ইসলামি অর্থনীতি ও প্রচলিত অর্থনীতির মধ্যে পার্থক্য: আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা, কেমন আছেন আপনারা? আশা করি ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আপনারা নিশ্চয় ইসলামি অর্থনীতি ও প্রচলিত অর্থনীতির মধ্যে পার্থক্য খোজার চেষ্টা করছেন। তাহলে আপনার একদম সঠিক জায়গায় এসেছেন। এখানে আপনারা পেয়ে যাবেন সঠিক ইসলামি অর্থনীতি ও প্রচলিত অর্থনীতির মধ্যে পার্থক্য। তো চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।
ইসলামি অর্থনীতি ও প্রচলিত অর্থনীতির মধ্যে পার্থক্য কি?
ইসলামি অর্থনীতি | প্রচলিত অর্থনীতি |
---|---|
ইসলামী অর্থনীতিতে মানুষ সম্পদের প্রকৃত মালিক নয় বরং ব্যবহারকারী । | অন্যদিকে প্রচলিত অর্থনীতিতে মানুষেই সম্পদের প্রকত মালিক। |
ইসলামী অর্থনীতিতে সম্পদ ইচ্ছামত বন্টন করা যায় না। | অন্যদিকে প্রচলিত অর্থনীতিতে সম্পদ ইচ্ছামত বন্টন করা যায়। |
ইসলামী অর্থনীতিতে প্রত্যেক কাজে ভালো ও কল্যানের বিষয় জড়িয়ে থাকে। | অন্যদিকে প্রচলিত অর্থনীতিতে ভালো মন্দের প্রয়োজন নেই। |
ইসলামী অর্থনীতিতে হালাল ও হারামের বিধি নিষেধে নিয়ন্ত্রিত । | অন্যদিকে প্রচলিত অর্থনীতিতে হালাল ও হারাম বিবেচ্য নয়। |
ইসলামী অর্থনীতিতে সম্পদ ব্যক্তির হাতে পুঞ্জিভুত হওয়ার সুয়োগ নেই। | অন্যদিকে প্রচলিত অর্থনীতিতে তা সম্ভব। |
ইসলামী অর্থনীতিতে নীতি নৈতিকতা প্রধান বিবেচ্য বিষয়। | অন্যদিকে প্রচলিত অর্থনীতিতে নীতি নৈতিকতা তো নাই বরং বস’তান্ত্রিক। |
ইসলামী অর্থনীতিতে কোন অবস্থাতেই উৎপাদন ব্যয় কমানো যাবে না। | অন্যদিকে প্রচলিত অর্থনীতিতে উৎপাদন ব্যয় যে কোন পন্থায় কমানো যাবে। |
ইসলামী অর্থনীতি Value Oriented | অন্যদিকে অন্যদিকে প্রচলিত অর্থনীতি value neutral |
ইসলামী অর্থনীতিতে টাকাকে কমোডিটি হিসাবে বিবেচনা করা হয় না। | অন্যদিকে প্রচলিত অর্থনীতিতে টাকাকে কমোডিটি হিসাবে বিবেচনা করা হয়। |
ইসলামী অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতির সম্ভবনা নেই। | অন্যদিকে প্রচলিত অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতির সম্ভবনা অনেকটাই থাকে। |
ইসলামী অর্থনীতি ব্যাংক বীমা ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান শরীয়ার উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত। | অন্যদিকে প্রচলিত অর্থনীতি সুদের উপর প্রতিষ্ঠিত। অন্যদিকে প্রচলিত অর্থনীতিতে তা করে থাকে। |
ইসলামী অর্থনীতি সুদ মুক্ত অর্থনীতি । | অন্যদিকে প্রচলিত অর্থনীতি সুদ যুক্ত অর্থনীতি। |
ইসলামী অর্থনীতিতে হারাম বা সমাজের জন্য ক্ষতিকর দ্রব্য উৎপাদর বা ব্যবসা করা যাবেনা যদিও তা অধিক লাভজনক হয়। |
ইসলামী অর্থনীতি (Islamic economics )
ইসলামী অর্থনীতি (الاقتصاد الإسلامي) হলো কুরআন ও সুন্নাহ মোতাবেক অর্থনৈতিক লেনদেন ব্যবস্থা। ইসলামী কৃষ্টি ও তামাদ্দুন সমৃদ্ধ যে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে তাই ইসলামী অর্থনীতি। প্রখ্যাত সমাজ বিজ্ঞানী ইবনে খালদুন বলেন- ইসলামী অর্থনীতি হলো জনসাধারণের সাথে সম্পর্কিত বিজ্ঞান। মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর নীতি-পদ্ধতি অনুসরণে সৃষ্টির লালন-পালনের যাবতীয় জাগতিক সম্পদের সামগ্রিক কল্যাণধর্মী ব্যবস্থাপনাই ইসলামী অর্থনীতি।
প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ডঃ এম নেজাতুল্লাহ সিদ্দিকী বলেন- “ইসলামী অর্থনীতি সমকালীন অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় মুসলিম চিন্তাবিদদের জবাব”। ডঃ এম এ মান্নান বলেন- “ইসলামী অর্থনীতি হলো একটি সামাজিক বিজ্ঞান যা কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে মানুষের অর্থনৈতিক সমস্যাবলি নিয়ে আলোচনা করে”।
প্রচলিত অর্থনীতি (Conventional economics)
সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থার ন্যায় ব্যক্তিমালিকানায় অর্থনৈতিক কোনরূপ সম্পদ থাকে না। এ অর্থব্যবস্থায় সম্পদের ওপর ব্যক্তিমালিকানার পরিবর্তে রাষ্ট্রীয় মালিকানা স্বীকৃত থাকে। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা কর্তৃপক্ষ (Central Planning Authority) কর্তৃক দেশের উৎপাদন, বিনিময়, বণ্টন, ভোগ প্রভৃতি সকল অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সম্পদিত হয়।
অর্থনীতিবিদ জে. এফ. র্যাগান ও এল. বি. থমাস বলেন, ‘Socialistic Economy: an economic system in which property is publicly owned and central authorities co-ordinate economic decisions’.[16] সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা হ’ল এরূপ একটি অর্থব্যবস্থা যেখানে সম্পত্তির রাষ্ট্রীয় মালিকানা বিদ্যমান এবং কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
আজকে আমরা দেখলাম কিছু পার্থক্য ইসলামি অর্থনীতি ও প্রচলিত অর্থনীতির মধ্যে। এইসব পার্থক্য আপনারা যেকোনো জায়গায় ব্যবহার করতে পারবেন। এই সব ইসলামি অর্থনীতি ও প্রচলিত অর্থনীতির মধ্যে পার্থক্য, বই থেকে সংগ্রহ করা। আশা করি এই পোস্টটি থেকে অনেক উপকারিত হয়েছেন। অনুগ্রহ করে আমাদের পোস্টগুলো আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আসসালামু আলাইকুম:)