প্রিয় শিক্ষার্থীরা কেমন আছো আশা করি ভালো আছো, আজকে তোমাদের জন্য আমরা নিয়ে এসেছি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ভাবসম্প্রসারণ “বড়র পিরীতি বালির বাঁধ ”। চলো এই ভাবসম্প্রসারণটি পড়ে নেয়।
বড়র পিরীতি বালির বাঁধ ভাবসম্প্রসারণ
মূলভাব : জগৎ বিচিত্র। এখানে বিচিত্র মানুষের বাস। বড়-ছোট, ধনী-দরিদ্র মানুষের চারণভূমি আমাদের এ পৃথিবী। আশা-আকাঙ্ক্ষা ভালোবাসার মাধ্যমে ছোট বা হীন শ্রেণীর প্রত্যাশা থাকে বড়দের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখতে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে তা বাস্তবে রূপ নেয় না।
সম্প্রসারিত ভাব : মানব সমাজের দিকে দৃষ্টিপাত করলে আমাদের দৃষ্টিগোচর হবে যে, মান-সম্মান, সামাজিক প্রতিপত্তি, ধন-সম্পদ ইত্যাদির দিক থেকে মনুষ্য জাতির মধ্যে যথেষ্ট ব্যবধান বিদ্যমান। আর এ ব্যবধান স্পষ্ট হয়ে উঠে তাদের আবাসস্থল, আচার-আচরণ, সাজ-সজ্জা, চলাফেরা, সুযোগ সুবিধা ভোগ ইত্যাদির মধ্য দিয়ে। এ সমাজে প্রতিটি মানুষ এক একটি ভারসাম্য অবস্থানে রয়েছে। কিন্তু এ অবস্থার ব্যতিক্রম হলেই ঘটে বিপত্তি। আমাদের সমাজে কিছু তথাকথিত ধনী শ্রেণী আছে যারা নিজ স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য দরিদ্র শ্রেণীর লোকদের ব্যবহার করে। আর ঐ সময়ে দরিদ্র শ্রেণীর লোকেরা ধনী শ্রেণীর লোকদের কৃত্রিম আচরণে মুগ্ধ হয়ে তাদেরকে আপন ভাবতে শুরু করে। সে তার নিজের অবস্থাকে ভুলে যায়। সে আবেগের বশবর্তী হয়ে কঠিন বাস্তবতাকে অস্বীকার করতে চায়। সে এ কথা ভুলে যায় যে, তেল এবং জল যেমন কখনও মিশে না তেমনি ধনী-দরিদ্র কখনও এক হতে পারে না। তথাকথিত এ ধনী শ্রেণীর স্বার্থ সিদ্ধি হলেই তাদের প্রকৃত আচরণ ফুটে উঠে। আর তখনই কঠিন বাস্তবতা ঐ দরিদ্র শ্রেণীর কাছে ধরা দেয় এবং তাকে আবার নিজ স্থানে ফিরে আসতে হয়। মূলত অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় দরিদ্র শ্রেণীর প্রতি তথাকথিত ধনী শ্রেণীর মানুষের ভালোবাসা বালির বাঁধের মত। বালির বাঁধ যেমন ঢেউ এলই ভেঙে পড়ে, তেমনি স্বার্থ সিদ্ধি হলেই ধনী শ্রেণীর ভালোবাসা আর থাকে না। তাই প্রত্যেকটা মানুষের উচিত তাদের নিজ নিজ অবস্থানে থেকে সামাজিক ভারসাম্য রক্ষা করা। কেননা এ ভারসাম্যের ব্যতিক্রম ঘটলেই দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে।
মানব সমাজে বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের মধ্যে যে বারসাম্য রয়েছে তাকে আমরা অস্বীকার করতে পরি না। বরং আমাদের উচিত নিজ নিজ অবস্থানে থেকে চিন্তা এবং কাজ করা।
আশা করি তোমরা এই ভাবসম্প্রসারণটি বুঝতে পেরেছো। আমাদের সাথেই থাকো।