কঠিন এবং তরল পদার্থের মধ্যে পার্থক্য: আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা, কেমন আছেন আপনারা? আশা করি ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আপনারা নিশ্চয় কঠিন এবং তরল পদার্থের মধ্যে পার্থক্য খোজার চেষ্টা করছেন। তাহলে আপনার একদম সঠিক জায়গায় এসেছেন। এখানে আপনারা পেয়ে যাবেন সঠিক কঠিন এবং তরল পদার্থের মধ্যে পার্থক্য। তো চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।
কঠিন এবং তরল পদার্থের মধ্যে পার্থক্য কি?
কঠিন | তরল |
---|---|
কঠিন পদার্থের নির্দিষ্ট আকার আছে। | অন্যদিকে তরল পদার্থের নির্দিষ্ট আকার নেই। |
কঠিন পদার্থকে তাপ দিলে তরলে পরিণত হয়। যেমন বরফকে তাপ দিলে পানি হয়। | অন্যদিকে তরল পদার্থকে তাপ দিলে বায়বীয় পদার্থে পরিণত হয়। যেমন পানিকে তাপ দিলে জলীয় বাষ্পে পরিণত হয়। |
কঠিন পদার্থের কণাগুলোর মধ্যে আন্তঃকণা আকর্ষণ বল সবচেয়ে বেশি হয় । | অন্যদিকে তরল পদার্থের কণাগুলোর মধ্যে আন্তঃকণা আকর্ষণ বল কঠিনের চেয়ে কম হয়। |
কঠিন পদার্থের কণাগুলো খুব কাছাকাছি এবং নিদিষ্ট অবস্থানে থাকে। | অন্যদিরক তরলের কণাগুলো কঠিন পদার্থের কণাগুলোর চেয়ে তুলনামুলকভাবে বেশি দুরত্বে থাকে । |
তাপমাত্রা বাড়লে কঠিন পদার্থের আয়তন খুবই কম পরিমাণ বৃদ্ধি পায় । | অন্যদিকে তাপ প্রয়োগ করলে তরল পদার্থের আয়তন বৃদ্ধি পায় । এই আয়তন বৃদ্ধির পরিমাণ কঠিন পদার্থের চেয়ে বেশি। |
কঠিন পদার্থ
কঠিন যে পরমাণু, অণু বা আয়ন দিয়ে তৈরি তা সুশৃঙ্খল পুনঃরাবৃত্তি প্যাটার্ন বা অনিয়মিতভাবে সজ্জিত হতে পারে। যে পদার্থগুলোর উপাদান নিয়মিত প্যাটার্নে সজ্জিত থাকে সেগুলো স্ফটিক হিসাবে পরিচিত। কিছু ঘটনায়, নিয়মিত বিন্যাস বড় আকারে অবিচ্ছিন্নভাবে অবিরত থাকতে পারে, উদাহরণস্বরূপ হীরা, যেখানে প্রতিটি হীরা একক স্ফটিক।
যেসব কঠিন বস্তু দেখতে এবং নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যথেষ্ট বড় খুব কম সময়ই সেগুলো একটি একক স্ফটিক দ্বারা গঠিত হয়, তবে তার পরিবর্তে তা প্রচুর সংখ্যক একক স্ফটিক দিয়ে তৈরি হয়, যার আকার কয়েক ন্যানোমিটার থেকে কয়েক মিটার পর্যন্ত হতে পারে। এই জাতীয় পদার্থগুলিকে পলিক্রিস্টালাইন বলা হয়।
প্রায় সকল সাধারণ ধাতু এবং অনেক সিরামিক পলিক্রিস্টালাইন হয়। অন্যসব উপাদানে, পরমাণুর অবস্থানের মধ্যে লং-রেঞ্জের বিন্যাস নেই । এই কঠিন পদার্থ অ্যামরফাস কঠিন পদার্থ হিসেবে পরিচিত, “পলিস্টাইরিন” এবং “কাচ” এর উদাহরণ।
তরল পদার্থ
তরল হল পদার্থের চারটি অবস্থার একটি অবস্থা। অন্য তিনটি অবস্থা হল কঠিন, প্লাজমা, ও বায়বীয় অবস্থা। এটি হল পদার্থের একমাত্র অবস্থা যার নির্দিষ্ট আয়তন আছে, কিন্তু কোনো নির্দিষ্ট আকার নেই। তরলের মধ্যে থাকা অণুগুলো স্বাধীনভাবে চলাচল করতে পারে। তরলের সবচেয়ে সাধারণ উদাহরণ হল পানি। তরল গ্যাসের মতো প্রবাহিত হতে পারে। তাই তরল প্রবাহী পদার্থ বা ফ্লুইড। তরল ধারকের আকৃতি ধারণ করতে পারে এবং ধারক সিলবদ্ধ হলে তরলটি ধারকটির প্রতিটি পৃষ্ঠে একইভাবে চাপ প্রয়োগ করবে।
তরল কণা দৃঢ়ভাবে আবদ্ধ থাকে তবে কঠোরভাবে নয়। তারা একে অপরের পাশে স্বাধীনভাবে ঘুরতে সক্ষম হয়, যার ফলে সীমিত মাত্রায় কণার গতিশীলতা থাকে। তাপমাত্রা বাড়লে সাথে অণুগুলির মধ্যে কম্পন বৃদ্ধি পায় যার ফলে অণুগুলোর মধ্যকার দূরত্ব বাড়তে থাকে। যখন একটি তরল তার স্ফুটনাঙ্ক পৌঁছায়, তখন তার আন্তঃআণবিক গঠন ভেঙ্গে তা বায়বীয় পদার্থে পরিণত হয়।
আর যদি তাপমাত্রা হ্রাস পায় তবে অণুগুলির মধ্যে দূরত্ব আরও ছোট হয়ে আসে। তরল যখন তার হিমাঙ্ক পৌঁছায়, তখন তার অণুগুলি সাধারণত খুব নির্দিষ্ট ক্রমে লক হয়ে যায়, যাকে ক্রিস্টালাইজিং বলা হয় এবং তাদের মধ্যে বন্ধনগুলি আরও দৃঢ় হয়ে যায়, ফলে তরলটি কঠিনে পরিণত হয়।
আজকে আমরা দেখলাম কিছু পার্থক্য কঠিন এবং তরল পদার্থের মধ্যে। এইসব পার্থক্য আপনারা যেকোনো জায়গায় ব্যবহার করতে পারবেন। এই সব কঠিন এবং তরল পদার্থের মধ্যে পার্থক্য, বই থেকে সংগ্রহ করা। আশা করি এই পোস্টটি থেকে অনেক উপকারিত হয়েছেন। অনুগ্রহ করে আমাদের পোস্টগুলো আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আসসালামু আলাইকুম:)