নৃবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞানের মধ্যে পার্থক্য: আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা, কেমন আছেন আপনারা? আশা করি ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আপনারা নিশ্চয় নৃবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞানের মধ্যে পার্থক্য খোজার চেষ্টা করছেন। তাহলে আপনার একদম সঠিক জায়গায় এসেছেন। এখানে আপনারা পেয়ে যাবেন সঠিক নৃবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞানের মধ্যে পার্থক্য। তো চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।
নৃবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞানের মধ্যে পার্থক্য কি?
নৃবিজ্ঞান | সমাজবিজ্ঞান |
---|---|
নৃতত্ত্ববিজ্ঞান পৃথক স্তরে মানুষের আচরণকে আরও অধ্যয়ন করে। | অন্যদিকে সমাজবিজ্ঞান সামাজিক কাঠামো এবং প্রতিষ্ঠানের সাথে গ্রুপ আচরণ এবং সম্পর্কের দিকে আরও বেশি মনোনিবেশ করে। |
নৃবিজ্ঞানীরা এথনোগ্রাফি (একটি গুণগত গবেষণা পদ্ধতি) ব্যবহার করে গবেষণা পরিচালনা করেন। | অন্যদিকে সমাজবিজ্ঞানীরা গুণগত এবং পরিমাণগত উভয় পদ্ধতিই ব্যবহার করেন। |
নৃতত্ত্বের প্রাথমিক লক্ষ্য হ’ল মানব বৈচিত্র্য এবং সাংস্কৃতিক পার্থক্য বোঝা | যখন সমাজবিজ্ঞান নীতির মাধ্যমে সামাজিক সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে আরও সমাধান-ভিত্তিক। |
নৃবিজ্ঞানটি সর্বপ্রথম 1593 সালে একটি শব্দ হিসাবে প্রকাশিত হয়েছিল। | অন্যদিকে সমাজবিজ্ঞান 1838 সালে অগাস্টে কন্টি দ্বারা একটি শব্দ হিসাবে তৈরি করা হয়েছিল। |
প্রায় 400 টি বিশ্ববিদ্যালয় নৃতত্ত্ববিজ্ঞানের প্রোগ্রাম সরবরাহ করে। | অন্যদিকে সমাজবিজ্ঞান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আরও বেশি জনপ্রিয় বলে মনে হচ্ছে এক হাজারেরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয় সমাজবিজ্ঞান প্রোগ্রাম সরবরাহ করে। |
আর্থসংস্কৃতিক, ভাষাগত, শারীরিক, প্রত্নতাত্ত্বিক imp সাধারণ, traditional ঐতিহ্যবাহী এবং অ শিল্পহীন সমাজ। | অন্যদিকে সামাজিক প্রতিষ্ঠান (অর্থনৈতিক জীবনশিক্ষা, পরিবার, রাজনীতি এবং ধর্ম), সামাজিক স্তরবিন্যাস (বয়স, লিঙ্গ, বর্ণ এবং নৃগোষ্ঠী এবং সামাজিক শ্রেণি দ্বারা), সামাজিক পরিবর্তন এবং সামাজিক সমস্যা soc জটিল ও আধুনিক সমাজের প্রতি লক্ষ্য। |
সমাজবিজ্ঞান (Sociology):
সমাজবিজ্ঞান বা সমাজবিদ্যা বা সমাজতত্ত্ব মানুষের সমাজ বা দলের বৈজ্ঞানিক আলোচনা শাস্ত্র। এতে সমাজবদ্ধ মানুষের জীবনের সামাজিক দিক এবং তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করা হয়। সমাজ বিষয়ক গবেষণা অতীত কাল থেকেই প্রচলিত ছিল। তবে অগাস্ট কোঁৎ সর্বপ্রথম ১৮৩৮ সালে এর রীতিবদ্ধ আলোচনা করেন।
এছাড়া হার্বার্ট স্পেনসার সমাজবিজ্ঞানের মূলনীতিগুলি স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। আধুনিক সমাজবিজ্ঞানের মূল স্থপতি হিসেবে ফরাসি পণ্ডিত এমিল ডুর্খেইম এবং জার্মান সমাজবিজ্ঞানী মাক্স ওয়েভারের নাম উল্লেখযোগ্য। তবে ইবনে খালদুন কে সমাজবিজ্ঞান এর আদি বা প্রাচীন জনক মনে করা হয়।
নৃবিজ্ঞান (Anthropology):
আক্ষরিক অর্থে নৃবিজ্ঞান (Anthropology) মানুষ বিষয়ক বিজ্ঞান। নৃবিজ্ঞানের লক্ষ্য হলো অতীত ও বর্তমানের মানব সমাজ ও মানব আচরণকে অধ্যয়ণ করা । কিন্তু মানুষ বিষয়ক অন্যান্য বিজ্ঞানগুলির চেয়ে এটির পরিধি ব্যাপকতর। বিশ্বের সকল অঞ্চলের, সংস্কৃতির মানুষকে নিয়ে এই বিজ্ঞানে গবেষণা করা হয়।
লক্ষ কোটি বছর ধরে মানুষের বিবর্তন এবং সাংস্কৃতিক বিকাশের গবেষণাও নৃবিজ্ঞানের আওতায় পড়ে। নৃবিজ্ঞানে মানুষকে সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে গবেষণা করা হয়। বিভিন্ন সংস্কৃতির মানুষ ও তাদের সব রকমের অভিজ্ঞতা নৃবিজ্ঞানীদের গবেষণার বিষয়। নৃবিজ্ঞানীরা কোন একটি বিশেষ মানব সম্প্রদায়ের সাধারণ বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত করতে ও সেগুলি ব্যাখ্যা করতে চেষ্টা করেন। এই বৈশিষ্ট্যগুলি মানুষের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য বা সামাজিক রীতিনীতি হতে পারে।
আজকে আমরা দেখলাম কিছু পার্থক্য নৃবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞানের মধ্যে। এইসব পার্থক্য আপনারা যেকোনো জায়গায় ব্যবহার করতে পারবেন। এই সব নৃবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞানের মধ্যে পার্থক্য, বই থেকে সংগ্রহ করা। আশা করি এই পোস্টটি থেকে অনেক উপকারিত হয়েছেন। অনুগ্রহ করে আমাদের পোস্টগুলো আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আসসালামু আলাইকুম:)