়ে পড়বে- অতি প্রয়োজনেও অর্থ ব্যয় করার ক্ষমতা তার আর থাকবে না। কেননা সম্পদ ও প্রাচুর্যের প্রয়োজনাতিরিক্ত ব্যবহার তথা অপচয় মানুষকে দ্রুত ঠেলে দেয় দৈন্য ও দুর্দশার দিকে। তার জীবনে ছেয়ে যাবে অমানিশার গাঢ় অন্ধকারে। 

মন্তব্য: পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, “ অপব্যয়কারী শয়তানের ভাই।” সুতরাং প্রত্যেক ব্যক্তির মিতব্যয়ী হওয়া উচিত।

আশা করি তোমরা এই ভাবসম্প্রসারণটি বুঝতে পেরেছো। আমাদের সাথেই থাকো।

Leave a Comment