প্রিয় শিক্ষার্থীরা কেমন আছো আশা করি ভালো আছো, আজকে তোমাদের জন্য আমরা নিয়ে এসেছি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ভাবসম্প্রসারণ “পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি ”। চলো এই ভাবসম্প্রসারণটি পড়ে নেয়।
পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি ভাবসম্প্রসারণ
মূলভাব : শ্রম কল্যাণ বয়ে আনে। শ্রম ব্যতীত কোনাে জাতি উন্নতি লাভ করতে পারে না।
সম্প্রসারিত ভাব : সৃষ্টিকর্তা মানুষকে শক্তি ও বুদ্ধিমত্তা প্রদান করেছেন পরিশ্রম করার জন্য। বিনা পরিশ্রমে কোনাে কিছু অর্জন করা যায় না। কথায় বলে, ‘পরিশ্রমে ধন আনে, পুণ্যে আনে সুখ। পরিশ্রম দ্বারা মানুষ সৌভাগ্যের স্বর্ণ শিখরে আরােহণ করতে পারে। পরিশ্রমী ব্যক্তি আত্মনির্ভরশীল ও স্বাবলম্বী হয়। বিদ্যা, যশ, মান, প্রতিপত্তি ইত্যাদি সব কিছুর মূলে রয়েছে পরিশ্রমী ব্যক্তির নিরলস সাধনা। সব ধন-সম্পদ বা ঐশ্বর্যের মূলে রয়েছে পরিশ্রম। শ্রম দ্বারা ভাগ্যের চাকা এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব যা শ্রমবিমুখ মানুষের কাছে অলৌকিক মনে হবে। পৃথিবীতে যে জাতি যত বেশি পরিশ্রমী, সে জাতি তত বেশি উন্নত। ডা. লুৎফর রহমান বলেন, “যে জাতির মানুষ শ্রমশীল, যারা জ্ঞান সাধনায় আনন্দ অনুভব করে, তারা জগতে শ্রেষ্ঠ স্থান অধিকার করে। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মনীষীগণ তাদের নিরলস সাধনা ও শ্রম দ্বারা খ্যাতির শ্রেষ্ঠ আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। প্রাণিজগতের ক্ষুদ্র কীট মৌমাছিও তার নিরলস শ্রম ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে মধুপূর্ণ মৌচাক তৈরি করতে সমর্থ হয়। যে কৃষক রােদ-বৃষ্টি সহ্য করে কঠোর পরিশ্রম করতে পারে, সে-ই কেবল সােনার ফসল ফলাতে পারে। পক্ষান্তরে, যে ব্যক্তি শ্রমৃবিমুখ হয়ে দুটি হাত গুটিয়ে বসে থাকে সে তার ভাগ্যকেও নিষ্ক্রিয় করে রাখে। ব্যক্তি কিংবা জাতীয় জীবনে সে কোনাে অবদান রাখতে পারে না। তাই জীবনে উৎকর্ষ ঘটাতে পরিশ্রমের বিকল্প নেই।
মন্তব্য : মানুষের যাবতীয় সৌভাগ্যের মূলে রয়েছে তার পরিশ্রম। পরিশ্রমী ব্যক্তি যথার্থই ভাগ্যবান।
সহজ ভাবে
মানুষের সৌভাগ্যের মূলে রয়েছে তার পরিশ্রম। এ পরিশ্রমের ফলেই সাধিত হয়েছে বিশ্বের সামগ্রিক উন্নতি এবং মানুষ নিত্য নতুন আবিষ্কার করছে, বিভিন্ন জিনিসপত্র। পরিশ্রম এবং চেষ্টা দ্বারা যে কোন কর্মেরই সুফল পাওয়া যায়। পরিশ্রম না করলে কোন জাতি তথা কোন দেশ উন্নতির দিকে এগুতে পারেনা। বর্তমানে তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ হচ্ছে চীন এবং জাপান। চীনা এবং জাপানীরা তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের দ্বারা বর্তমান বিশ্বে শিল্প এবং অর্থনীতির দিক দিয়ে অনেক এগিয়ে আছে। আমাদের জীবন সংক্ষিপ্ত এবং ক্ষণস্থায়ী। এ সংক্ষিপ্ত জীবনকে মধুময় এবং ছন্দময় করে তোলার জন্য আমাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। সুখী এবং স্বাচ্ছন্দ্য জীবন লাভ করতে হলে মানুষকে পরিশ্রম করতে হবে। তাই জ্ঞানী ব্যক্তিরা বলেন, “পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি।”
বিকল্প ১
ভাব সম্প্রসারণ : যিনি জন্ম দান করেন তিনি প্রসূতি। মা যেমন সন্তানের প্রসূতি, তেমনি পরিশ্রম হলো সৌভাগ্যের প্রসূতি বা উৎস। মানুষকে তার কর্মফল ভোগ করতে হয়। ভালো কাজের ফল ভালো, মন্দ কাজের ফল মন্দ। কোনো কাজই সহজ নয়। আবার কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে কঠিন কাজও সহজ হয়। জীবনে উন্নতি করতে হলে পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই। পরিশ্রম ছাড়া কেউ কখনো তার ভাগ্যকে গড়ে তুলতে পারেনি। জীবনে অর্থ, বিদ্যা, যশ, প্রতিপত্তি লাভ করতে হলে অবশ্যই পরিশ্রম করতে হবে। ছাত্রজীবনে কঠোর পরিশ্রম করে শিক্ষালাভ না করলে ভবিষ্যৎ জীবনে সাফল্য লাভ সম্ভব নয়। পরিশ্রম ছাড়া জাতীয় উন্নতিও লাভ করা যায় না। পৃথিবীতে এমন একটি জিনিসও নেই যা শ্রমলব্ধ নয়। আমাদের সমাজ ও সভ্যতা বর্তমান পর্যায়ে আসার মূলে রয়েছে পরিশ্রম। যুগ যুগ ধরে তিল তিল পরিশ্রমের মাধ্যমে সভ্যতার উৎকর্ষ সাধিত হয়েছে। মানব কল্যাণে আবিষ্কারকগণ পরিশ্রম করে আবিষ্কার করেছেন বিভিন্ন সূত্র। পরিশ্রম না করে অলস বসে থাকলে কখনো ভালো ফল এসে ধরা দেয় না। ভালো ফল ধরা দেয় তখনই যখন কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে ফলাফলকে নিজের করে নিতে হয়।
আশা করি তোমরা এই ভাবসম্প্রসারণটি বুঝতে পেরেছো। আমাদের সাথেই থাকো।