সরকারি ও ব্যক্তিগত অর্থব্যবস্থার মধ্যে পার্থক্য কি?

আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা, কেমন আছেন আপনারা? আশা করি ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আপনারা নিশ্চয় সরকারি ও ব্যক্তিগত অর্থব্যবস্থার মধ্যে পার্থক্য খোজার চেষ্টা করছেন। তাহলে আপনার একদম সঠিক জায়গায় এসেছেন। এখানে আপনারা পেয়ে যাবেন সঠিক সরকারি ও ব্যক্তিগত অর্থব্যবস্থার মধ্যে পার্থক্য। তো চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।

সরকারি ও ব্যক্তিগত অর্থব্যবস্থার মধ্যে পার্থক্য কি

সরকারি ও ব্যক্তিগত অর্থব্যবস্থার মধ্যে পার্থক্য কি?

ব্যক্তিগত অর্থব্যবস্থাসরকারি অর্থব্যবস্থা
ব্যক্তি আয় বুঝে ব্যয় করে। ব্যক্তির আয় কম হলে ব্যয় কম করে আবার আয় বেশি হলে ব্যয়ও বেশি করে। অর্থাৎ ব্যক্তির আয় ও ব্যয়ের মধ্যে একটি প্রত্যক্ষ সম্পর্ক বর্তমান। অপরদিকে সরকার ব্যয় অনুযায়ী আয় করে। সরকার তার ব্যয়ের খাত এবং ব্যয়ের পরিমাণ নির্ধারণ করে তারপর প্রয়োজনীয় রাজস্ব সংগ্রহ করে।
ব্যক্তিগত বাজেট সাধারণত উদ্বৃত্ত হয়ে থাকে। কারণ ব্যক্তির জন্য উদ্বৃত্ত বাজেট কল্যাণকর, ঘাটতি বাজেট নয়।অপরদিকে সরকার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঘাটতি বাজেট করে থাকে। যদিও সরকারের জন্য উদ্বৃত্ত বাজেট ভাল। কিন্তু তা যদি জনগণের সেবামূলক ও উন্নয়নমূলক কাজ পরিত্যাগ করে করা হয় তবে তা সমর্থনযোগ্য নয়।
ব্যক্তির ঋণের উৎস সীমাবদ্ধ। ব্যক্তি অপ্রাতিষ্ঠানিক উৎস যেমন- আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব, মহাজন প্রভৃতি উৎস হতে ঋণ গ্রহণ করে থাকে। বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকেও ব্যক্তি ঋণ গ্রহণ করে থাকে।অপরদিকে সরকারের ঋণের উৎস ব্যপক। সরকার দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংক, কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎস হতে ঋণ গ্রহণ করতে পারে।
ব্যক্তির আয় নির্দিষ্ট থাকে। যেমন- চাকুরীর বেতন-ভাতা, ব্যবসায়ের নিয়মিত মুনাফা ইত্যাদি।অপরদিকে সরকারের আয় প্রয়োজন অনুযায়ী বাড়ানো কমানো যায়।
ব্যক্তি কখনো নোট ছাপাতে পারে না। অপরদিকে সরকার নোট ছাপানোর মাধ্যমে আয় অর্জন করতে পারে।
ব্যক্তির আয়-ব্যয়ের হিসাব গোপনীয় থাকে। হিসাব দেখাতেও ব্যক্তি বাধ্য নয়। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে
সরকার বাধ্য করতে পারে।
অপরদিকে সরকার তার আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রকাশ করে। বিভিন্ন মাধ্যম যেমন- রেডিও, টিভি,
পত্রিকা, ওয়েবসাইট, ইত্যাদির মাধ্যমে সরকার তার আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রকাশ করে থাকে।
ব্যক্তির আয়-ব্যয়ের লক্ষ্য মুনাফা অর্জন বা আয় বৃদ্ধি করা। ব্যক্তি তার পরিবারের সদস্য বা আত্মীয়-স্বজনের কল্যাণের চিন্তা করে ব্যয় করে। ব্যক্তি সাধারণত সাপ্তাহিক বা মাসিক ভিত্তিতে আয় ব্যয়ের সমন্বয় করে থাকে।অপরদিকে সরকার সামাজিক কল্যান তথা সকল নাগরিকের কল্যানের জন্য ব্যয় করে।সরকার সাধারণত এক বৎসর বা পাঁচ বৎসর সময় মেয়াদের জন্য আয়-ব্যয়ের সমন্বয় করে থাকে। সুতরাং বলা যায় বিভিন্ন দিক থেকে ব্যক্তিগত ও সরকারি অর্থব্যবস্থার মধ্যে পার্থক্য বিদ্যমান।

সরকারী অর্থব্যবস্থা (Public Finance)

আমরা বলতে পারি যে, অর্থ শাস্ত্রের যে শাখায় সরকারী আয়-ব্যয়, আর্থিক ও ঋণ সংক্রান্ত নীতি ও পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা হয় তাকে সরকারী অর্থব্যবস্থা (Public Finance) বলে। অর্থাৎ একটি দেশের সরকার কি কি ক্ষেত্র হতে কিভাবে আয় করবে, কোন্
কোন্ ক্ষেত্রে কি পদ্ধতি ব্যয় করবে, কোন্ কোন্ ক্ষেত্রে ঋণ সুবিধা দেয়া যেতে পারে এবং তার নীতি নির্ধারণ প্রভৃতি কাজই সরকারী অর্থব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত। প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ডাস্টন বলেন, “সরকারী অর্থব্যবস্থা সরকারের আয়-ব্যয় এবং একটির সঙ্গে অন্যটির সমন্বয় সম্বন্ধে আলোচনা করে।”

ব্যক্তিগত অর্থব্যবস্থা (Private Finance)

ব্যক্তির আয়-ব্যয়ের পর্যালোচনা তথা আয়-ব্যয় সংক্রান্ত আলোচনা হলো ব্যক্তিগত অর্থব্যবস্থা। ব্যক্তি আয় বুঝে ব্যয় করে। ব্যক্তির আয় কম হলে ব্যয় কম করে আবার আয় বেশি হলে ব্যয়ও বেশি করে। ব্যক্তির আয় নির্দিষ্ট থাকে। যেমন- চাকুরীর বেতন-ভাতা, ব্যবসায়ের নিয়মিত মুনাফা ইত্যাদি। ব্যক্তিগত বাজেট সাধারণত উদ্বৃত্ত হয়ে থাকে। কারণ ব্যক্তির জন্য উদ্বৃত্ত বাজেট কল্যাণকর, ঘাটতি বাজেট নয়।ব্যক্তি অপ্রাতিষ্ঠানিক উৎস যেমন- আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব, মহাজন প্রভৃতি উৎস হতে ঋণ গ্রহণ করে থাকে। বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকেও ব্যক্তি ঋণ গ্রহণ করে থাকে। ব্যক্তির আয়-ব্যয়ের হিসাব গোপনীয় থাকে। হিসাব দেখাতেও ব্যক্তি বাধ্য নয়। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে সরকার বাধ্য করতে পারে। অথাৎ বলা যায় যে, সরকারি অর্থব্যবস্থার অপর পিঠ হলো ব্যক্তিগত অর্থব্যবস্থা।

আজকে আমরা দেখলাম কিছু পার্থক্য সরকারি ও ব্যক্তিগত অর্থব্যবস্থার মধ্যে। এইসব পার্থক্য আপনারা যেকোনো জায়গায় ব্যবহার করতে পারবেন। এই সব সরকারি ও ব্যক্তিগত অর্থব্যবস্থার মধ্যে পার্থক্য, বই থেকে সংগ্রহ করা। আশা করি এই পোস্টটি থেকে অনেক উপকারিত হয়েছেন। অনুগ্রহ করে আমাদের পোস্টগুলো আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আসসালামু আলাইকুম:)

Leave a Comment