অনেক প্রবাসী ভাইয়েরা সৌদি আরবে গিয়ে নানান রকম আফসোস করে তাদের ভিসা নিয়ে, কেন যে তারা এই ভিসা বা ওই ভিসা নিয়ে আসলো? নানান রকম আফসোস হয় তাদের, তারা যদি আগে থেকে জানতো যে কোন ভিসায় বেশি ইনকাম করা যায় তাহলে তারা সেই ভিসায় নিয়ে আসতো। না জানার ফলে তারা এরকম বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন হয়। তারা যদি আগে থেকে জানতো সৌদি আরব এর কোন ভিসা ভালো তাহলে তারা এই আপসোস করতো না।
আপনিও যদি সৌদি আরবে যেতে চান এবং ভালো পরিমাণ ইনকাম করতে চান তাহলে আপনাকে আগে থেকে জেনে নিতে হবে কোন ভিসায় বেশি টাকা ইনকাম করা যায় বা ভালো কাজ পাওয়া যায়। আমি এই ভিসা রিলেটেড বিভিন্ন রকম আর্টিকেল ও ভিডিও দেখে তারপরে এই আর্টিকেল লিখছি আশা করি আপনাদের ভালো ভিসার সন্ধান দিতে পারব। আপনি যদি আমার এই আর্টিকেল পুরোটুকু পড়েন তাহলে আপনি ভালোভাবে বুঝতে পারবেন যে কোন ভিসা ভালো ইনকাম করার জন্য। তো চলুন পুরো আর্টিকেলটি পড়ে নেয়া যাক।
সৌদি আরব এর কোন ভিসা ভালো?
সৌদি আরবে কাজ করার জন্য সবচাইতে ভালো ভিসা হলো আমেল আইদি ভিসা বা ফ্রি ভিসা। যদি আপনি এই এই ভিসায় সৌদি আরব এ আসেন তাহলে আপনি যেকোন কাজ করেই অনেক ভাল পরিমাণ রিয়াল বা টাকা ইনকাম করতে পারবেন। তাছাড়া এর পাশাপাশি রয়েছে কোম্পানি ভিসা, যে বিষয়ে আরো অনেক ভালো পরিমাণ ইনকাম করা যায়। তাছাড়া ভিসার চেয়ে আপনার দক্ষতার উপর টাকা ইনকাম নির্ভর করে বেশি। আপনি যদি ভালো দক্ষতাশীল লোক হয়ে থাকেন তাহলে আপনার টাকার অভাব হবে না। আর যদি আপনি ভালো ভিসা নিয়ে আসেন এবং অদক্ষ হন তাহলে আপনার কাজ এর বিনিময়ে টাকা কম আসতে পারে।
তবে আমি আপনাকে আমার মতামত থেকে বলতে পারি যে, আপনি যদি পারেন তাহলে আমেল আইদি বা ফ্রি ভিসায় সৌদি আরবে যান।
সৌদি আরব ভিসা কত প্রকার ও কি কি?
আপনি সৌদি আরবে বিভিন্ন ভিসায় যেতে পারেন। সৌদি আরবে যাওয়ার জন্য রয়েছে নানান রকমের ভিসা। যেগুলোর এক একটি এক এক রকম সুবিধা রয়েছে। নিচে ভিসাগুলোর তালিকা দেওয়া হলো এবং তার নিচে একেকটি ভিসার সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।
- সৌদি আমেল আইদি ভিসা
- সৌদি আরব মাজরার ভিসা
- সৌদি আরব সুপার মার্কেট ভিসা
- সৌদি আরব ক্লিনার ভিসা
- সৌদি আমেল মঞ্জিল ভিসা
- সৌদি চাওয়াক খাছ ভিসা
সৌদি আমেল আইদি ভিসা:
সৌদি আরবে যাওয়ার জন্য সবচেয়ে ভালো ভিসা হলো আমিল আইদি ভিসা বা ফ্রি ভিসা। ফ্রি ভিসায় যেতে হলে আপনাকে সর্বোচ্চ চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা খরচ করতে হবে। এবং একজন কফিলের আন্ডারে আপনাকে সৌদি আরবে যেতে হবে এবং সেই কফিলকে নির্দিষ্ট পরিমাণ একটি রিয়াল দিতে এবং সেই কফিলের অনুমতি নিয়ে আপনি যে কোন রকম কাজ করতে পারবেন।
এর ফলে আপনি ভালো পরিমাণ একটি টাকা ইনকাম করতে পারবেন। এই ভিসায় সবচেয়ে ভালো সুবিধা হলো আপনার ইচ্ছামত আপনি যে কোন রকম কাজ করতে পারছেন।
সৌদি আরব মাজরার ভিসা:
এখন যে ভিসা নিয়ে কথা বলব সেই ভিসা হল সৌদি আরব মাজরার ভিসা। এই ভিসায় যেতে হলে আপনাকে তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা খরচ করতে হবে। এই ভিসায় যাওয়া লোকজনদেরকে ফলের বাগানে কাজ দেওয়া হয়। এই ভিসায় যারা যান তারা যদি কিছু নাও পারে কোন দক্ষতা নাও থাকে তাও সে ভালো পরিমাণ টাকা ইনকাম করতে পারবে। এই ভিসায় যাওয়া একজন ব্যক্তির মাসিক এক থেকে দেড় হাজার রিয়াল (১-১.৫ হাজার রিয়াল) ইনকাম হয়।
সৌদি আরব সুপার মার্কেট ভিসা:
আরেকটি সবচেয়ে ভালো বিষয় হল সুপারমার্কেট ভিসা। এই ভিসায় আপনি একটি ভাল পরিমান টাকা ইনকাম করতে পারবেন এবং পাশাপাশি ওভারটাইম কাজ করেও অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন। এই বিষয়ে যেতে হলে আপনাকে মিনিমাম ২১ বছর হতে হবে এবং সর্বোচ্চ ৩৮ বছর পর্যন্ত হতে হবে। এই ভিসায় কাজ করা লোকজনদের কাছ থেকে জানা গেছে যে, তারা অনেক সুখে শান্তিতে কাজগুলো করতে পারে এবং এই কাজে কষ্ট কম থাকে।
এই বিষয়ে যারা কাজ করে তারা মাসিক ৯০০ থেকে ১৪০০ রিয়াল পর্যন্ত ইনকাম করতে পারে।
সৌদি আরব ক্লিনার ভিসা:
এরপর যে বিষয়টি রয়েছে সেই বিষয়টি হলো ক্লিনার ভিসা। আমার ব্যক্তিগতভাবে ক্লিনার ভিসা পছন্দ হয় না কারণ এই কাজটি অত্যন্ত পরিমাণ কষ্টের। তবে এই ভিসায় ভালো পরিমাণ ইনকাম করা যায় মাসিক ১ হাজার রিয়াল ইনকাম করা যায় এবং এর অধিকো ইনকাম করা যায়। এই ভিসা পেতে হলে আপনাকে ৪ থেকে ৪.৫ লাখ টাকা খরচ করতে হবে। এই বিষয়ে সবচেয়ে বড় একটি সুবিধা হল আপনি কোন দক্ষতা ছাড়াই ভালো পরিমান ইনকাম করতে পারবেন।
Also Read: বাবার টাকা না থাকলে উক্তি স্ট্যাটাস ক্যাপশন এসএমএস
সৌদি আমেল মঞ্জিল ভিসা:
এই ভিসায় আপনি যদি যান তাহলে আপনাকে বাসা বাড়ির কাজ দেওয়া হবে। আপনি যে মালিকের অধীনে যাবেন সেই মালিকের বাসায় দারোয়ান বা বাসা ক্লিনার বা কুক হিসেবে যেতে পারবেন। এই ভিসায় যেতে হলে আপনাকে তিন থেকে চার লাখ টাকা খরচ করতে হবে। এবং প্রতি বছর রিনিউ করতে হলে ১ লক্ষ থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা খরচ হবে। আপনি মালিকের অনুমতি ব্যতীত অন্য কোন কাজ করতে পারবেন না। তবে এই কাজে যথেষ্ট পরিমাণ শান্তি রয়েছে এই কাজে কষ্ট অনেক কম।
সৌদি চাওয়াক খাছ ভিসা:
সৌদি চাওয়াক খাছ ভিসা ভিসায় গেলে আপনাকে মালিকের ড্রাইভার হিসেবে কাজ করতে হবে। আপনি মাসিক এক থেকে দেড় হাজার রিয়াল ইনকাম করতে পারবেন। এই ভিসায় যেতে হলে আপনাকে অনেক কম টাকা খরচ করতে হবে ধরে নিতে পারেন ৩ থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা। তবে এই ভিসায় একটি অসুবিধা হলো মালিকের অনুমতি ব্যতীত অন্য কোন কাজ করা যায় না।
সৌদি আরবের কোন কাজের বেতন সবচেয়ে বেশি?
সৌদি আরবে যাওয়া একজন প্রবাসীর সবচেয়ে বেশি ইনকাম হয় যেসব কাজ করে তাদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো কাজ হল ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ। পাশ পাশাপাশি রয়েছে অটোমোবাইল,টেকনিশিয়ান ও ওয়েল্ডিং এর কাজ।
তবে সর্বোপরি এসব কাজের পাশাপাশি আপনার কাজের দক্ষতার উপর আপনার ইনকাম নির্ভর করবে। আপনি যদি ভাল কাজ পারেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই বেশি টাকা দেওয়া হবে। আপনি যদি কম কাজ পারেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই কম টাকা দেওয়া হবে। তাই সৌদি আরব যাওয়ার আগে আপনাকে ভালোভাবে দক্ষ হয়ে যেতে হবে।
FAQ:
সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসা বেতন কত?
সৌদি আরবের কোম্পানি ভিসায় প্রতি মাসে ১ হাজার থেকে ১.৫ হাজার রিয়াল পর্যন্ত ইনকাম করা যায়। পাশাপাশি কোম্পানি থেকেই থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয় এর ফলে আপনি আপনার অর্জিত টাকা জমাতে পারবেন।
সৌদি আরবে কোন কাজের বেতন বেশি?
সৌদি আরবে ইলেকট্রিশিয়ানের কাজের বেতন সবচেয়ে বেশি। তবে এই কাজে অনেক ঝুঁকিও রয়েছে।
সৌদি আরব ক্লিনার ভিসা বেতন কত?
সৌদি আরবে ক্লিনার ভিসার বেতন হলো এর থেকে দেড় হাজার রিয়াল।
উপসংহার: আশা করি আপনারা জানতে পেরেছেন সৌদি আরব এর কোন ভিসা ভালো? আপনাদের যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের ফেসবুক পেজে মেসেজ করতে পারেন আমরা আপনাকে যথাসময় রিপ্লাই দিব।