স্থুল সংকেত ও আনবিক সংকেতের মধ্যে পার্থক্য কি?

স্থুল সংকেত ও আনবিক সংকেতের মধ্যে পার্থক্য: আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা, কেমন আছেন আপনারা? আশা করি ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আপনারা নিশ্চয় স্থুল সংকেত ও আনবিক সংকেতের মধ্যে পার্থক্য খোজার চেষ্টা করছেন। তাহলে আপনার একদম সঠিক জায়গায় এসেছেন। এখানে আপনারা পেয়ে যাবেন সঠিক স্থুল সংকেত ও আনবিক সংকেতের মধ্যে পার্থক্য। তো চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।

স্থুল সংকেত ও আনবিক সংকেতের মধ্যে পার্থক্য কি?

স্থুল সংকেত ও আনবিক সংকেতের মধ্যে পার্থক্য কি?

আনবিক সংকেতস্থুল সংকেত
কোন যৌগের অণুস্থিত প্রতিটি মৌলের পরমাণুগুলোর প্রকৃত সংখ্যাকে প্রতীকের মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত রূপে প্রকাশ করাকে যৌগটির আণবিক সংকেত বলে। অন্যদিকে, যে সংকেত দ্বারা অণুতে বিদ্যামান পরমাণুসমূহের সরল অনুপাত প্রকাশ করে তাকে স্থূল সংকেত বলে।
আণবিক সংকেত দ্বারা বিভিন্ন যৌগে মৌলের পরমাণু সমূহের প্রকৃত সংখ্যা জানা যায়।অন্যদিকে স্থূল সংকেত দ্বারা যৌগের বিভিন্ন মৌলের পরমাণু সমূহের প্রকৃত সংখ্যা জানা যায় না।
আণবিক সংকেত মৌল অথবা যৌগের হতে পারে।অন্যদিকে স্থূল সংকেত শুধুমাত্র যৌগের ক্ষেত্রে হতে পারে।
একটি আণবিক সংকেত কেবল একটি নির্দিষ্ট যৌগের ক্ষেত্রে হয়। যেমনঃ অ্যাসিটিলিনের আণবিক সংকেত C₂H₂ ও বেনজিনের আণবিক সংকেত C₆H₆ .অন্যদিকে একটি স্থূল সংকেত একাধিক যৌগের হতে পারে। যেমনঃ অ্যাসিটিলিন ও বেনজিন উভয়ের স্থূল সংকেত CH.
বস্তুর আণবিক ভরকে স্থুল সংকেত অনুসারে বস্তুটির ভর দ্বারা ভাগ করে যে সংখ্যা পাওয়া যায় তা বস্তুটিতে বর্তমান মৌলসমূহের পরমাণুর সংখ্যার পরিমাণ নির্দেশ করে। অন্যদিকে পদার্থের অণুতে বিভিন্ন মৌলের শতকরা পরিমাণ ও তাদের পারমাণবিক ভর থেকে স্থূল সংকেত গণনা করা হয়।

স্থূল সংকেত (Empirical Formulae)

যে সংকেত অণুতে বর্তমান বিভিন্ন মৌলের পরমাণুর সরল অনুপাত প্রকাশ করে তাকে স্থূল সংকেত বলে। উদাহরণস্বরূপ, হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড (H2O2)-এর অণুতে দুটি হাইড্রোজেন পরমাণু ও দুটি অক্সিজেন পরমাণু আছে এবং পরমাণুগুলোর সংখ্যার অনুপাত হচ্ছে ১ঃ১। সুতরাং হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের স্থূল সংকেত HO। অনুরূপভাবে বেনজিন ও এসিটিলিনের স্থুল সংকেত CH। পদার্থের অণুতে বিভিন্ন মৌলের শতকরা পরিমাণ ও তাদের পারমাণবিক ভর থেকে স্থূল সংকেত গণনা করা হয়।

আণবিক সংকেত (Molecular formula)

কোন যৌগের অণুতে উপস্থিত উপাদান মৌলসমূহের পরমাণুর প্রকৃত সংখ্যা সহ উপস্থাপনাকে আণবিক সংকেত বলে। যেমন, হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের একটি অণুতে দুটি হাইড্রোজেন পরমাণু ও দুটি অক্সিজেন পরমাণু আছে। সুতরাং হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের আণবিক সংকেত H2O2 হবে। আণবিক সংকেত স্থূল সংকেতের সরল গুণিতক। স্থূল সংকেত যদি CH হয়, তবে আণবিক সংকেত CH, C₂H₂, C3H3, C4H4, C5H5, C₆H₆ ইত্যাদি হতে পারে। আণবিক ভর জানা থাকলে মূল সংকেত থেকে আণবিক সংকেত বের করা যায়। বস্তুর আণবিক ভরকে স্থুল সংকেত অনুসারে বস্তুটির ভর দ্বারা ভাগ করে যে সংখ্যা পাওয়া যায় তা বস্তুটিতে বর্তমান মৌলসমূহের পরমাণুর সংখ্যার পরিমাণ নির্দেশ করে। সে অনুযায়ী আণবিক সংকেত লিখতে হয়। যেমন বেনজিনের আণবিক ভর 78। স্থুল সংকেত অনুসারে ভর 13। সুতরাং বেনজিন বর্তমান কার্বন ও হাইড্রোজেন পরমাণুর সংখ্যা 76÷13=6. অতএব বেনজিনের স্থুল সংকেত CH হলেও আণবিক সংকেত C₆H₆।

আজকে আমরা দেখলাম কিছু স্থুল সংকেত ও আনবিক সংকেতের মধ্যে। এইসব পার্থক্য আপনারা যেকোনো জায়গায় ব্যবহার করতে পারবেন। এই সব স্থুল সংকেত ও আনবিক সংকেতের মধ্যে পার্থক্য, বই থেকে সংগ্রহ করা। আশা করি এই পোস্টটি থেকে অনেক উপকারিত হয়েছেন। অনুগ্রহ করে আমাদের পোস্টগুলো আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আসসালামু আলাইকুম:)

Leave a Comment