মেঘ দেখে কেউ করিসনে ভয় আড়ালে তার সূর্য হাসে হারা শশীর হারা হাসি অন্ধকারেই ফিরে আসে – ভাবসম্প্রসারণ

প্রিয় শিক্ষার্থীরা কেমন আছো আশা করি ভালো আছো, আজকে তোমাদের জন্য আমরা নিয়ে এসেছি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ভাবসম্প্রসারণ “মেঘ দেখে কেউ করিসনে ভয় আড়ালে তার সূর্য হাসে হারা শশীর হারা হাসি অন্ধকারেই ফিরে আসে ”। চলো এই ভাবসম্প্রসারণটি পড়ে নেয়।

মেঘ দেখে কেউ করিসনে ভয় আড়ালে তার সূর্য হাসে হারা শশীর হারা হাসি অন্ধকারেই ফিরে আসে - ভাবসম্প্রসারণ

মেঘ দেখে কেউ করিসনে ভয় আড়ালে তার সূর্য হাসে হারা শশীর হারা হাসি অন্ধকারেই ফিরে আসে ভাবসম্প্রসারণ

মানুষের জীবনে সুখ-দুঃখ পালাক্রমে আসে। কাজেই কখনো দুঃখ এল ভেঙে পড়লে চলবে না, কারণ দুঃখের আড়ালেই সুখ লুক্কায়িত।

মানুষের জীবন হলো সুখ এবং দুঃখ দিয়ে গাঁথা এক বিচিত্র মালার মতো। নিরবচ্ছিন্ন সুখ কিংবা নিরবচ্ছিন্ন দুঃখ কোনো মানুষের জীবনে স্থায়ী হয় না। তার জীবনে যখন আসে দুঃখ-বেদনার সেই অমানিশা, দুঃখ-বেদনা তখন অসহ্য বোধ হয়। মনে হয় সেই দুঃখরজনীর বুঝি শেষ নেই। কিন্তু অবশেষে তার দুঃখ-বেদনার সেই অমানিশার অবসান হয়। পূর্বদিগন্তে উদিত হয় সুখের সূর্য। কাজেই দুঃখ-কষ্ট, বিপদ-বাধা সাময়িক। তা দেখে মানুষের ভয় পাওয়া বা বেদনায় ভেঙে পড়া উচিত নয়। তাই আকস্মিক দুর্যোগ ও বিপদে ভেঙে না পড়ে প্রতিকূলতা মোকাবেলায় ধৈর্য ধরতে হয় দৃঢ়চিত্তে। বিপদ-বাধাকে জয় করার জন্য নিতে হয় সংগ্রামের প্রস্তুতি। তাই জীবনে অমারাত্রির কালো আঁধার দেখে শঙ্কিত হওার কারণ নেই। কারণ, নিকষ কালো অন্ধকারই কেবল মানুষের জীবনে অনিবার্য সত্য নয়, সেই আঁধারের বুকেই আবার উদিত হয় অস্তমিত চাঁদ। মানুষের জীবনেও তেমনি দুঃখের আঁধারে সুখের আলো লোপ পায়, কিন্তু তা ক্ষণিকের জন্যে।

মানব জীবনে আলো-আন্ধকার, সুখ-দুঃখ পালাক্রমে আসে। এর কোনোটিই এককভাবে আসে না। সুখ-দুঃখ, সাফল্য-ব্যর্থতা ইত্যাদির পালাবদলের মধ্য দিয়েই মানুষের জীবনচক্র পূর্ণ হয়।

বিকল্প ১

মূলভাবঃ জীবনে দুঃখ-যন্ত্রনা স্থায়ী নয়। দুঃখ-দুর্দশায় আমাদের ভেঙ্গে পড়া উচিত নয়। কেননা, দুঃখ-দুর্দশায় মধ্য দিয়েই জীবনে আসে সত্যিকারের সুখ।

সম্প্রসারিত ভাবঃ মানব জীবন দুঃখ-সুখের সুতায় বোনা। এখানে সুখ ও দুঃখ ওতপ্রোতভাবে এক সঙ্গে জড়িত। কিন্তু মানুষ শুধু সুখের আশা করে; দুঃখ যন্ত্রনা এড়িয়ে যেতে চায়। দুঃখকষ্ট মাড়িয়ে সুখ অর্জন করতে হয়। জীবনে কখনো দুঃখ উঁকি দেয়, আবার কখনোবা সুখ উঁকি দেয়। জীবনেদুঃখ-দুর্দশায় আমাদের ভেঙ্গে পড়া উচিত নয়। কারন দুঃখ কষ্ট জীবনে স্থায়ী রুপ নেয় না। দুঃখের পরেই সুখ আসে। যেমন রাতের পরেই দিন আসে। দুঃখের অগ্নি পরীক্ষার ভেতর দিয়েই মানুষের জীবন শুচি-শুভ্র হয়ে উঠে। দুঃখই তাকে দান করে মহিমা। দুঃখের সিঁড়ি বেয়েই আসে সত্যিকার সুখ ও শান্তি। মেঘের আড়ালেই লুকানো থাকে দিবসের প্রদীপ্ত সূর্য। মেঘ যত গভীর এবং ঘনতরই হউক না কেন, সে সূর্যকে সবসময় আড়াল করে রাখতে পারবে না। মেঘ কেটে গেলেই হেসে উঠবে সূর্য। অমাবস্যার অন্ধকার সাময়িকভাবে চাঁদকে গ্রাস করতে পারলেও, সেই অন্ধকারকে বিদীর্ণ করে হেসে উঠে নতুন চাঁদ। সে রকম জীবনে দুঃখ-যন্ত্রনা সাময়িক সময়ের জন্য আসে; পরক্ষনে কিছুদিন পরে তা তিরোহিত হয়ে যায়। আর সুখ শান্তি স্থায়ী ভাবে বাসা বাঁধে। সুতরাং দুঃখ ও বিপদে ভেঙ্গে পড়া উচিত নয়; বরং বলিষ্ঠ আত্মবিশ্বাসে তার মোকাবেলা করতে হবে। আর তাতে জীবনে সুখ-শান্তি, সাফল্য ও সমৃদ্ধি আবির্ভূত হয়।

মন্তব্যঃ সুখ ও দুঃখ পর্যায়ক্রমে আসে। তাই দুঃখকে ভয় না করে সুখ ও দুঃখ উভয়কেই সমভাবে গ্রহণ করা উচিত। অন্যদিকে, জীবনে সুখ-শান্তি, সাফল পেতে হলে দুঃখ-যন্ত্রনার সঙ্গে সংগ্রাম করে জীবনে আত্মপ্রতিষ্ঠা লাভ করতে হবে।

আশা করি তোমরা এই ভাবসম্প্রসারণটি বুঝতে পেরেছো। আমাদের সাথেই থাকো।

Leave a Comment