ফুলের বাগান সবার মনেই আছে, ফুল ফুটাতে সবাই নাহি পারে – ভাবসম্প্রসারণ

প্রিয় শিক্ষার্থীরা কেমন আছো আশা করি ভালো আছো, আজকে তোমাদের জন্য আমরা নিয়ে এসেছি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ভাবসম্প্রসারণ “ফুলের বাগান সবার মনেই আছে, ফুল ফুটাতে সবাই নাহি পারে ”। চলো এই ভাবসম্প্রসারণটি পড়ে নেয়।

ফুলের বাগান সবার মনেই আছে, ফুল ফুটাতে সবাই নাহি পারে - ভাবসম্প্রসারণ

ফুলের বাগান সবার মনেই আছে, ফুল ফুটাতে সবাই নাহি পারে ভাবসম্প্রসারণ

ভাব-সম্প্রসারণ : সকল মানুষই সদ্গুণাবলির অধিকারী। কিন্তু প্রত্যেকে এর বিকাশ ঘটাতে পারে না।

প্রকৃতির রাজ্যে ফুল তার স্বীয় গুণাবলি ও বৈশিষ্ট্যের জন্যে এক বিশিষ্ট স্থান অধিকার করে আছে। তাই সৌন্দর্যের আকর হিসেবে একান্ত সখ করে মানুষ গড়ে তোলে ফুলের বাগান। বিধাতার শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষের মনও ফুলের বাগানের মতো। বাগানের ফুল যেমন মানুষকে আনন্দ দিয়ে থাকে, তেমনি মানুষের বিভিন্ন গুণও অপরকে আনন্দ দিতে পারে। প্রেম-প্রীতি, মায়া-মমতা, পরোপকার, সহমর্মিতা, সহানুভূতি, সমবেদনা প্রভৃতি গুণাবলির অনুশীলনে ও ব্যবহারে স্বীয় মনোরাজ্যে গড়ে তুলতে পারে ফুলের বাগান তথা সদ্গুণাবলির ভাণ্ডার। ফুলের মতো সৌরভ ছড়াবে তার কাজ-কর্ম ও আচার-ব্যবহারে। প্রেম-প্রীতিতে বেঁধে নেবে সে বিশ্বসংসারকে। কিন্তু অনেক মানুষ রিপুর তাড়নায় বিভোর হয়ে নিজ নিজ ক্ষমতা ও গুণাবলিকে ভুলে যায় এবং পশুর মতো জীবনযাপন করে। তাই তাদের মনের সুকুমার বৃত্তিগুলোকে ফুলের মতো ফুটিয়ে তুলতে পারে না এবং তাদের পক্ষে উদার হওয়াও সম্ভব হয় না। ফুল-ফলের বাগানের মতো একটি মন সকলের মধ্যে থাকা সত্ত্বেও সবাই ঐ মনের-বাগানে ফুল ফোটাতে পারে না; অর্থাৎ বহু সদ্গুণের অধিকারী হয়েও সে তার বিকাশ ঘটাতে পারে না। 

মানুষকে স্বীয় কর্ম ও সাধনা দিয়ে প্রতিভার প্রতিফলন ঘটাতে হয়। প্রতিটি মানুষের মনের কোমল বৃত্তিগুলো যখন বাগানের অসংখ্য ফুলের মতো প্রস্ফুটিত হবে তখনই পৃথিবী হয়ে উঠবে সুখ ও শান্তির আবাসস্থল।

বিকল্প ১

মূলভাব : প্রত্যেক মানুষই ফুল ভালোবাসে। ফুল পেতে চাইলে বাগান করতে হয়, ফুলের গাছ লাগাতে হয়, গাছের যত্ন নিতে হয়। তার পরই কেবল বাগানের গাছে ফুল ফোটে। বাগানে ফুল না ফুটলে শুধু গাছের সৌন্দর্যে মন ভরে না। বাগানের সার্থকতা ফুল ফোটানোতে। 

সম্প্রসারিত ভাব : আমাদের জীবন ফুলের বাগানের মতো। আমরা মনের মাটিতে আকাঙ্ক্ষার বীজ রোপন করি, তাতে গাছ জন্মায় আমাদের আকাঙ্ক্ষারূপ বৃক্ষ শত শাখায় পত্র-ফুষ্পে বিকশিত হতে চায়। জ্ঞান ও কার্যে জীবনকে পূর্ণতা দান করতে চায়। চেষ্টা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে জীবনরূপ বাগানকে ফুলে-ফলে ভরে তোলা যায়। পরিশ্রম ছাড়া শুধু স্বপ্ন দিয়ে জীবনকে সুন্দর করার কোনো পথ নেই। জ্ঞান, সেবা, আদর্শ, ত্যাগ, শিক্ষা, মানুষের জীবনকে সুন্দর ও মহৎ করে। এতগুলো গুণের আকাঙ্ক্ষা সবারই আছে। কিন্তু সকল মানুষ এ গুণগুলোকে সার্থকভাবে বিকশিত করে তুলতে পারে না। জীবনকে জ্ঞানময় ও পরিপুর্ণ করতে পারে না। তার কারণ একনিষ্ঠ চেষ্টার অভাব। মানুষের মহত্তর ভাবনা পুষ্পের ন্যায় বিকশিত হতে চায়। চেষ্টা ও পরিশ্রম দিয়ে জীবনরূপ বাগানকে ফুলে ফুলে ভরে তোলা যায়। কিন্তু নিষ্ঠার অভাবে জীবনক্ষেত্রকে সুন্দর করে অনেকেই ফুল ফোটাবার মতো অনুকূল অবস্থানে আনতে পারে না। তাই মনের বাসনা মনের মধ্যে গুমরে মরে। বাস্তবে তা পূর্ণতা পায় না। উপযুক্ত পরিচর্যার অভাবে মনের অনেক মহৎ বৃত্তি অন্তরেই শুকিয়ে যায়। সুন্দর মনেই সুন্দর বাসনার জন্ম। এদিক থেকে দেখলে আগে চাই মনের সৌন্দর্য, যে সৌন্দর্য সবারই তরে নিজেকে বিলীন করবে। এজন্যই মানুষের মনকে, মনের বাসনাকে বিকশিত করতে হলে জ্ঞান, কর্ম ও শিক্ষা দরকার। শিক্ষারূপ জল ঢাললেই মনরূপ মাটিতে সুফলরূপে বাগান শোভায়, সৌন্দর্যে, সুগন্ধে চারদিকে আমোদিত করে দিতে পারে। ‘কষ্ট করলে কেষ্ট মেলে’ -এ নীতির আদর্শে সবাইকে মনের গহীনে লুক্কায়িত বাসনাকে বাস্তবে রূপ দেয়ার জন্য -ফুলের গাছ লাগাতে এবং ফুল ফোটাতে সচেষ্ট হতে হবে। 

শুধু বাগান তৈরি করলেই চলবে না। বাগানকে যথাযথ পরিচর্যার মাধ্যমে ফুল ফোটাতে হবে। ফুল ফুটলেই কেবল বাগানের সার্থকতা। আমাদের জীবনরূপ বাগানকে বিকশিত করতে হলে দরকার ঐকান্তিক সাধনা, অপরিসীম নিষ্ঠা। তাই আমাদের প্রত্যেকেরই কর্মঠ হওয়ার মনোভাব গড়ে তুলতে হবে। নইলে জীবনের পূর্ণাঙ্গ বিকাশ ঘটানো অসম্ভব।

বিকল্প ২

মূলভাব : প্রত্যেক মানুষই ফুল ভালােবাসে। ফুল পেতে চাইলে বাগান করতে হয়, ফুলের গাছ লাগাতে হয়, গাছের যত্ন নিতে হয়। তার পরই কেবল বাগানের গাছে ফুল ফোটে। বাগানে ফুল না ফুটলে শুধু গাছের সৌন্দর্যে মন ভরে না। বাগানের সার্থকতা ফুল ফোটানােতে।সম্প্রসারিত-ভাব : আমাদের জীবন ফুলের বাগানের মতাে। আমরা মনের মাটিতে আকাঙ্ক্ষার বীজ রােপন করি, তাতে গাছ জন্মায়- আমাদের আকাঙ্ক্ষারূপ বৃক্ষ শত শাখায় পুত্র-পুষ্পে বিকশিত হতে চায়। জ্ঞান ও কার্যে জীবনকে পূর্ণতা দান করতে চায়। চেষ্টা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে জীবনরূপ বাগানকে ফুলে-ফলে ভরে তােলা যায়। পরিশ্রম ছাড়া শুধু স্বপ্ন দিয়ে জীবনকে সুন্দর করার কোনাে পথ নেই। জ্ঞান, সেবা, আদর্শ, ত্যাগ, শিক্ষা মানুষের জীবনকে সুন্দর ও মহৎ করে। এতগুলো গুণের আকাঙ্ক্ষা সবারই আছে। কিন্তু সকল মানুষ এ গুণগুলােকে সার্থকভাবে বিকশিত করে তুলতে পারে না।

জীবনকে জ্ঞানময় ও পরিপূর্ণ করতে পারে না। তার কারণ একনিষ্ঠ চেষ্টার অভাব। মানুষের মহত্তর ভাবনা পুষ্পের ন্যায় বিকশিত হতে চায়। চেষ্টা ও পরিশ্রম দিয়ে জীরনরূপ বাগানকে ফুলে ফুলে ভরে তােলা যায়। কিন্তু নিষ্ঠার অভাবে জীবনক্ষেত্রকে সুন্দর করে অনেকেই ফুল ফোটাবার মতাে অনুকূল অবস্থানে আনতে পারে না। তাই মনের বাসনা মনের মধ্যে গুমরে মরে। বাস্তবে তা পূর্ণতা পায় না। উপযুক্ত পরিচর্যার অভাবে মনের অনেক মহৎ বৃত্তি অন্তরেই শুকিয়ে যায়। সুন্দর মনেই সুন্দর বাসনার জন্ম। এদিক থেকে দেখলে আগে চাই মনের সৌন্দর্য, যে সৌন্দর্য সবারই তরে নিজেকে বিলীন করবে। এজন্যই মানুষের মনকে, মনের বাসনাকে বিকশিত করতে হলে জ্ঞান, কর্ম ও শিক্ষা দরকার। শিক্ষারূপ জল ঢাললেই মনরূপ, মাটিতে শােভায়, সৌন্দর্যে, সুগন্ধে চারদিকে আমােদিত করে দিতে পারে। কষ্ট করলে কেষ্ট মেলে’-এ নীতির আদর্শে সবাইকে সুফলরূপে. বাগান মনের গহীনে লুক্কায়িত বাসনাকে বাস্তবে রূপ দেয়ার জন্য ফুলের গাছ লাগাতে এবং ফুল ফোটাতে সচেষ্ট হতে হবে। শুধু বাগান তৈরি করলেই চলবে না। বাগানকে যথাযথ পরিচর্যার মাধ্যমে ফুল ফোটাতে হবে। ফুল ফুটলেই কেবল বাগানের সার্থকতা। আমাদের জীবনরূপ বাগানকে বিকশিত করতে হলে দরকার ঐকান্তিক সাধনা, অপরিসীম নিষ্ঠা। তাই আমাদের প্রত্যেকেরই কর্মঠ হওয়ার মনােভাব গড়ে তুলতে হবে। নইলে জীবনের পূর্ণাঙ্গ বিকাশ ঘটানাে অসম্ভব।

আশা করি তোমরা এই ভাবসম্প্রসারণটি বুঝতে পেরেছো। আমাদের সাথেই থাকো।

Leave a Comment