মোট খাজনা এবং নিট খাজনার মধ্যে পার্থক্য: আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা, কেমন আছেন আপনারা? আশা করি ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আপনারা নিশ্চয় মোট খাজনা এবং নিট খাজনার মধ্যে পার্থক্য খোজার চেষ্টা করছেন। তাহলে আপনার একদম সঠিক জায়গায় এসেছেন। এখানে আপনারা পেয়ে যাবেন সঠিক মোট খাজনা এবং নিট খাজনার মধ্যে পার্থক্য। তো চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।
মোট খাজনা এবং নিট খাজনার মধ্যে পার্থক্য কি?
মোট খাজনা | নিট খাজনা |
---|---|
কোনো নির্দিষ্ট জমি বা বাড়ি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ব্যবহারের বিনিময়ে ব্যবহারকারী তার মালিককে সাকল্যে যে পরিমাণ অর্থ প্রদান করে, তাকে মোট খাজনা বলে। | অন্যদিকে অর্থনীতিতে কেবল স্থিতিস্থাপক উপকরণ ব্যবহারের জন্য এর মালিককে যে অর্থ দেওয়া হয়, তাকে নিট খাজনা বলে। |
মোট খাজনায় নিট খাজনা অন্তর্ভুক্ত থাকে। | অন্যদিকে নিট খাজনায় কেবল জমি ব্যবহারের দামই থাকে। |
মোট খাজনা হলো খাজনা হিসেবে প্রাপ্ত সর্বমোট অর্থ। | অন্যদিকে নিট খাজনা মূলত মোট খাজনার অংশ মাত্র। |
মোট খাজনার পরিধি বিস্তৃত। | অন্যদিকে নিট খাজনার পরিধি ক্ষুদ্রতর। |
মোট খাজনার হিসাব নির্ণয় অনেক সহজ। | অন্যদিকে নিট খাজনার হিসাব জটিল। |
মোট খাজনা চুক্তিভিত্তিক নির্ধারিত হয়। | অন্যদিকে অর্থনীতিতে খাজনা বলতে নিট খাজনা ব্যবহূত হয়। |
মোট খাজনা (Gross Rent)ঃ
জমি ব্যবহারকারী কর্তৃক জমির মালিককে চুক্তি অনুসারে প্রদত্ত মোট অর্থকে মোট খাজনা বা চুক্তিবদ্ধ খাজনা বলে। মোট খাজনার মধ্যে জমির বিশুদ্ধ খাজনা ছাড়াও জমির মালিকের মূলধন নিয়োগ বাবদ সুদ, প্রাপ্তিযোগ্য মজুরি, মালিক কর্তৃক সরকারকে প্রদত্ত কর, ঝুঁকি গ্রহণের জন্য মুনাফা ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত থাকে। অতএব, মোট খাজনা = জমির বিশুদ্ধ খাজনা + মূলধন নিয়োগ বাবদ সুদ + প্রাপ্তিযোগ্য মজুরি + মালিক কর্তৃক সরকারকে প্রদত্ত কর + ঝুঁকি গ্রহণের মুনাফা।
ধরা যাক, একটি বাড়ির মাসিক খাজনা হলো ৪০০০ টাকা। এর মধ্যে ভ‚মি ব্যবহারের জন্য ১৫০০ টাকা, মূলধনের সুদ ১০০০ টাকা, বাড়ি দেখাশুনার জন্য ৮০০ টাকা এবং ঝুঁকি বহনের জন্য ৭০০ টাকা দেওয়া হলো। এসব অর্থের পরিমাণ হলো (১৫০০+১০০০+৮০০+৭০০) = ৪০০০ টাকা। এই অর্থের পরিমাণই হলো খাজনা।
নিট খাজনা (Net Rent)ঃ
অর্থনীতিতে শুধুমাত্র জমি ব্যবহারের জন্য জমির মালিককে যে পরিমাণ অর্থ প্রদান করা হয় তাকে নীট বা অর্থনৈতিক খাজনা বলে। একে ’বিশুদ্ধ বা অর্থনৈতিক খাজনাও বলা হয়। মোট খাজনা হতে মূলধনের সুদ, দেখাশুনার খরচ, ও ঝুঁকি বহনের মুনাফা বাদ দিলে যা অবশিষ্ট থাকে তাকে নীট বা অর্থনৈতিক খাজনা বলে।
সুতরাং নীট বা অর্থনৈতিক খাজনা = মোট খাজনা – (মূলধন বিনিয়োগবাবদ সুদ + প্রাপ্তিযোগ্য মজুরি + মালিক
কর্তৃক সরকারকে প্রদত্ত কর + ঝুঁকি গ্রহণের জন্য মুনাফা)
মনে করি, কোন বাড়ির মোট খাজনা ৪৫০০ টাকা। এক্ষেত্রে জমি ব্যবহারের জন্য প্রদেয় অর্থের পরিমাণ ২৫০০ টাকা, মূলধন বিনিয়োগ বাবদ সুদ ১০০০ টাকা, প্রাপ্তিযোগ্য মজুরী ৬০০ টাকা, মালিক কর্তৃক সরকারকে প্রদত্ত কর ৩০০ টাকা এবং ঝুঁকি গ্রহণের জন্য মুনাফা ১০০ টাকা।এক্ষেত্রে…
নীট খাজনা = ৪৫০০ - (১০০০+৬০০+৩০০+১০০) টাকা
=(৪৫০০ - ২০০০) টাকা
=২৫০০ টাকা
=জমি ব্যবহারের জন্য প্রদেয় অর্থের পরিমাণ।
আজকে আমরা দেখলাম কিছু পার্থক্য মোট খাজনা এবং নিট খাজনার মধ্যে। এইসব পার্থক্য আপনারা যেকোনো জায়গায় ব্যবহার করতে পারবেন। এই সব মোট খাজনা এবং নিট খাজনার মধ্যে পার্থক্য, বই থেকে সংগ্রহ করা। আশা করি এই পোস্টটি থেকে অনেক উপকারিত হয়েছেন। অনুগ্রহ করে আমাদের পোস্টগুলো আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আসসালামু আলাইকুম:)