বিদ্যা বিনয় দান করে বিনয় দ্বারা জগৎ বশীভূত হয় – ভাবসম্প্রসারণ

প্রিয় শিক্ষার্থীরা কেমন আছো আশা করি ভালো আছো, আজকে তোমাদের জন্য আমরা নিয়ে এসেছি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ভাবসম্প্রসারণ “বিদ্যা বিনয় দান করে বিনয় দ্বারা জগৎ বশীভূত হয় ”। চলো এই ভাবসম্প্রসারণটি পড়ে নেয়।

বিদ্যা বিনয় দান করে বিনয় দ্বারা জগৎ বশীভূত হয় ভাবসম্প্রসারণ

বিদ্যা বিনয় দান করে বিনয় দ্বারা জগৎ বশীভূত হয় ভাবসম্প্রসারণ

মূলভাব : মানুষের জীবন গঠনের জন্য বিদ্যার্জন করা অপরিহার্য। বিদ্যা দ্বারা মানুষ যেমন জগতকে জয় করতে পারে, তেমনি বিদ্যা ছাড়া মানুষ জগতে কোন কিছুই লাভ করতে পারে না।

সম্প্রসারিত ভাব : বিদ্যা মানুষের আচরণের পরিবর্তন ঘটায়। বিদ্যার আলো অজ্ঞতা ও মূর্খতার হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করে। বিদ্যার আলোকে আলোকিত না হলে মানুষের জীবন হয়ে উঠে অন্ধকারাচ্ছন্ন। তাই মানুষের মনুষ্যত্ব বিকাশের একমাত্র অবলম্বন হল বিদ্যা। বিদ্যা মানুষের জীবনের অমূল্য সম্পদ। যা দ্বারা মানুষ তার সঠিক পথ খুঁজে পায়। এটি মানুষকে মহৎ গুণের অধিকারী হতে সাহায্য করে। মানুষের চরিত্রের একটি মহৎ গুণ হল বিনয়। আর এটি অর্জন করতে হলে প্রয়োজন শিক্ষার। বিদ্যা যেমন মানুষের মনুষ্যত্ব বিকাশিত করে, তেমনি বিনয়ও মানুষের জীবনকে সুন্দর ও সুদূরপ্রসারী করে বেড়ে তোলে। স্পর্শমণির ছোঁয়ায় লোহা যেমন সোনা হয়ে উঠে তেমনি বিনয়ী চরিত্রের অধিকারী লোকের সংস্পর্শে আসলে মানুষের পশুবৃত্তি ঘুচে যায়, জন্ম নেয় সৎ, সুন্দর, মহৎ জীবনের আকাঙ্ক্ষা। আর চরিত্র যদি নৈতিক অধঃপতনের কবলে পড়ে তাহলে শিক্ষিত সমাজে বিদ্যা হয়ে উঠে মূল্যহীন। শক্তির দ্বারা মানুষ অনেক কিছু করতে পারে কিন্তু যদি বুদ্ধি, বিনয় থাকে তাহলে শক্তি সেখানে মূল্যহীন। যথার্থ বিদ্যার্থী ব্যক্তি যেমন নিজের জীবনকে সাজাতে গোছাতে পারে তেমনি সমাজের এমনকি বিশ্বের মানুষের উপকারে কাজ করতে পারে। আর যদি সেটা সম্ভব হয় তাহলে বিদ্যা অর্জন সার্থক হয়। সমাজ আলোকিত হয়, দেশ ও জাতি প্রগতির পথে এগিয়ে যেতে পারে। এভাবে বিদ্যাকে জীবনের সাথে কাজে লাগাতে পারলে জীবন হয়ে উঠে সুন্দর ও সুখময়।

বিদ্যা মানুষের জীবনের অমূল্য সম্পদ। আর বিদ্যার আলোকে মনুষ্যজীবন হয়ে উঠে আলোকময়। বিদ্যার সাথে যদি বিনয় থাকে তাহলে মনুষ্যজীবন আরো আলোকিত হয়।

বিকল্প ১

মূলভাব: বিদ্যা মানবজীবনের অমূল্য সম্পদ। সত্যিকার মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে এর কোনাে বিকল্প নেই। বিদ্যা অর্জনের মধ্য দিয়েই মানুষ বিনয়ী হতে শেখে। আর বিনয় মনুষ্যত্বের প্রকাশ ঘটায়। বিদ্বান ব্যক্তি নিজের জীবনকে সুন্দর ও সার্থক করে তােলার পাশাপাশি জগতের কল্যাণের প্রতিও দায়বদ্ধ থাকেন। ফলে জগৎ হয়ে ওঠে সুন্দর ও কল্যাণময় ।

ভাবসম্প্রসারণ: বিদ্যাহীন ব্যক্তির জীবন অজ্ঞা ও সংকীর্ণতার অন্ধকারে ডুবে থাকে। সে হয়ে পড়ে বিচার-বুদ্ধিহীন। চোখ থাকলেও মনের চোখ বন্ধ থাকে বলে তার মধ্যে বিনয়, নৈতিকতা, মননশীলতা, পরমতসহিষ্ণুতা- এক কথায় ব্যক্তিত্ব ও মনুষ্যত্বের পরিপূর্ণ স্ফুরণ ঘটে না। অন্ধকারে হাতড়ে বেড়ানাে এ ধরনের মানুষের কাছে জগতের কোনাে প্রত্যাশা নেই, বরং জগতের কাছে এরা বােঝা। অন্যদিকে একজন বিদ্বান লােক কেবল দেখার চোখ দিয়ে পৃথিবীকে দেখেন না, তার মনের চোখও থাকে খােলা। ন্যায়-অন্যায়, ভালাে-মন্দ বােধ তাঁকে বিনয়ী করে তােলে। শিক্ষিত লোক যতই জ্ঞানী হােক না কেন, তার আচরণ যদি ঔদ্ধত্যপূর্ণ হয় সমাজ, দেশ, জাতি, জগৎ কেউই তার দ্বারা উপকৃত হয় না। বর্তমানে জগৎ ছেয়ে গেছে হিংসা, বিদ্বেষ ও অরাজকতায়। বৈষম্যের কালিমায় কলুষিত হয়ে আছে জীবন। এ সকল অবস্থা থেকে পরিত্রাণের অন্যতম উপায় হলাে বিদ্যা। যা মানুষকে বিনয়ী করে তােলে। একজন বিনয়ী ব্যক্তি যতই ধনী হােক তার মধ্যে কোনাে অহংকার থাকে না। মায়া-মমতা ও সৌহার্দ্যের মাধ্যমে তিনি পৃথিবী অর্থাৎ পৃথিবীর মানুষের মন জয় করতে সক্ষম হন। পৃথিবীতে বিরাজ করে শান্তি, শৃঙ্খলা ।

বিদ্যার্জনের মাধ্যমে অর্জিত বিনয় মানুষকে মনুষ্যত্বের মহিমায়উদ্ভাসিত করে। বিনয়ীজনের সংস্পর্শে যে আসে সেও আলােকিত হয়, তার মধ্যেও জাগ্রত হয় মনুষ্যত্ব। আর এ বিনয়ের স্পর্শে মনুষ্যত্বের আলােয় আলােকিত হয় জগৎ।

আশা করি তোমরা এই ভাবসম্প্রসারণটি বুঝতে পেরেছো। আমাদের সাথেই থাকো।

Leave a Comment