প্রিয় শিক্ষার্থীরা কেমন আছো আশা করি ভালো আছো, আজকে তোমাদের জন্য আমরা নিয়ে এসেছি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ভাবসম্প্রসারণ “কার্পণ্য ও মিতব্যয়িতা এক কথা নয়। এই দুইকে এক মনে করা নিতান্তই ভ্রম ”। চলো এই ভাবসম্প্রসারণটি পড়ে নেয়।
কার্পণ্য ও মিতব্যয়িতা এক কথা নয় এই দুইকে এক মনে করা নিতান্তই ভ্রম ভাবসম্প্রসারণ
মানব-চরিত্রের দুটি প্রধান দিক হলো কার্পণ্য ও মিতব্যয়িতা। এ দুটি বৈশিষ্ট্যের মধ্যে মানব চরিত্রের বিশেষ দুটি দিকই পরিস্ফুট হয়ে উঠে। আসলে কৃপণ ব্যক্তিদের স্বভাব হলো নিজের আত্মাকে কষ্ট দিয়ে সঞ্চয় করা। সে সঞ্চয় বহু ক্ষেত্রে তার নিজের কোনো কাজে আসে না। তাছাড়া, কৃপণের সঞ্চিত অর্থ দ্বারা তার নিজের পরিবারের এমন কি সমাজেরও কোনো উপকারে আসে না। কারণ, যে নিজের কল্যাণ সাধনে ব্যর্থ, সমাজ ও জগতের কল্যাণ তার দ্বারা কল্পনাও করা যায় না। পক্ষান্তরে, মিতব্যয়িতা কার্পণ্যের একটি বিপরীত বৈশিষ্ট্য। কারণ, মিতব্যয়ী ব্যক্তি নিজের প্রয়োজনানুসারেই ব্যয় করে এবং এ মিতব্যয়িতার ভেতর দিয়ে যা সঞ্চিত হয়, তা আরও পরিকল্পিত ও সুন্দর পথে সুন্দরভাবে ব্যয় করা সম্ভব। সুতরাং কার্পণ্য ও মিতব্যয়িতা এক কথা নয়। তা সম্পূর্ণ ভিন্ন। কার্পণ্য হলো কৃপণ ব্যক্তির সংকীর্ণ স্বভাব এবং এ স্বভাব সমাজে নিন্দিত। পক্ষান্তরে মিতব্যয়িতা হলো মানুষের গুণ। আয় অনুযায়ী খরচ করাই বিধেয়। আর বেশি থাকলেও অকারণে খরচ করতে নেই। এটি হলো অপব্যয়, অপচয়। বলা হয়, অপচয়কারী শয়তানের ভাই। সেজন্য সবাইকে মিতব্যয়ী হতে হবে। কৃপণ ব্যক্তি অনুদার, আর মিতব্যয়ী সতেচন ও সতর্ক।
বিকল্প ১
মূলভাব : মানব চরিত্রে বৈশিষ্ট্য বৈচিত্র্যধর্মী। অর্থ ব্যয়ের ব্যাপারে মানুষের সঞ্চয়ী মনোবৃত্তি দুভাবে প্রকাশ পায়। একটি কার্পণ্য এবং অপরটি মিতব্যায়িতা। আপাতদৃষ্টিতে উভয় ক্ষেত্রেই ব্যয়ের ব্যাপারে কুণ্ঠা প্রকাশ পেলেও তাদের মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য বিদ্যমান। কার্পণ্যের মধ্যে আছে সংকীর্ণতা আর মিতব্যয়িতার মধ্যে আছে সংযম আর বিবেচনাশীলতা।
সম্প্রসারিত-ভাব : মানুষ অর্থ সম্পদ ব্যয় করার বিষয়ে বিশেষ সচেতনতার পরিচয় দেয়। সম্পদ অর্জন করা কঠিন বলে তা ব্যয়ের ব্যাপারেও মানুষ নানাদিক বিবেচনা করে। অনেকে অর্থ ব্যয় করতে মোটেই ইচ্ছুক থাকে না। কিভাবে অর্থ ব্যয় না করে চলা যায় সেদিকেই দৃষ্টি থাকে। এ লোকেরা কৃপণ বলে অভিহিত হয়। অর্থ ব্যয়ে অনিচ্ছাই কার্পণ্য। অপরদিকে, এক শ্রেণীর লোক অর্থ ব্যয় করার সময় খুব বিবেচনা করে ব্যয় করে। প্রয়োজনীয়তা, উপযোগিতা ইত্যাদি দিক বিবেচনা করে অর্থ ব্যয় করা হলে তা মিতব্যয়িতা বলে আখ্যা দেওয়া যায়। পরিমিত ব্যয়ের মধ্যে অর্থের সদ্ব্যবহার হয়ে থাকে। কার্পণ্য ও মিতব্যয়িতা অর্থব্যয় সংক্রান্ত হলেও তা এক পর্যায়ভুক্ত হয় না। উভয়ের মধ্যে মিল নেই, বরং ভিন্নধর্মী বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। কৃপণতায় আছে মনের সংকীর্ণতা। প্রয়োজনের সময় কৃপণের অর্থ উপকারে আসে না। শুধু সঞ্চয় করে রাখার মধ্যে সম্পদ সংগ্রহের সার্থকতা নেই। বরং মিতব্যয়িতার মাধ্যমে অর্থ ব্যয় করা হলে সর্বোত্তমভাবে তা কাজে লাগে। তাই কার্পণ্য ও মিতব্যয়িতা এক পর্যায়ভুক্ত নয়। দু’টি দুই পর্যায়ের অন্তর্গত।
আরো পড়ুন: কত বড় আমি কহে নকল হীরাটি তাইতাে সন্দেহ করি নহ ঠিক খাঁটি
আশা করি তোমরা এই ভাবসম্প্রসারণটি বুঝতে পেরেছো। আমাদের সাথেই থাকো।