শিশুদের নিয়ে ইসলামিক উক্তি: আমরা হয়ত অনেকে অনলাইন থেকে শিশুদের নিয়ে ইসলামিক উক্তি খোজার চেষ্টা করছি। আমাদের সবার প্রায় একটি ফেসবুক প্রোফাইল রয়েছে। আমরা সেখানে বিভিন্ন রকমের উক্তি দিয়ে থাকি। তাই আজকে আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি কিছু অসাধারণ শিশুদের নিয়ে ইসলামিক উক্তি এর জন্য। এগুলো আপনারা স্ট্যাটাস হিসেবে দিতে পারেন। তো চলুন দেখে আসা যাক কিছু ভালো উক্তি বা স্ট্যাটাস:

ছোট বাচ্চাদের নিয়ে ইসলামিক স্ট্যাটাস
“শিশুরা হচ্ছে ভেজা মাটির মতো, এর উপর যা কিছুই পতিত হয় তার ছাপ ফুটে ওঠে”
“বড়দের কথা শোনার ক্ষেত্রে শিশুরা খুব দক্ষ নয়, তবে বড়দের অনুসরণ করার ক্ষেত্রে তারা কখনো ব্যর্থ হয় না”
“শিশুদের গড়ে তোলার সবচেয়ে উত্তম পন্থা হল তাদেরকে আনন্দ দেয়া”
“সমাজ কীভাবে শিশুদের প্রতি আচরণ করে তার মধ্য দিয়ে সমাজের চেহারা ফুটে ওঠে”
“শিশুদের জন্য যে কিছু করে, সে আমার কাছে নায়ক”
“শিশুদের দেখলে আমার দুটি অনুভূতি জেগে ওঠে- একটি হল তাদের জন্য আদর আরেকটি হল সম্মান”
“শিশুরা হচ্ছে বাগানের কাদা মাটির মত। তাদেরকে খুব সতর্ক ও আদর-সোহাগ দিয়ে যত্ন করতে হবে”
“শিশুরা হচ্ছে এমন একপ্রকার প্রাণী, যারা নিজেরা নিজেদের জগত তৈরি করে”
শিশুদের নিয়ে ইসলামিক উক্তি
- একটি শিশুকে সব সময় আল্লাহর বাণী পড়ে শোনাতে হবে
- তাকে প্রথম শিক্ষা দিতে হবে আরবি অক্ষরজ্ঞান শুরু করলে প্রথম শিখাইতে হবে আলিফ
- মেয়ে শিশুকে সর্বদা পর্দার ভিতর রাখতে হবে
- ছেলে শিশু কে পর্দার ভিতর রাখতে হবে
- 7 বছর বয়স হলে তাকে রোজা রাখার প্রতি তাগিদ দিতে হবে
- পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুকে মা-বাবার সাথে রাখতে পারবে তারপর শিশুটিকে আলাদা বিছানা দিতে হবে
- সাত বছর বয়সের আগে তাকে নামাজের শিক্ষা দিতে হবে
সেজদা অবস্থায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পিঠে বাচ্চার আরোহণ
শাদ্দাদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘর থেকে বের হলেন মাগরিব বা এশার নামায পড়ানোর জন্য। হাসান বা হুসাইনকে তিনি বহন করছিলেন। অতঃপর তিনি সামনে গেলেন এবং তাকে রাখলেন। এরপর তিনি নামাযের মধ্যে একটি দীর্ঘ সেজদা করলেন। আমার পিতা বলেন যে, ‘আমি আমার মাথা উত্তোলন করলাম আর দেখতে পেলাম সেজদাহরত অবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাঁধে একটি শিশু। আমি আমার সেজদায় ফিরে আসলাম।
যখন রাসূলুলাহ সলালাহু আলাইহি ওয়া সালাম নামায সম্পন্ন করলেন তখন লোকেরা বলল, ‘হে আল্লাহর রাসূল! নিশ্চয়ই আপনি নামাজের মধ্যে একটা দীর্ঘ সেজদা করেছেন, যে কারণে আমরা মনে করলাম হয়তো কোন কিছু হয়েছে অথবা আপনার কাছে ওহী আসছে।’ তিনি বললেন, ‘এগুলোর কোনটাই হয়নি। তবে আমার একটি সন্তান আমার পিঠে আরোহণ করেছিলো, তাই আমি তার প্রয়োজন পূরণ না করে তাড়াহুড়ো করতে অপছন্দ করলাম।’ (নাসায়ী ১১৪১, আহমাদ ৪৯৩/৩)
Also Read: বন্ধু নিয়ে উক্তি
শিশু বাচ্চাদের সালাম দেয়া
আনাস ইবন মালেক রা. থেকে বর্ণিত যে, তিনি শিশু বাচ্চাদের নিকট দিয়ে অতিক্রম করার সময় তাদের সালাম দিতেন এবং বলতেন, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমনটি করতেন।’ (সহীহ আল-বুখারি ৬২৪৭, সহীহ মুসলিম ১৭০৮/৪)
রাসূলের কোলে শিশুদের প্রস্রাব
উম্মে কায়স বিনতে মিহসান থেকে বর্ণিত, তিনি তার দুগ্ধপোষ্য শিশুকে নিয়ে রাসূলের দরবারে আসলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে তার কোলে রাখলেন, সে তার কোলে প্রস্রাব করে দিল। তারপর তিনি পানি নিয়ে আসতে বললেন এবং পানি ছিঁটিয়ে দিলেন এবং তা ধৌত করেননি। (সহীহ আল-বুখারি ২২৩)
এ ছাড়াও আরো অনেক ক্ষেত্র রয়েছে যা দ্বারা শিশুদের সাথে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উত্তম আচরণ, সুন্দর ব্যবহারের বিষয়গুলোর বর্ণনা রয়েছে। আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোসহ বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থী ও শিশুদের ওপর শারীরিক যে নির্যাতন করা হয় তা থেকে সরে এসে রাসূলের শেখান পদ্ধতিই অনুসরণ করা উচিত।
বড়দের ওপর শিশুদের অগ্রাধিকার দেয়া
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার ডান পাশের শিশু ছেলেকে বড়দের আগে শরবত দিয়েছেন। এ ব্যাপারে সাহল ইবন সায়াদ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এক পেয়ালা শরবত আনা হল। তার থেকে তিনি শরবত পান করলেন এবং তার ডান পাশে ছিল দলের সবচেয়ে ছোট একটি ছেলে, আর বড়রা ছিল তার বাম পার্শ্বে। তাই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘হে ছেলে তুমি কি আমাকে অনুমতি দেবে যে, আমি তা বড়দের আগে দেব?’ ছেলেটি বলল, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আপনার অনুগ্রহ লাভের ব্যাপারে আমি অন্য কাউকে আমার উপর প্রাধান্য দেব না।’অতএব রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে দিলেন। (সহীহ আল-বুখারি ২৩৫১)
অন্য বর্ণনায় এসেছে, তিনি ছেলেটিকে বললেন, ‘তুমি কি আমাকে অনুমতি দেবে এদের দেওয়ার।’ ছেলেটি বলল, ‘না। আল্লাহর কসম! হে আল্লাহর রাসূল! আপনার কাছ থেকে কিছু লাভ করার ব্যাপারে অন্য কাউকে প্রাধান্য দেব না। বর্ণনাকারী বলেন অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার হাতে রাখলেন।’
Also Read: বিগমেট ট্যাবলেট এর কাজ, খাওয়ার নিয়ম, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
উম্মে খালেদের সাথে হাবশী ভাষায় কৌতুক
এ ব্যাপারে উম্মে খালেদ বিনতে খালেদ ইবন সাঈদ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি আমার বাবার সাথে রাসূলের নিকট আসলাম, তখন আমার গায়ে হলুদ বর্ণের জামা ছিল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘ছানাহ! ছানাহ!’’ এটি হাবশী ভাষার শব্দ যার অর্থ, চমৎকার! চমৎকার! তিনি বলেন- ‘অতঃপর আমি নবুওয়তের মোহর নিয়ে খেলা করতে গেলাম। আমাকে আমার পিতা ধমক দিলেন। কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তাকে ধমক দিও না।’ অতঃপর বলেন, ক্ষয় কর এবং জীর্ণ কর, অতঃপর ক্ষয় কর এবং জীর্ণ কর, অতঃপর আবার ক্ষয় কর এবং জীর্ণ কর।’ আব্দুল্লাহ বলেন, অতঃপর সে মহিলা অনেকদিন জীবিত ছিল এমনকি তার কথা বর্ণনা করা হতো (যে ওমুক দীর্ঘজীবি হয়েছে)। (সহীহ আল-বুখারি ৩০৭১)
অর্থাৎ বর্ণনাকারী তার দীর্ঘ জীবনের কথা বুঝিয়েছেন। অনেকে বলেছেন, উম্মে খালেদের মত আর কেহ এত দীর্ঘ জীবন লাভ করেনি।
শিশুদের নিয়ে ইসলামিক উক্তি,ছোট বাচ্চাদের নিয়ে ইসলামিক স্ট্যাটাস
আবু উমায়ের সাথে তার কৌতুক
আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে প্রিয় ছিল আমার এক ভাই, তার নাম আবু উমায়ের। আমার মনে আছে, সে যখন এমন শিশু যে মায়ের বুকের দুধ ছেড়েছে মাত্র। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কাছে আসতেন এবং বলতেন, ‘হে আবু উমায়ের! কি করেছে তোমার নুগায়ের?’ নুগায়ের হল এমন একটি ছোট পাখি যার সাথে আবু উমায়ের খেলা করত। নুগায়ের মারা গিয়েছিল। (সহীহ আল-বুখারি: ৬২০৩)
নামাযরত অবস্থায় যয়নব রা. এর মেয়েকে কোলে তুলে নেওয়া
আবু কাতাদাহ থেকে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামায পড়া অবস্থায় উমামা বিনতে যয়নবকে বহন করছিলেন, ‘যখন তিনি সেজদা করতেন তখন তাকে রেখে দিতেন। আর যখন দাঁড়াতেন তখন তাকে কোলে তুলে নিতেন।’ (সহীহ আল-বুখারি ৫১৬)
শিশু বাচ্চারা কাঁদার সময় তাঁর নামায পড়া সংক্ষিপ্ত করা
তিনি কোনো শিশু বাচ্চার কাঁদার আওয়াজ শুনলে সালাত সংক্ষিপ্ত করতেন। এ ব্যাপারে আবু কাতাদাহ তার পিতা হতে ও তার পিতা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যখন আমি সালাতে দাঁড়াই তখন ইচ্ছা থাকে নামায দীর্ঘ করব। কিন্তু যখন কোনো শিশুর কান্নার আওয়াজ শুনি, তখন তার মায়ের কষ্ট হবে ভেবে আমি নামায সংক্ষেপ করি।’(সহীহ আল-বুখারি: ৭০৭)
ছোট বাচ্চাদের নিয়ে ইসলামিক স্ট্যাটাস
- একটি শিশুকে সব সময় আল্লাহর বাণী পড়ে শোনাতে হবে
- তাকে প্রথম শিক্ষা দিতে হবে আরবি অক্ষরজ্ঞান শুরু করলে প্রথম শিখাইতে হবে আলিফ
- পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুকে মা-বাবার সাথে রাখতে পারবে তারপর শিশুটিকে আলাদা বিছানা দিতে হবে
- সাত বছর বয়সের আগে তাকে নামাজের শিক্ষা দিতে হবে
- মেয়ে শিশুকে সর্বদা পর্দার ভিতর রাখতে হবে
- ছেলে শিশু কে পর্দার ভিতর রাখতে হবে
- 7 বছর বয়স হলে তাকে রোজা রাখার প্রতি তাগিদ দিতে হবে
তো আজকে আমরা দেখলাম কিছু শিশুদের নিয়ে ইসলামিক উক্তি। আশা করি আপনাদের অনেক ভালো লেগেছে। যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অব্যশয় আমাদের অন্যান্য পোস্ট পড়ে দেখবেন। শিশুদের নিয়ে ইসলামিক উক্তির মতো ভালো উক্তি পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।
শিশুদের নিয়ে ইসলামিক উক্তি,ছোট বাচ্চাদের নিয়ে ইসলামিক স্ট্যাটাস