বার্ধক্য তাহাই- যাহা পুরাতনকে মিথ্যাকে মৃত্যুকে আঁকড়িয়া পড়িয়া থাকে ভাবসম্প্রসারণ

প্রিয় শিক্ষার্থীরা কেমন আছো আশা করি ভালো আছো, আজকে তোমাদের জন্য আমরা নিয়ে এসেছি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ভাবসম্প্রসারণ “বার্ধক্য তাহাই- যাহা পুরাতনকে মিথ্যাকে মৃত্যুকে আঁকড়িয়া পড়িয়া থাকে ”। চলো এই ভাবসম্প্রসারণটি পড়ে নেয়।

বার্ধক্য তাহাই- যাহা পুরাতনকে মিথ্যাকে মৃত্যুকে আঁকড়িয়া পড়িয়া থাকে ভাবসম্প্রসারণ

বার্ধক্য তাহাই- যাহা পুরাতনকে মিথ্যাকে মৃত্যুকে আঁকড়িয়া পড়িয়া থাকে ভাবসম্প্রসারণ

মূলভাব : কেবল বয়সের মাপকাঠিতে তারুণ্য বা বার্ধক্যকে বিচার করা যায় না। দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য ও কর্মস্পৃহার তারতম্য মানুষকে তরুণ ও বৃদ্ধ হিসেবে চিহ্নিত করে।

সম্প্রসারিত ভাব : মানুষ শৈশব, কৈশোর, তারুণ্য ও যৌবন পেরিয়ে বার্ধক্যে উপনীত হয়। এ বার্ধক্য ব্যক্তির নানা ধরনের শারীরিক সক্ষমতা হ্রাস করতে পারে ঠিকই, কিন্তু সবাইকে মানসিকভাবে জরাগ্রস্ত করতে পারে না। এদের কর্মশক্তি ও মানসিক-শক্তি অনেক তরুণকে হার মানায়। পক্ষান্তরে, এমন অনেক তরুণ রয়েছে – যারা নতুনকে গ্রহণ করতে পারে না, অন্ধবিশ্বাস ও গতানুগতিক চিন্তায় আচ্ছন্ন থাকে, সত্যকে স্বীকার করতে কুন্ঠিত হয়। তারা আসলে তারুণ্যের খোলসে বার্ধক্যকে লালন করে। আর যেসব বয়োবৃদ্ধ ব্যক্তি সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেয়, ইতিবাচক ভাবনায় জীবনকে পরিচালিত করে, তারা প্রকৃতপক্ষে তারুণ্যের অমিতশক্তি ধারণ করে। তরুণরা সব সময়ে আলোর পথের যাত্রী। কঠিন সত্যকে মেনে নিয়ে তারা নতুন ইতিহাস রচনা করতে পারে। যুক্তির আলোয় কুসংস্কারকে বাতিল করে তারা প্রতিষ্ঠা করে নতুন সত্য। তারা ধ্বংস ও মৃত্যুকে পিছনে ফেলে সৃষ্টির আনন্দে এগিয়ে যায়। তারুণ্যের এই বোধ ও অনুভূতি যে কোনো বয়সের মানুষের মধ্যে থাকতে পারে। প্রকৃত বৃদ্ধ তারা, যারা তারুণ্যের দুঃসাহসিক অভিযানে অংশ নিতে চায় না, সমাজ ও সংস্কৃতির পরিবর্তনকে অস্বীকার করে, নতুন সূর্যের আলোয় আস্বস্তিবোধ করে। তারা তারুণ্যের অগ্রযাত্রায় অংশ নেওয়ার পরিবর্তে বিঘ্ন সৃষ্টি করে।

মন্তব্য : বার্ধক্যের পরিচয় বয়সে নয়, পশ্চাদ্মুখী দৃষ্টিভঙ্গিতে।

বিকল্প ১

মূলভাব : সাধারণত বয়সের মাপকাঠিতে তারুণ্য ও বার্ধক্যের পরিমাপ করা হলেও বার্ধক্যের প্রকৃত নির্ধারক বয়স নয়। কেবল বয়সের আধিক্যেই মানুষ বৃদ্ধ হয় না। 

সম্প্রসারিত ভাব : এ পৃথিবীতে এমন অনেক তরুণ আছে যারা বয়সে তারুণ্যের অধিকারী হয়েও আচার-আচরণে, অন্ধ-বিশ্বাসে ও কর্মবিমুখতায় বৃদ্ধের সমতুল্য। পক্ষান্তরে, এমন অনেক বৃদ্ধ রয়েছেন যারা মনের দিক থেকে তারুণ্যের তেজোদীপ্ততায় ভরপুর। সুতরাং, যারা গতানুগতিক ভাবধারা ও জরাজীর্ণ পুরাতনকে, কুসংস্কারকে, মিথ্যাকে আঁকড়ে ধরে দিনাতিপাত করে তারা যে বয়সেরই হোক না কেন তারা বৃদ্ধ। এরা জীবনের মোহমায়ায় তারুণ্যের শঙ্কাহীন অভিযানে অংশগ্রহণ করে না। সমাজ ও সংস্কৃতির যুগোপযোগী পরিবর্তনকে এরা স্বাগত জানাতে জানে না। নব সূর্যের সোনালী ঊষা এদের কাম্য নয়। তাই এরা প্রত্যুষেও দ্বার রুদ্ধ করে নিদ্রায় আচ্ছন্ন থাকে, অর্থাৎ নতুন সংস্কারকে এড়িয়ে চলে। নতুনের কেতন উড়িয়ে ভুবন জয়ের পথে পাড়ি জমাতে পারে না। আধুনিকতার সাথেতাল মেলাতে অক্ষম। এরা শতাব্দীর অগ্রযাত্রায় আগুয়ান জনতার কাফেলায় কুচকাওয়াজ করতে জানে না, তারা আলোর পিয়াসী নয় বরং বিভিন্ন কুসংস্কারে বিশ্বাসী। কোন ঝুঁকিপূর্ণ কাজে তারা যেতে নারাজ। 

মন্তব্য : তাই তারা সৃষ্টি সুখের উল্লাসে মেতে উঠে না। সুতরাং বয়স তাদের যাই হোক তারা বাধ্যক্যের কংকালমূর্তি।

আশা করি তোমরা এই ভাবসম্প্রসারণটি বুঝতে পেরেছো। আমাদের সাথেই থাকো।

Leave a Comment