যৌন ও অযৌন জননের মধ্যে পার্থক্য: আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা, কেমন আছেন আপনারা? আশা করি ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আপনারা নিশ্চয় যৌন ও অযৌন জননের মধ্যে পার্থক্য খোজার চেষ্টা করছেন। তাহলে আপনার একদম সঠিক জায়গায় এসেছেন। এখানে আপনারা পেয়ে যাবেন সঠিক যৌন ও অযৌন জননের মধ্যে পার্থক্য। তো চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।
যৌন ও অযৌন জননের মধ্যে পার্থক্য কি?
যৌন | অযৌন |
---|---|
যৌন জননের একক হল ‘গ্যামেট’। | অন্যদিকে অযৌন জননের একক হল ‘স্পোর’ বা রেণু। |
যৌন জননের গ্যামেট উৎপন্ন হয় এবং দুটি ভিন্নধর্মী গ্যামেটের মিলন বা নিষেকের ফলে অপত্য জীব সৃষ্টি হয় | অন্যদিকে অযৌন জননে গ্যামেট উৎপাদন হয় না। কিম্বা তার নিষেক ঘটে না । সাধারণত কোশ বিভাজনের দ্বারা বা রেণু উৎপাদনের মাধ্যমে এই রকম জনন সম্পন্ন হয়। |
যৌন জননে অপত্য জীব জনিতৃ জীবের মতো অথবা নতুন বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন হয়। | অন্যদিকে অযৌন জননের ফলে উত্পন্ন অপত্য জীব হুবহু জনিতৃ জীবের মতো হয়। |
যৌন জননে সময় বেশি লাগে এবং অপত্য জীবের সংখ্যা অনেক কম হয়। | অন্যদিকে অযৌন জননে সময় কম লাগে এবং অপত্য জীবের সংখ্যা অনেক বেশি হয়। |
যৌন জনন কোশ অর্থাৎ গ্যামেট উৎপাদনের আগে সাধারণত মিয়োসিস বিভাজন ঘটে। | অন্যাদিকে অযৌন জনন কোশ উৎপন্ন হওয়ার আগে সাধারণত মিয়োসিস বিভাজন ঘটে না। |
যৌন জননের মাধ্যমে জীবের অভিব্যক্তি ঘটা সম্ভব। | অন্যদিকে অযৌন জননের মাধ্যমে জীবের অভিব্যক্তি ঘটা সম্ভব নয় । |
যৌন জনন
যে জনন প্রক্রিয়ায় গ্যামেট উত্পন্ন হয় এবং দুটি যৌন জনন কোশ অর্থাৎ পুং গ্যামেট ও স্ত্রী গ্যামেটের মিলন বা নিষেকের মাধ্যমে অপত্য জীব সৃষ্টি হয়, তাকে যৌন জনন বলে । যৌন জননের একক:- যৌন জননের একক হল জনন কোশ অর্থাৎ গ্যামেট (Gametes) ।
পুংজনন তন্ত্রের একক হল পুং গ্যামেট বা শুক্রাণু (sperm) এবং স্ত্রীজনন তন্ত্রের একক হল স্ত্রী-গ্যামেট বা ডিম্বাণু (egg) । যৌন জননের উদাহরণ:- ব্যাঙ, মানুষ প্রভৃতি প্রাণী ও সপুষ্পক উদ্ভিদ যৌন জনন প্রক্রিয়ায় অপত্য জীব সৃষ্টি করে ।
অযৌন প্রজনন
অযৌন প্রজনন (ইংরেজি: Asexual reproduction) হল যৌনতাবিহীন বংশবৃদ্ধি প্রক্রিয়া। পাথরকুচি গাছের অযৌন প্রজনন মিওসিস প্রক্রিয়ায় জনন কোশ বা গ্যামেট তৈরি এবং দুটি ভিন্ন লিঙ্গের গ্যামেটের সংযুক্তি ব্যতিরেকে একটিমাত্র জীবদেহ থেকে স্বতন্ত্র অপত্য তৈরি হওয়ার ঘটনাকে অযৌন জনন বলে। এই প্রজনন প্রক্রিয়ায় একটিমাত্র জীব নিজের অবিকল প্রতিলিপি বা ক্লোন তৈরি করে। ফলে, জনিতৃ জীব এবং প্রতিলিপিত নতুন জীবের জিনের গঠন সম্পূর্ণ অপরিবর্তিত থাকে। এককোষী জীবদেহে (মনেরা ও প্রোটিস্টা) অযৌন জনন সর্বাধিক পরিলক্ষিত হয়। এছাড়া বিবর্তনগতভাবে অনুন্নত জীবেরাও অযৌন পদ্ধতিতে জনন ক্রিয়া সম্পন্ন করে।
উন্নত উদ্ভিদদের ক্ষেত্রে অঙ্গজ জননের মাধ্যমে অযৌন জনন ঘটে। মেরুদণ্ডী এবং উন্নত অমেরুদণ্ডী প্রাণীদের ক্ষেত্রে অযৌন জনন সাধারণত ঘটে না। বিপুল বৈচিত্র্যময় জীবজগতে প্রতিটি জীব তার নিজস্ব জনন পদ্ধতিতে বিবর্তিত হয়েছে। এই প্রজনন পদ্ধতি জীবের বাসস্থান, আভ্যন্তরীণ শারীরিক গঠন এবং আরও অন্যান্য নিয়ামক দ্বারা নির্ধারিত হয়। বিভাজন (Fission), কোরকোদ্গম (Budding), রেণু উৎপাদন (Sporulation), গেমা গঠন (Gemmae formation), খণ্ডীভবন ও পুনরুৎপাদন (Fragmentation & Regeneration), অঙ্গজ জনন (Vegetative propagation) এবং অন্যান্য উপায়ে অযৌন জনন সংঘটিত হয়।
আজকে আমরা দেখলাম কিছু পার্থক্য যৌন ও অযৌন জননের মধ্যে। এইসব পার্থক্য আপনারা যেকোনো জায়গায় ব্যবহার করতে পারবেন। এই সব যৌন ও অযৌন জননের মধ্যে পার্থক্য, বই থেকে সংগ্রহ করা। আশা করি এই পোস্টটি থেকে অনেক উপকারিত হয়েছেন। অনুগ্রহ করে আমাদের পোস্টগুলো আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আসসালামু আলাইকুম:)