প্রিয় শিক্ষার্থীরা কেমন আছো আশা করি ভালো আছো, আজকে তোমাদের জন্য আমরা নিয়ে এসেছি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ভাবসম্প্রসারণ “অসি অপেক্ষা মসি অধিকতর শক্তিমান ”। চলো এই ভাবসম্প্রসারণটি পড়ে নেয়।
অসি অপেক্ষা মসি অধিকতর শক্তিমান ভাবসম্প্রসারণ
মূলভাব : মানুষকে বিধাতা জ্ঞান দিয়েছেন, বুদ্ধি দিয়েছেন। এই জ্ঞান ও বুদ্ধি দ্বারাই পৃথিবীকে জয় করার ক্ষমতা মানুষের আছে। পার্থিব জীবনে শারীরিক শক্তি বা বল প্রয়োগের কোনো প্রয়োজন নেই।
সম্প্রসারিত ভাব : অসি অর্থ তরবারী। যার ক্ষমতা অত্যধিক, যে মারণাস্ত্রের দ্বারা শত্রু দমন হয়, মুহূর্তে লক্ষ লক্ষ প্রাণ বিনষ্ট হয়। এমন কি গোটা দেশও সমূলে ধ্বংস হয়। আপাতদৃষ্টিতে আসি অপেক্ষা মসীর ক্ষমতা নগণ্য মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে তা সত্য নয়। মসী অপেক্ষা অসি মারাত্মক হলেও তার ক্ষমতা সাময়িক বা ক্ষণস্থায়ী। বিশ্বের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, চেঙ্গিস খান, নাদির শাহ, হিটলার প্রমুখ তাদের মারণাস্ত্রের আঘাতে রক্তের বন্যা বইয়ে দিয়ে দিগ্বিজয়ী বীরের উপাধিতে আখ্যায়িত হলেও ইতিহাসে তারা অক্ষয় আসন লাভ করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাদের কার্যক্রম নৃশংস এবং কলংকিত বিধায় তারা আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। ক্ষণিকের জন্য তার প্রভাব বিস্তার করলেও মৃত্যুর পর তারা নিন্দিত হয়েছে, ধিকৃত হয়েছে এবং চিরতরে হারিয়ে গেছে বিস্মৃতির অতল অন্ধকারে। পক্ষান্তরে, মসী বা লেখনীরূপ অস্ত্রের সাহায্যে যেসব মনীষী তাঁদের জ্ঞানগর্ভ দর্শন, বিজ্ঞান, সাহিত্য, ইতিহাস, চিকিৎসাশাস্ত্র, রাষ্ট্রনীতি প্রভৃতি বিষয়ে বিশ্ব মানবতার কল্যাণে তাদের চিন্তাধারা লিপিবদ্ধ করে গেছেন, তাঁরা মানব-সভ্যতার ইতিহাসে স্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে আছেন। তাঁদের অবদানের কথা মানুষ চিরকাল শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। কাজেই অসি অপেক্ষা মসী অধিকতর শক্তিমান। আর এজন্যই ইংরেজিতে বলা হয়, “The pen is mighter than the sword.”
বিকল্প ১
মন্তব্য : পার্থিব জীবনে যা শক্তি বা বল দিয়ে জয় করা যায় না, তা জ্ঞান ও বুদ্ধি দিয়ে জয় করা যায়।
মূলভাব : মানুষকে বিধাতা জ্ঞান ও বুদ্ধি দিয়ে শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে সৃষ্টি করে এ সুন্দর পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। শারীরিক শক্তি বা বল প্রয়োগে এ পৃথিবীকে জয় করার জন্য স্রষ্টা মানুষকে জ্ঞান বুদ্ধি দেন নি, বরং সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রেখে পৃথিবীকে জয় করার জন্য জ্ঞান বুদ্ধি দিয়েছেন।
সম্প্রসারিত-ভাব : অসি অর্থাৎ, তরবারি; যার ক্ষমতা বিশাল। যে মারণাস্ত্রের সাহায্যে শত্রু দমন হয়, মুতূর্তে লাখ লাখ প্রাণ বিনষ্ট হয়। এমনকি গোটা দেশও সমূলে ধ্বংস হয়। আপাতদৃষ্টিতে অসি অপেক্ষা মসির ক্ষমতা নগণ্য মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে, তা সত্য নয়। কারণ, মসির ক্ষমতা সাময়িক বা ক্ষণস্থায়ী। বিশ্বের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে চেঙ্গিস খান, নাদির শাহ, হিটলার প্রমুখ তাদের মরণাস্ত্রের আঘাতে রক্তের বন্যা বইয়ে দিয়ে দিগ্বজয়ী বীরের আখ্যায় আখ্যায়িত হলেও ইতিহাসে অক্ষয় আসন লাভ করতে তারা ব্যর্থ হয়েছে। ক্ষণিকের জন্য তারা প্রভাব বিস্তার করলেও, তাদের কার্যক্রম নৃশংস ও কলঙ্কিত হওয়ায় মৃত্যুর পর নিন্দিত হয়েছে, ধিক্কৃত হয়েছে এবং চিরতরে হারিয়ে গেছে বিস্মৃতির অতল অন্ধকারে। পক্ষান্তরে, মসি বা লেখনীরূপী অস্ত্রের মাধ্যমে অনেক মনীষী তাঁদের জ্ঞানগর্ভ দর্শন, বিজ্ঞান, সাহিত্য, ইতিহাস, চিকিৎসাশাস্ত্র, রাজনীতি প্রভৃতি বিষয়ে বিশ্ব মানবতার কল্যাণে তাদের চিন্তাধারা লিপিবদ্ধ করে গেছেন, তারা মানবসভ্যতার ইতিহাসে স্মরণীয় ও বরণীয় হয়েছেন। তাদের অবদানের কথা মানুষ চিরকাল শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।
তাই অসি অপেক্ষা মসি অধিকতর শক্তিমান। আর এজন্যই বলা হয়, ‘Pen is mightier than the sword.’ পার্থিব জীবনে যা কিছু শক্তি বা বল দিয়ে জয় করা যায় না, তা জ্ঞান ও বুদ্ধি দিয়ে খুব সহজেই জয় করা যায়।
বিকল্প ২
মানুষকে বিধাতা জ্ঞান ও বুদ্ধি দিয়ে শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে সৃষ্টি করে এই সুন্দর পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। শারীরিক শক্তি বা বল প্রয়ােগে এই পৃথিবীকে জয় করার জন্য স্রষ্টা মানুষকে জ্ঞান-বুদ্ধি দেননি, বরং সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রেখে পৃথিবীকে জয় করার জন্য জ্ঞান-বুদ্ধি দিয়েছেন।
অসি অর্থাৎ তলােয়ার বা তরবারী, যার ক্ষমতা বিশাল। যে মারণাস্ত্রের সাহায্যে শত্রু দমন হয়, মুহূর্তে জীবিত জনকে মৃত অস্তিত্বে পরিণত করা সম্ভব। অন্যদিকে মসী অর্থ হলাে কলম বা লেখনী বস্তু। যার উদ্দেশ্য হচ্ছে মেধার মনন ঘটিয়ে সৃষ্টিশীলতার পরিচয় দেয়া। এমনকি গােটা দেশও সমূলে ধ্বংস হয়। তাই আপাতদৃষ্টিতে অসি অপেক্ষা মসীর ক্ষমতা নগণ্য মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে তা সত্য নয়। কারণ, অসির ক্ষমতা সাময়িক বা ক্ষণস্থায়ী। বিশ্বের ইতিহাস পর্যালােচনা করলে দেখা যায়- চেঙ্গিস খান, নাদির শাহ, হিটলার প্রমুখ তাদের মারণাস্ত্রের সাহায্যে রক্তের বন্যা বইয়ে দিগ্বিজয়ী বীর আখ্যায়িত হলেও ইতিহাসে অক্ষয় সম্মানের আসন লাভ করতে তারা ব্যর্থ হয়েছেন।
ক্ষণিকের জন্য তারা পৃথিবীতে প্রভাব বিস্তার করলেও, তাদের কার্যক্রম নৃশংস ও কলঙ্কিত হওয়ায় মৃত্যুর পর তারা নিন্দিত হয়েছেন, ধিকৃত হয়েছেন এবং চিরতরে হারিয়ে যাচ্ছেন বিস্মৃতির অতল অন্ধকারে। পক্ষান্তরে, মসী বা লেখনীরূপী অস্ত্রের মাধ্যমে অনেক মনীষী তাদের জ্ঞানগর্ভ দর্শন, বিজ্ঞান, সাহিত্য, ইতিহাস, চিকিৎসাশাস্ত্র, রাজনীতি প্রভৃতি বিষয়ে বিশ্ব-মানবতার কল্যাণে তাঁদের চিন্তাধারা লিপিবদ্ধ করে গেছেন। আজ তারা মানব-সভ্যতার ইতিহাসে স্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে আছেন। তাঁদের অবদানের কথা মানুষ চিরকাল শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।
কাজেই অসি অপেক্ষা মসী অধিকতর শক্তিমান। আর এজন্যই বলা হয়, ‘Pen is mightier than the sword.’ এমনকি হাদীস শরীফেও বর্ণনা করা হয়েছে, কলমের কালী শহীদের রক্তের চেয়েও পবিত্র। পার্থিব জীবনে যা কিছু শক্তি বা বল দিয়ে জয় করা যায় না তা জ্ঞান ও বুদ্ধি দিয়ে খুব সহজেই জয় করা যায়।
আশা করি তোমরা এই ভাবসম্প্রসারণটি বুঝতে পেরেছো। আমাদের সাথেই থাকো।